উচ্চ আদালতে জামিনের পরেও পুলিশ নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে-মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২৯ এএম, ২০ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২০ | আপডেট: ০২:৫৮ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
উচ্চ আদালতে জামিনের পরেও সাদা পোশাকে পুলিশ নেতা-কর্মীদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে এক আলোচনা সভায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে অংশ নিয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৬তম জন্মদিন উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ১৯৬৭ সালের ২০ নভেম্বর বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তারেক রহমান।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটু আগে আমি খবর পেলাম, আমাদের উত্তরার তুরাগ থানার সভাপতি-সম্পাদক তাদেরকে গতকাল হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার পথে সাদা পোশাকে পুলিশেরা তুলে নিয়ে গেছে, এখনো ওদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এটা অহরহ ঘটছে এখন। আমি খুব স্পষ্ট করে সরকারকে বলতে চাই যে, অবিলম্বে এদেরকে ফিরিয়ে দেন তাদের পরিবারের কাছে, অবিলম্বে এদেরকে মুক্তি দিন। অন্যথায় জনগণের যে উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে সেই তরঙ্গ কিন্তু আপনাদেরকে টিকিয়ে রাখতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমাদের গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকে বন্দি, আমাদের তরুণ সম্ভাবনাময় নেতা তিনি নির্যাতিত হয়ে মিথ্যা মামলায় বিদেশে অবস্থান করছেন। আমাদের লাখ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ৩৫ লক্ষের ওপরে, গুম হয়ে গেছেন আমাদের প্রায় ৫শ’র ওপরে নেতা-কর্মী এবং নিহত হয়েছেন সহস্রাধিক এবং গত কয়েকদিন আবারো গুম হয়েছেন ৩/৪ জন। গতকাল বেলা ১টার দিকে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার পর সাদা পোশাকে পুলিশ তুরাগ থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মামুন পারভেজ তন্ময় ও সহ-সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম হাসিবকে তুলে নিয়ে যায়। উত্তরার পশ্চিম থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস মজুমদার মাসুমকে গত রাত সাড়ে ৭টায় উত্তরা ৫ নং সেক্টার থেকে ধরে নিয়ে যায় তার সাদা পোশাকের সদস্যরা, পল্টন থানা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক লিয়ন হককে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে। এদের কাউকে এখনো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, এখন দেশে প্রকৃতপক্ষে কোনো সরকার আছে বলে মনে হয় না। এই সময়ে সুশাসন দূরের কথা এখানে শাসন বলতে কিছু নেই। প্রতিটি পত্র-পত্রিকায় তাদের (ক্ষমতাসীন) দুর্নীতির খবর আসছে। ভয়াবহ দুর্নীতি, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। সেদিকে কোনো খেয়াল নেই, দুই-একটা চুনোপুঁটিদের ধরে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।
তারেক রহমানের জন্মদিনে দলের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সংকটময় পরিস্থিতিতে আমাদের নেতার জন্মদিনে কোনো উৎসব পালন করতে পারছি না। তাঁর এই জন্মদিনে আমরা কেক কাটবো না। আজকে আমরা তাঁর জন্য দোয়া করব। আল্লাহ যেন তাঁকে দীর্ঘজীবন দান করেন এবং তাঁকে সেই শক্তি দেন, যে শক্তি দিয়ে তিনি তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করে বাংলাদেশের জনগণকে মুক্ত করতে পারেন। আমাদের মনে রাখতে হবে তাঁর পিতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের মুক্তির জন্য স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং রাজনৈতিক যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের নেতা (তারেক রহমান) ব্যক্তিগত জীবনে অনেক দুঃখকষ্টে আছেন। তাঁর পিতাকে হারিয়েছেন তিনি খুব ছোট বয়সে, মা অন্তরীণ। তাঁর ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকো চলে গেছেন এই সরকারের নির্যাতনের কারণে। নিজে নির্বাসিত অবস্থায় বাস করছেন। সুতরাং তাঁকে (তারেক রহমান) সাহস দিতে হবে আমাদেরই।
তিনি বলেন, আমাদের এই নেতার ওপরে শুধু বিএনপি নই, সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে রয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুক্ত হবে আরেকবার, তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ ফিরে পাবে তাদের অধিকার, সেই আশা-ভরসা নিয়ে এদেশের মানুষ তাকিয়ে আছে। আমরা সবাই আজকে শপথ নেবো তাঁর জন্মদিনে তাঁর হাতকে শক্তিশালী করে বাংলাদেশের জনগণকে একত্রিত করে, ঐক্যবদ্ধ করে আমরা এই ভয়াবহ যে দানব, যে আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তাকে আমরা পরাজিত করব। তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে তারেক রহমানের নানা কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি দুঃখিত যে, আপনাদের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারিনি। কারণ এখন আমার বাসাতে করোনা ধরা পড়েছে। যার ফলে আমি এখন ১৪ দিনের যে আইসোলেশন সেই আইসালেশনে আমাকে থাকতে হচ্ছে।
চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, মহাসচিবের শ্যালক কাজী একরামুল রশীদ উত্তরার বাসায় করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। বর্তমানে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা এখন সব জায়গাতে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের সিনিয়র লিডার মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আমাদের মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসসহ অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অনেক নেতাকে আমরা এই করোনায় হারিয়েছি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি