ঢাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৯ এএম, ১৪ জুন,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৩৯ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহসিনা আক্তার খানম ওরফে লীনা তাপসী খানের বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ এনেছেন নায়েমের সাবেক মহাপরিচালক ইফফাত আরা নার্গিস। বিষয়টি তদন্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অভিযোগ দিয়েও এর কোনও সুরাহা হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আজ রবিবার দুপুর ১২টায় ঢাবি সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সঙ্গীতের প্রতি প্রবল আগ্রহের কারণে আমি লীনা তাপসী খানের ‘নজরুল-সঙ্গীতে রাগের ব্যবহার’ নামের গ্রন্থটি সংগ্রহ করি। কিন্তু গ্রন্থটি পাঠ করে আমার এর আগে পাঠ করা ৩/৪টি গ্রন্থের সঙ্গে বেশ কিছু অংশের হুবহু মিল খুঁজে পাই, যা পরিষ্কার চৌর্যবৃত্তি। এ বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি লীনা তাপসী খানের পিএইচডি-অভিসন্দর্ভের ওপর ভিত্তি করে রচিত গ্রন্থ ‘নজরুল সঙ্গীতে রাগের ব্যবহার’ সম্পর্কে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ তদন্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর আবেদন করেছিলাম। কিন্তু তাতেও কোনও ফলোদয় হয়নি। ‘নজরুল সঙ্গীতে রাগের ব্যবহার’ গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথের ‘গীতিবিতান’ ও ‘নজরুল-গীতিকা’, ইদ্রিস আলীর লেখা ‘নজরুল সঙ্গীতের সুর’, স্বরলিপিকার জগত ঘটক ও কাজী অনিরুদ্ধের ‘নবরাগ’, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘নজরুল সৃষ্ট রাগ ও বন্দিশ’ এবং কাকলী সেনের ‘ফৈয়াজী আলোকে নজরুলগীতি’ প্রভৃতি গ্রন্থ থেকে তথ্য নির্দেশ ছাড়া বইটির দ্বিতীয় অধ্যায়ে ৪২ লাইন, তৃতীয় অধ্যায়ে ৭ লাইন, চতুর্থ অধ্যায়ে ২৬ লাইন, পঞ্চম অধ্যায়ে ৬ লাইন, ষষ্ঠ অধ্যায়ে এক লাইন, দশম অধ্যায়ে ১২৬ লাইন, একাদশ অধ্যায়ে ১২২ লাইন ত্রয়োদশ অধ্যায়ে ৬৫ লাইন এবং চতুর্দশ অধ্যায়ে ৫৩ লাইন। এসব লাইন হুবহু চুরি হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, ২৮০ পৃষ্ঠার গ্রন্থে ৮০ পৃষ্ঠার স্বরলিপি স্ক্যান করে ঢোকানো হয়েছে মূল পাঠ হিসেবে, যা অনৈতিক। দেখা যাচ্ছে যে, ২৭৭ পৃষ্ঠার বইয়ের ১৬৯ পৃষ্ঠাই লীনা তাপসী খানের রচনা নয়। এগুলো অন্যের গ্রন্থ থেকে হুবহু গৃহীত। অবশিষ্ট পৃষ্ঠাগুলোর মধ্যেও চৌর্যবৃত্তি পাওয়া যেতে পারে। এমতাবস্থায় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে লীনা তাপসী খানের পিএইচডি ডিগ্রি বাতিল, ডিগ্রি প্রদানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি, গ্রন্থটি বাতিল এবং গ্রন্থের জন্য প্রাপ্ত লীনা তাপসী খানের নজরুল পদক প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
লীনা তাপসী খানের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এটি আমার বিরুদ্ধে আনীত মিথ্যা অভিযোগ। আমাদের সঙ্গীত বিভাগের সাবেক তবলা বাদক শোভন, আমার সুপারিশে যার চাকরি হয়; পরবর্তীতে নতুন চেয়ারম্যান আসার পর তার চাকরি চলে যায়। আর সেই প্রতিশোধ নিতে এই বহিরাগত নারীকে ডেকে এনে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে। আর এই নারী একজন পুরাতন শিল্পী, যিনি লাইম লাইটে আসার জন্য এই মিথ্যা অভিযোগ এনেছে আমার বিরুদ্ধে।