যেভাবে হবে মাধ্যমিকের মূল্যায়ন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:২২ এএম, ২২ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২০ | আপডেট: ১০:৫৫ পিএম, ২০ অক্টোবর,রবিবার,২০২৪
মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি চলমান থাকায় চলতি বছর মাধ্যমিকে বার্ষিক পরীক্ষা হচ্ছে না। তার বদলে ৩০ দিনের জন্য প্রণিত সিলেবাসের আওতায় অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) মাধ্যমিক পর্যায়ের জন্য ৩০ কর্মদিবসে শেষ করার মতো একটি সিলেবাস প্রণয়ন করেছে। সংশ্লিষ্ট শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক শিখনফলের উপর গুরুত্ব বিবেচনা করে সিলেবাসটি এমনভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে- যেন তা পরবর্তী ক্লাসের শিখনফল অর্জনে সহায়তা করে।
আজ বুধবার দুপুর ১২টায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এই পদ্ধতি পরবর্তী ক্লাসে শিক্ষার্থীর উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেও জানান তিনি।
যেভাবে হবে মূল্যায়ন
এনসিটিবি সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষজ্ঞগণের সহায়তায় উল্লেখিত সিলেবাস থেকে অ্যাসাইনমেন্টের জন্য বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেছেন। প্রণীত অ্যাসাইনমেন্ট মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সারাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ প্রতি সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট প্রতি সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন। শিক্ষার্থীরা এই অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করে পরবর্তী সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জমা দেবে এবং পরবর্তী সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করবে। এ ক্ষেত্রে অনলাইনের সাহায্যে করা যেতে পারে। সামাজিক দূরত্ব বজায়ে রেখে প্রতিষ্ঠান প্রধান বা অভিভাবকরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অ্যাসাইনমেন্ট প্রেরণ বা গ্রহণ করবেন। শিক্ষকরা তার উপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবেন। মূল্যায়নে যে সব চিত্র পাওয়া যাবে, পরবর্তী বছরে সে বিষয়ে জোর দেবে কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একটা অ্যাসাইনমেন্ট ডিজাইন করা হয়েছে। খুব দ্রুত এ সিলেবাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠানো হবে। এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর জন্য মূল্যায়ন সংক্রান্ত অন্য কোনো কার্যক্রম, যেমন- অন্য কোনো পরীক্ষা গ্রহণ বা বাড়ির কাজ গ্রহণ করতে পারবে না। পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া না পর্যন্ত সারা দেশে এভাবেই শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দূর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে সেগুলো দূর করার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।’
সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তরে দীপু মনি বলেন, ‘কোনো পরীক্ষা নয়, এবারের যে পরিস্থিতি কোনো পরীক্ষা নয়। এবার কোনো বার্ষিক পরীক্ষা হচ্ছে না। এই মূল্যায়নটার মাধ্যমেও যেন কোনো চাপ সৃষ্টি করা না হয়। এই মূল্যায়ন শুধুমাত্র আমাদের বোঝার জন্য শিক্ষার্থীদের কোথায় কোথায় দুর্বলতা আছে, সেগুলো পরের ক্লাসে কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা করব। এই মূল্যায়ন তার পরের ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলছে না।’
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আরও বলেন, আমরা লক্ষ্য রাখছি যাতে শিক্ষার্থীদের শারীরিক মানসিক ক্ষতি না হয়। শিক্ষার্থীরাও তাদের দুর্বলতাগুলো বুঝতে পারে। শিক্ষার্থীদের পরের ক্লাসে যাওয়ার জন্য যতটুকু জানা প্রয়োজন সেটি বিবেচনায় নিয়েই এ সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা স্থানান্তরের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন সম্পর্কে সরকার কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, স্থানান্তরের ঘটনায় নিকটবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সেখানকার প্রধানদের সঙ্গে যোগযোগ করে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।’
এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।