সোমবার থেকে সোনারগাঁওয়ে মাসব্যাপী কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৭ এএম, ১ মার্চ,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৫৪ এএম, ৩ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
লোকজ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে অকৃত্রিমভাবে উপস্থাপন করা এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লুপ্তপ্রায় লোকজ ঐতিহ্যের অনন্য পুনরুদ্ধার ও নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করতে আগামীকাল সোমবার থেকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। এবারের মেলা করোনা পরিস্থিতির জন্য দেড় মাস পিছিয়ে আজ শুরু হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে ১৪ জানুয়ারি শুরু হয়েছে। মেলা উপলক্ষে ইতিমধ্যে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ সকল প্রকার প্রস্তুতি শেষ করেছেন।
আগামীকাল সোমবার বিকেলে মেলার আনুষ্টানিক উদ্বোধনী করবেন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহর সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: বদরুল আরেফিন। বিশেষ অতিথি থাকবেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসত মোস্তইন বিল্লাহ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম, সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সারসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
ফাউন্ডেশন সূূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে কারুশিল্পী মেলায় প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে নওগাঁও ও মা-রার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি, চট্টগ্রামের তালপাখা ও নক্শি পাখা, রংপুরের শত রঞ্জি, সোনারগাঁওয়ের হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারু শিল্প, নক্শিকাঁথা, বেত ও বাঁশের কারুশিল্প, নক্শি হাতপাখা, সিলেট ও মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, কুমিল্লার তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারু পণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্প, সোনারগাঁওয়ের পাটের কারু শিল্প, নাটোরের শোলার মুখোস শিল্প, মুন্সিগঞ্জের পট চিত্র, ঢাকার কাগজের হস্ত শিল্পসহ মোট ৭৫টি স্টল থাকছে। এছাড়াও লোক কারু শিল্প মেলা ও লোকজউৎসবে বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান,লালন সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গাঁয়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তী-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী ইত্যাদি থাকবে।
বাংলাদেশ লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক রবিউল ইসলাম জানান, এবছর করোনা পরিস্থিতির জন্য মেলা যথাসময়ে হতে পারে নি। এ মেলা পিছিয়ে ১ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে। ইতিমধ্যে মেলার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের লোক ও কারুশিল্পের ঐতিহ্য, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় লোকজ ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা, প্রদর্শন এবং পুনরুজ্জীবন এ মেলার মূল উদ্দেশ্য। তিনি আরো জানান, অন্যান্য বছরের মতো এবছরও মেলা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মেলা উপলক্ষে ফাউন্ডেশনের পুরো এলাকায় বর্নাঢ্যভাবে সাজানো হয়েছে।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ জানান, সোমবার বিকেল ৪টায় ফাউন্ডেশন চত্বরে সোনারতরী লোকজ মঞ্চে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধান অতিথি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। মেলা চত্বর প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ১মার্চ সোমবার থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত।