এক মাস পর খুলল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৩ এএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:২৬ এএম, ২৫ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দ্বিতীয় দফায় এক মাস বন্ধ থাকার পর আজ মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা খুলল।
আজ মঙ্গলবার থেকে সশরীরে শ্রেণিকক্ষে শুরু হয়েছে ক্লাস। তবে ১২ বছরের ঊর্ধ্বে যেসব শিক্ষার্থী করোনা টিকা নিয়েছে, শুধু তারাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারবে। করোনার প্রভাব কাটিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মঙ্গলবার থেকে স্কুল-কলেজ খুললেও প্রাথমিক স্তরের ক্লাস শুরু হবে ২ মার্চ থেকে। তবে প্রাক-প্রাথমিকের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। প্রতিষ্ঠান খোলার পর কীভাবে চলবে, সে বিষয়ে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ ২০টি নির্দেশনা দিয়ে একটি আদেশ জারি করেছেন।
নির্দেশনায় যা বলা হয়েছে-
১. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে শিক্ষার্থীরা কোডিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে, তারা সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে।
২. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশমুখসহ অন্যান্য স্থানে কোভিড-১৯ অতিমারি সম্পর্কিত সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়সমূহ ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা।
৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথে শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়মিত তাপমাত্রা মাপা ও তা পর্যবেক্ষণ করার ব্যবস্থা করা।
৪. পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন/ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ শিখন- শেখানো কার্যক্রম অব্যাহত রাখা।
৫. শিক্ষার্থীদের জন্য বিতরণকৃত অ্যাসাইনমেন্টসমূহের কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত থাকবে।
৬. শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুটিন ইতোপূর্বে প্রেরিত নির্দেশনা মোতাবেক প্রণয়ন করতে হবে।
৭. শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সব প্রবেশ/প্রস্থানমুখ ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা। যদি কেবল একটি প্রবেশ/প্রস্থানমুখ থাকে সেক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশ/প্রস্থানমুখের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা।
৮. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করা।
৯. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া-আসা করবে, সে বিষয়ে তাদের শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী ব্রিফিংয়ের ব্যবস্থা করা।
১০. প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখা।
১১. প্রতিষ্ঠানের সব ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ ও আঙিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করা।
১২. প্রতিষ্ঠানের সব ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখা।
১৩. প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবকসহ অন্য কেউ প্রবেশ/অবস্থান/প্রস্থানের সময় সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করা।
১৪. প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী এবং অন্যদের সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করার বিষয়টি নিশ্চিত করা।
১৫. প্রতিষ্ঠানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা।
১৬. শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা। এক্ষেত্রে পারস্পরিক তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা।
১৭. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা এবং কোথাও পানি জমে না থাকে তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা।
১৮. প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করা।
১৯. প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা।
২০. প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের সঙ্গে সভা করে এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। এদিকে, করোনার কারণে চার মাস পিছিয়ে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষা জুনে ও এইচএসসি পরীক্ষা আগস্টে অনুষ্ঠিত হবে। রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ ছাড়া ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পাঠ্যসূচি অধিকতর পরিমার্জন করে পুনর্বিন্যাস করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। এতে এই বিষয়গুলোতে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেয়ার কথা জানানো হয়। এর আগে ওমিক্রনের প্রভাবে গত ২১ জানুয়ারি স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হয়। এ ছাড়া, প্রথম ধাপে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।