চেয়ার ছেড়ে না ওঠায় পিআইওকে মারপীট ছাত্রলীগ সা. সম্পাদকসহ গ্রেপ্তার-২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫০ পিএম, ১৪ মে,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:২৮ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কুড়িগ্রামের চর রাজীবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নে ভিজিএফ’র অর্থ বিতরণকালিন সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সৌভ্রাত দাসকে মারপীটের ঘটনায় সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা ও ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার দুপুরে এ ঘটনার পর রাতে মামলা হলে পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ মে) ভোররাতে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়, বুধবার সকালে চর রাজীবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ভিজিএফ’র টাকা বিতরণ করছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সৌভ্রাত দাস। দুপুরের দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের আসেন।
এসময় পিআইও’র সাথে কথা বলাকালিন সৌভ্রাত দাস চেয়ারে বসে দাঁড়িয়ে থাকা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতির সাথে কথা বলছিলেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা পিআইও’র শার্টের কলার ধরে কিলঘুষি মারেন। এসময় তার অনুসারিরাও তার উপর চড়াও হয়। পরে কয়েকজন সহকর্মী ও গ্রাম পুলিশ তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা সৌভ্রাত দাস বলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই কমান্ডারের নেতৃত্বে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা গতকাল দুপুরে তার ওপর হামলা চালিয়েছে। পরে কয়েকজন সহকর্মী ও গ্রাম পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। গত রাতেই আমি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। তিনি আরও বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের ওপর পুরো দায়িত্ব না দিয়ে আমি নিজে উপস্থিত থেকে নিয়ম-নীতি অনুসারে শৃঙ্খলার সঙ্গে সুবিধাভোগীদের মধ্যে টাকা বিতরণ করায় আমার ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে।
এই ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো জানান, পিআইও আমার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি চেয়ারে বসে ছিলেন। আর দুপুর একটার মধ্যে টাকা বিতরণ করে বাড়ী ফেরার জন্য তাড়াহুড়ো করছিলেন। এতে স্থানীয় জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ধাক্কা দিয়েছে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা তার উপর হামলা চালায়নি। উল্টো জনরোষ থেকে পিআইওকে উদ্ধার করার দাবী করেন তিনি। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে চর রাজীবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ মেহেদী জানান, সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা এবং ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে এই ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে।
চর রাজীবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নবিরুল ইসলাম জানান, সরকারি দায়িত্ব পালনকালিন সময়ে হামলার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং পুলিশ হামলায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনবে।
চর রাজীবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নবিউল হাসান দুই ছাত্রলীগ নেতা আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সরকারি কর্মকর্তার উপর হামলার ঘটনায় রাতেই একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জুয়েল রানা ও আব্দুর রহমান বিশ্বাস নামে দুজনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।