সরকারের এত বড় দায়ভার নেওয়া উচিত হয়নি : খালেদা জিয়ার আইনজীবী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫৫ এএম, ১০ মে,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:০৮ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের এ মতামত বেআইনি। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে কোনো অঘটন ঘটে গেলে তার দায় সরকারের।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, আইন মন্ত্রণালয় থেকে যে মতামত এসেছে, তাতে তাঁকে বিদেশে পাঠানোর অবকাশ নেই।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এটি সম্পূর্ণ বেআইনি। এ আইনে এমন কোনো বিধান নেই যে কোনো দন্ডপ্রাপ্ত আসামি বিদেশে যেতে পারবে না। এ আইন করাই হয়েছে দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের জন্য।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, চিকিৎসা শেষে ফিরে আসতে হবে-সরকার এই শর্ত দিতে পারত। খালেদা জিয়া তিন বারের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত জটিল। সরকার মানবিকভাবে দেখতে পারত।
এই আইনজীবী বলেন, তাঁর (খালেদা জিয়া) চিকিৎসার ব্যাপারে সরকারের নিজেরই উদ্যোগ নেওয়া উচিত। অনুমতি না দিয়ে সরকারের এত বড় দায়ভার নেওয়া উচিত হয়নি। যদি কোনো অঘটন ঘটে যায় তখন সম্পূর্ণ দায়ভার সরকারের ঘাড়ে পড়বে। আইনকে তো মানবিকভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চিকিৎসা শুরু হয়। করোনায় আক্রান্তের ১৪ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর দ্বিতীয়বার খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট করা হয়। কিন্তু আবারও ফলাফল পজিটিভ আসে। এরপর ২৭ এপ্রিল রাতে তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
শ্বাসকষ্টজনিত কারণে গত সোমবার খালেদা জিয়াকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। এখনো তিনি সেখানেই আছেন। এর মধ্যেই পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়। এটি আইন মন্ত্রণালয় হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যায়।
এর আগে গতকাল দুপুরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে ম্যাডামের (খালেদা জিয়ার) করোনা নেগেটিভ এসেছে। তাঁর যে শারীরিক সমস্যাগুলো ছিল সেগুলো ক্রমান্বয়ে উন্নতি হচ্ছে। আজও একটু আগে চিকিৎসকদের সঙ্গে আমার কথা হয়। তাঁরা জানিয়েছেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে।’
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনা এমন একটি রোগ, যেটি একজন বয়স্ক মানুষের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের কারণ। যাদের ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, উচ্চরক্তচাপ আছে তাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে ওঠে। খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আজ এতদিন পরও আতঙ্কের বাইরে নয়। সেজন্য চিকিৎসকেরা উদ্বেগের সঙ্গে তাঁর চিকিৎসা করছেন।’