রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতেই সরকার লকডাউন দিয়েছে : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪১ এএম, ৫ মে,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:১০ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতেই সরকার লকডাউন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন। জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়।
বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা সবাই শুনেছেন জেনেছেন বেগম খালেদা জিয়ার শ্বাস কষ্ট হওয়ায় সিসিইউতে নেয়া হয়েছিলো এবং তিনি এখনো সিসিইউতে আছেন, অক্সিজেন তাঁকে দেয়া হচ্ছে। এখন উনি স্থিতিশীল আছেন। তাঁর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তাররা অত্যন্ত আশাবাদী তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। আমরা দোয়া চাইছি মহান করুনণাময় আল্লাহ তায়ালার কাছে, সমগ্র জাতি আজকে প্রার্থনা করছেন যে, এদেশের স্বাধীনতার শেষ আশ্রয়স্থল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেন অতিদ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে পরিবহন শ্রমিকরা আন্দোলনে গেছে, যেতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু তাদের জন্য কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এই সরকার লকডাউন দিয়েছে কোনো ব্যবস্থা না করে এই খেটে খাওয়া মানুষের জন্য, দিন আনে দিন খায় মানুষের জন্য কিংবা শ্রমিকদের জন্য কোনো ব্যবস্থা না করে তারা এখানে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করছে লকডাউনের নামে ক্র্যাকডাউন করে। তারা (সরকার) আজকে বিভিন্ন সংগঠন, বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠন, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের ওপর আক্রমণ করে তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করেছে, যারা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদেরকে গ্রেফতার করছে। আজকে সমস্ত জাতি জিম্মি হয়ে গেছে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে শ্রমিকশ্রেণি ও তরুণ সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান মির্জা ফখরুল। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে আমি বিশ্বাস করি যেটা সবচেয়ে বেশি কার্যকর হবে সেটা হচ্ছে তরুণ-যুবক এবং শ্রমিক শ্রেণির মাধ্যমে। তাদের একতাবদ্ধ হতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গতকাল মাওয়া ঘাট থেকে স্পিডবোটে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, ২৭ জন নিহত হয়েছেন। সরকারের যে কোনো ব্যবস্থাপনা নেই এই দুর্ঘটনা তার একটা কারণ। স্পিডবোট চালু করেছে ঠিক আছে কিন্তু স্পিডবোটের লোকসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। আজকে সরকার লকডাউন দিয়েছে, কোথাও কোনো লকডাউন নেই। গণপরিবহন চালু করলো কিন্তু আন্তঃজেলা পরিবহন হবে না, শুধুমাত্র জেলার মধ্যে থাকতে হবে। এগুলো থেকে বোঝা যায়, কতটা দায়িত্বহীন, কতটা অযোগ্য এবং রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে তারা (সরকার) শুধুমাত্র নিজেদের দুর্নীতির জন্য। আজকে পাহাড় গড়ে তুলেছে আওয়ামী লীগের লোকেরা, পাহাড় গড়ে তুলেছে আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট আমলারা। শ্রমিকদের জন্য সরকারের প্রণোদনা নেই বলে জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, করোনার মধ্যে আজকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন আমাদের শ্রমিক ভাই-বোনেরা। করোনার যে প্রণোদনা সরকার ঘোষণা করেছে সেই প্রণোদনার মধ্যে কিন্তু শ্রমিকদের জন্য কোনো বরাদ্দ সেইভাবে রাখা হয়নি, সুনির্দিষ্টভাবে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। যা কিছু প্রণোদনা দেয়া হয়েছে মালিকশ্রেণিকে দেয়া হয়েছে এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং আওয়ামী লীগের যারা দোসর তারা নিজেরা নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমরা বার বার বলেছি, তুলে ধরেছি যে, করোনাকালে যাদের বেশি প্রয়োজন যারা দিন আনে দিন খায়, যারা অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরে কাজ করে, যারা ছোট-ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ করে তাদেরকে সবেচেয়ে আগে সহযোগিতা করতে হবে। আমরা বলেছিলাম কমপক্ষে তিন মাসের এককালীন ১৫ হাজার টাকা অনুদান দিতে হবে। কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির সহ-শ্রম সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ উজ জামান, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম, কেন্দ্রীয় নেতা সালাহউদ্দিন সরকার, জাহাঙ্গীর আলম, কোহিনুর মাহমুদ, কাজী আমীর খসরু, খন্দকার জুলফিকার মতিন, সুমন ভুঁইয়া, মাহবুবুল আলম বাদল প্রমুখ।