চাকরি না পাওয়ায় ক্ষোভে ফেসবুক লাইভে সনদ ছিঁড়লেন বাদশা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:১০ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৫৮ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন ২০১৪ সালে। তারপর থেকেই নিয়মিত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আসছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল চাকরি পেয়ে ছয় ভাই-বোনের সংসারের হাল ধরবেন। কিন্তু চাকরি আর হয়নি। তাই ক্ষোভে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের সব একাডেমিক সনদ ছিঁড়ে ফেললেন নীলফামারীর যুবক বাদশা মিয়া।
গতকাল সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফেসবুক লাইভে এসে সনদ ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। তার এই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, বাদশা মিয়া ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দরখাতা গ্রামের বাসিন্দা মহুবার রহমানের ছেলে। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বাবা।
বাদশা পাঙ্গা চৌপতি আব্দুল মজিদ দাখিল মাদরাসা থেকে ২০০৭ সালে জিপিএ ৩.৯২ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে দাখিল, ২০০৯ সালে সোনাখুলি মুন্সিপাড়া কামিল মাদরাসা থেকে জিপিএ ৪.০৮ পেয়ে আলিম এবং ২০১৪ সালে নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে অর্থের অভাবে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারেননি তিনি।
দীর্ঘ সময় ধরে চেষ্টা করেও চাকরি না পেয়ে বাদশা ফেসবুক লাইভে বলেন, আসলে আমার ভাগ্যটাই খারাপ। কত মানুষ ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়া করে খাচ্ছে। আর আমি এত সার্টিফিকেট নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও একটা সরকারি বা বেসরকারি চাকরি জোটাতে পারিনি। সনদপত্র অনুযায়ী চাকরির বয়স শেষ, এখন এগুলো রেখে লাভ কী? বয়স থাকতেই তো চাকরি জোটাতে পারিনি।
বাদশা আরও বলেন, আমার বাবা খেয়ে না খেয়ে আমাকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও ছোট ভাই-বোনদের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। বর্তমান সমাজে সবচেয়ে অসহায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত ছেলেরা। এরা না পারে চাকরি জোটাতে, আবার না পারে অর্থের অভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে।
এ বিষয়ে বাদশার বাবা মহুবার রহমান বলেন, চাকরির বয়সসীমা শেষ হওয়ায় বেশ কিছু দিন থেকে হতাশায় ভুগছিল বাদশা। দিন দিন হতাশা বেড়ে যাওয়ায় সে তার একাডেমিক সার্টিফিকেটগুলো কাউকে না জানিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছে।