দুই ভাইয়ের মান-অভিমানের অবসান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০৯ পিএম, ২৪ মে,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ১০:২০ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
অভিমানী ছোট ভাই বসুরহাটের পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সঙ্গে দূরত্ব ঘুচালেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সঙ্গে অভিমান করে দূরে সরে ছিলেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।
দল ছাড়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন মির্জা কাদের। প্রকাশ্যে বড় ভাইয়ের সমালোচনায় মেতে ছিলেন। কাদের মির্জার অভিযোগগুলো মন দিয়ে শুনেছেন ওবায়দুল কাদের। সেগুলো সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
গত শনিবার বিকালে ওবায়দুল কাদেরের সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবনে উপস্থিত হয়ে বড় ভাইয়ের হাতে ফুল দিয়ে মান-অভিমানের অবসান ঘটান। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী দুই ভাইয়ের মধ্যে কথাবার্তা হয়।
সাক্ষাতে ভাইয়ের সঙ্গে কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন, ‘তুমি আমার ওপর যত অভিমানই করো। আমি কোনোদিন তোমার ওপর মনে কষ্ট নেই নাই। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি এটার একটা অবসান ঘটবে।’
রাজনীতি নিয়ে কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে বসুরহাটের মেয়র বলেন, তিনি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে বলেছেন। আরও বলেছেন, ‘এলাকায় যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসে। যেখানে যেখানে যা বলা দরকার আমি বলে দেব। তোমরা কাজ করো।’
আপনার আগে যে দাবি ও অভিযোগগুলো ছিল, সেগুলো কী পূরণ হয়েছে বা সে বিষয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে কাদের মির্জা বলেন, এটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে আছে বিষয়টা ওনি দেখছেন।’
তিনি আরও একটা কথা গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।’ আপনি ওবায়দুল কাদেরকে কী বলেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কিছু ছেলে জেলে আছে, তাদের জামিনের বিষয় নিয়ে আলাপ করেছি। আর সেখানে প্রশাসন যেন নিরপেক্ষ থাকে সেটা নিশ্চিত করার জন্য বলেছি।
জানা গেছে, ঈদের দিন ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছিল মির্জা কাদেরের। সেদিনই মির্জা কাদেরকে দেখা করতে বলেছিলেন ওবায়দুল কাদের। এর পরিপ্রেক্ষিতেই গত শনিবার বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে ওবায়দুল কাদেরের সরকারি বাসভবনে যান আবদুল কাদের মির্জা।
তিনি বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরর হাতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এরপর একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন ও শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।
এ সময় শারীরিকভাবে অসুস্থ তাদের আরেক ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনের উন্নত চিকিৎসা নিয়েও কথা হয়। ওবায়দুল কাদের তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।
এরপর স্থানীয় রাজনীতি ও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে আলোচনা করেন দুই ভাই। ওবায়দুল কাদের তার ছোট ভাই মির্জা কাদেরের কাছে সার্বিক ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হন। এতদিন মির্জা কাদের যা লাইভে বলেছিলেন, তার বর্ণনা সংক্ষেপে দেন বড় ভাইকে। সব শুনে ওবায়দুল কাদের ছোট ভাইকে শান্ত হতে বলেন। এমনকি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে না এসে স্থানীয় যে কোনো সমস্যা সরাসরি তাকেই জানাতে বলেন। তিনি তা সমাধানে পদক্ষেপ নেবেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মির্জা কাদেরকে পুরোনো বিষয়গুলোর পুনরাবৃত্তি না করার কথা বলেন। এ বিষয়ে মির্জা কাদের ওবায়দুল কাদেরকে আশ্বস্ত করেন।
সাক্ষাতে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে সংঘটিত অপ্রীতিকর ঘটনাগুলোর জন্য নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী ও তার অনুসারী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদলকে দায়ী করেন।
তিনি বাদলকে আইনের আওতায় আনার কথাও বলেন। জবাবে ওবায়দুল কাদের সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। এদিকে বৈঠক শেষে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা নিজের ফেসবুক পোস্টে দুই ভাইয়ের সাক্ষাতের ছবি পোস্ট করেন।