অমর একুশে বইমেলা শুরু আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১২ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৩৪ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
স্বাভাবিক অবস্থায় ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে শুরু হয় অমর একুশে বইমেলা। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার দু সপ্তাহ দেরিতে আজ মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে এ মেলা। এখনও পর্যন্ত যে সিদ্ধান্ত রয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। তবে কোভিড পরিস্থিতি উন্নতি সাপেক্ষে বইমেলার সময় বাড়ানো হতে পারে। এ বিষয়ে ২২ বা ২৩ ফেব্রুয়ারি জানানো হবে। প্রকাশকরা জানান, ১৭ মার্চ পর্যন্ত মেলার আয়োজন করা হোক।
এদিকে প্রতিবছর মেলা বিকেল ৩টায় শুরু হলেও এবার মেলা শুরুর সময় এক ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয়েছে। এ বছর প্রতিদিন মেলা শুরু হবে দুপুর ২টায়, আর শেষ হবে রাত ৯টায়। ছুটির দিন (শুক্রবার ও শনিবার) বেলা ১১টা থেকে মেলা শুরু করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে। মেলার স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলোতে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ।
এখনও পর্যন্ত সিদ্ধান্ত রয়েছে- ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় ভার্চুয়ালি অমর একুশে বই মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারও দেওয়া হবে। এ বছর ১১টি ক্যাটাগরিতে মোট ১৫ জন গুণী সাহিত্যিক এ পুরস্কার পাচ্ছেন।
স্টলে বসতে থাকতে হবে করোনা টিকার সনদ : রবিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা অবস্থা পর্যবেক্ষণে যান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যারা বিক্রেতা বা স্টলে বসবেন তারা করোনা টিকা দিয়েছেন মর্মে সনদ সাথে রাখতে হবে। নইলে জরিমানার ব্যবস্থা করবো।
তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে মাস্ক ছাড়া কেউ ঢুকবো না, তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র রাখা হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে করোনা পরিস্থিতির কারণে জারি করা নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে। শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিতে মোবাইল টিম থাকবে।
বইমেলায় খাবার খেতে লাগবে ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট : সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, করোনা সংক্রমণ কমলে অমর একুশে বইমেলার সময় বাড়তে পারে। অন্যদিকে এবার মেলার অভ্যন্তরে খাবার স্টলে খাবার খেতে হলে ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট লাগবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল মনসুর। গতকাল সোমবার বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, কোভিডের কারণে এবার বইমেলার সময়সীমা অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। এখন যেভাবে সংক্রমণের হার কমছে, সেভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে হয়ত আমরা মেলার সময়সীমা খানিকটা বাড়াতে পারব। মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশকদের প্রণোদনা দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে কে এম খালিদ বলেন, এবারের মেলা প্রকাশকদের মেলা। তারা একটি মেলার জন্য অনেক দিন অপেক্ষা করেন। আমরা কোনোভাবেই চাইব না মেলার প্রাণশক্তি যেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত বছর আমরা তাদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নিয়েছি। আর এবার মেলার সময়সীমা যদি বাড়ানো হয়, তাহলে আমরা মনে করি সেটি তাদের জন্য প্রণোদনা হবে।
এখনও অধিকাংশ স্টলের কাজ শেষ হয়নি, আগামীকাল মেলার আয়োজন করতে বাংলা একাডেমি কতটুকু প্রস্তুত জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আশা করছি, মেলার স্টল-প্যাভিলিয়নের কাজ আগামী ২৪ ঘণ্টাকে ৪৮ ঘণ্টা বানিয়ে শেষ করবেন তারা। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল মনসুর বলেন, এবার মেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাডেমির কর্মকর্তা ও প্রকাশক, স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বিক্রয়কর্মীদের ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট থাকতে হবে। কারও না থাকলে মেলায় মোবাইল কোর্টের কাছে ধরা পড়লে জরিমানা এবং শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। আর মেলার অভ্যন্তরে খাবার স্টলে কেউ খাবার খেতে চাইলে ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট লাগবে। একইসঙ্গে খাবার স্টলে সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে।
সচিব আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছায় এবার আমরা মেলা আয়োজন করতে পারছি। মেলায় সরকারের স্বাস্থ্য প্রটোকল আমরা মেনে চলব। মেলায় সার্বক্ষণিক আমাদের একটি মোবাইল কোর্ট থাকবে, যেন গেটে কেউ মাস্ক পরে ঢুকলেও মেলার ভেতরে কেউ মাস্ক খুলতে না পরে। আমরা প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতিকে বলেছি, প্রতিটি দোকানে ‘নো মাস্ক নো সেল’ এর ব্যানার লাগাতে।
তিনি আরও বলেন, গতকালই আমরা খাবারের স্টলগুলোকে জানিয়ে দিয়েছি তাদের আঙিনায় যেন কেউ টিকা সনদ ছাড়া ঘুরতে না পারে। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে। বাংলা একাডেমি মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, অমর একুশে বইমেলার ৫০ বছর হয়েছে। আমাদের দেশের স্বাধীনতা ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। অনেক ভুল-ভ্রান্তি সত্ত্বেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বইমেলা পূর্ণতা পেতে এক সপ্তাহে সময় লাগে। আশা করছি, এ বার সেটা হবে না।
মেলার সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক জালাল আহমেদ জানান, এবার ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছে ৩৫টি প্যাভিলিয়ন। মেলার মূল আয়তন ৭ লাখ বর্গফুট।