থানায় বাদীকে যৌন হয়রানি, এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:২৯ পিএম, ১ জুন,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১১:১১ পিএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এক গৃহবধূ। সেই জিডি তদন্তের নামে ওই গৃহবধূকে থানায় ডেকে যৌন হয়রানির অভিযোগে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
মামলায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধেও অসহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানায় এই ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে গত সোমবার বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন যৌন হয়রানির শিকার ওই গৃহবধূ।
তবে এক সপ্তাহ পর গতকাল সোমবার (৩১ মে) বিষয়টি জানাজানি হয়।
মামলার বাদী জানান, পুলিশের চাপের মুখে এতদিন কাউকে বিষয়টি জানাতে পারেননি। বাদীর আইনজীবী আসাদুজ্জামান হাওলাদার জানান, মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার এজাহার উল্লেখ করা হয়েছে, নগরীর ধান গবেষণা রোড এলাকার বাসিন্দা ওই গৃহবধূ গত বছরের গত ২৭ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে একটি জিডি করেন। তা তদন্তের দায়িত্ব পান কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আসাদুল ইসলাম। তিনি জিডির বিষয়টি তদন্তের জন্য বাদীকে থানায় ডেকে নেন।
গত ১৬ অক্টোবর বাদী থানায় গেলে এসআই আসাদুল নানা অজুহাতে তার রুমে বাদীকে বসিয়ে রাখেন। এরপর দস্তখত (স্বাক্ষর) গ্রহণের অযুহাতে এসআই আসাদুল বাদীর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন এবং ঘাড়ে চুমু দেন। এর প্রতিবাদ জানালে মামলার আসামি বাদীকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরেন এবং বিবাহ করার আশ্বাস দেন। এ সময় বাদীর স্বামী এসে এসআই আসাদুল ওই নারীকে ছেড়ে দেন।
এ ঘটনার পরপরই বাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানালে তিনি বিচার করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। ওসি তখন জানান, অভিযোগের বিষয়ে একজন নারী এএসআই তদন্ত করবেন। যৌন হয়রানির শিকার গৃহবধূ ওই এএসআইয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে জানতে পারেন তিনি কিছুই জানেন না।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধু আরও জানান, মূলত অসত্য অযুহাতে কালক্ষেপণ করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। সেই সঙ্গে থানায় লিখিত এজাহার দিতে চাইলে তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। মামলায় থানার সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যালোচনা করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে বলেও বাদী উল্লেখ করেছেন।
মামলার বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই আসাদুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত করতে যাওয়ায় মিথ্যা অভিযোগে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কোতোয়ালি মডেল থানার ইনচার্জ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার বিষয়টি অভ্যন্তরীণভাবে আমরাও খতিয়ে দেখছি।’
এ বিষয়ে বরিশাল জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার হুমায়ূন কবির জানান, এখন পর্যন্ত এমন কোনো মামলার দায়িত্ব পিবিআইতে আসেনি। মামলার দায়িত্ব পেলে যথাযথভাবে তদন্ত করা হবে।