সিনিয়রকে নাম ধরে ডাকায় কুবিতে ছাত্রলীগের মারামারি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২৯ পিএম, ১৫ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৫৩ পিএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
সিনিয়রকে নাম ধরে ডাক দেয়াকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের দু'গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দু'গ্রুপের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম বাঁধন নিজের রুমে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানজিম হোসেন সোহাগের নাম ধরে ডাকেন। ওই রুমের বাসিন্দা সোহাগের বন্ধু ওয়াকিল বিষয়টি শুনলে ১২তম ব্যাচের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাফী, সোহাগ ও ওয়াকিল ২০০৩ নং রুমে বাঁধনকে ডেকে শাসান। একপর্যায়ে বাঁধনকে তারা চড় মারেন।
পরে বাঁধন ১৩ তম ব্যাচের তার বন্ধুদের বিষয়টি জানালে ওই ব্যাচের সবাই একত্রিত হয়ে রাতে সাড়ে ১০টার দিকে ২০০৩ নম্বর রুম থেকে ১৩তম ব্যাচের সাদমানের মাধ্যমে ১২তম ব্যাচের শাফীকে ডেকে নিয়ে যান । এসময় ১৩তম ব্যাচের হানিফ, সাদমান, মিরাজ, রবিনসহ ৮ থেকে ১০ জন শাফীকে এলোপাথাড়ি মারধর করেন। পরে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদেরকে ৩০৩ নম্বর রুমে ডেকে নিয়ে একদফা মারধর করেন। পরে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদের রুমে (৩০১) ডেকে নিয়ে বিচারের নামে আধা ঘণ্টা ধরে ফের তাদেরকে মারধর করেন শাখা ও হল ছাত্রলীগের নেতারা। এতে ১৩তম ব্যাচের বেশ কয়েকজন আহত হন।
এ বিষয়ে ১৩তম ব্যাচের কর্মী হানিফ ভূইয়া বলেন, আমাদের বন্ধুকে মারধরের বিষয়ে জানতে তাদের রুমে যাই। তবে সেখানে আমরা কাউকে আঘাত করিনি। তবে ১২তম ব্যাচের কর্মী শাফি হাসান বলেন, আমি হলের সিনিয়র হিসেবে জুনিয়রদের আচরণের বিষয়ে তাদের বুঝিয়ে বলি। কিন্তু তারা এসে আমাকে বেধড়ক মারধর শুরু করে, আমি এর বিচার চাই।
জানতে চাইলে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাফিউল আলম দীপ্ত বলেন, হলের অভ্যন্তরীণ একটি বিষয়ে ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উচ্চাবাক্য বিনিময় হয়। আমিসহ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি। র্যাগিংকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘র্যাগিং-এর মতো তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।'
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ বলেন, আজকের ঘটনায় জড়িত সকলে হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী। নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি থেকে হাতাহাতি হয়েছে। আমরা সিনিয়রদের সাথে বসে বিষয়টি সমাধান করেছি। পরে সভাপতির সাথে কথা বলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, আবাসিক হলের বিষয়গুলো প্রভোস্ট দেখভাল করেন। হল প্রভোস্টসহ হলের যারা দায়িত্বে রয়েছেন তারা প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়া’র মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। এটি হলের অভ্যন্তরীণ বিষয়, আমরা বসে বিষয়টি সমাধান করে দেব।