সিনহা হত্যার মূল আসামী কারাগারে আছে কিনা প্রশ্ন গয়েশ্বরের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৩৯ এএম, ১২ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২০ | আপডেট: ০২:৪৭ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যাকান্ডে গ্রেফতার হওয়া মূল আসামি কারাগারে আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
আজ বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এই প্রশ্ন তোলেন। জাতীয়ে প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, মেজর সিনহা (অব.) মারা গেছেন, সারা দেশ উত্তাল হলো। ঘটনাস্থলে কে গেলেন? সেনা প্রধান গেলেন, কে গেলেন? আইজিপি গেলেন। মেজর সিনহা হত্যা হলো, গ্রেফতার হলো, সব কিছু হলো- মূল আসামি কি এখন কারাগারে আছে? একটু খোঁজ-খবর নেন- কারাগারে আছে কিনা। হয়ত পরবর্তী তারিখে বোঝা যাবে আদালতে হাজির করতে পারে কিনা কারা কর্তৃপক্ষ। তাহলে আমরা কোথায় আছি? একি দেশের স্বাধীনতা।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশে বিশাল সেনাবাহিনী আছে, বিশাল বর্ডার গার্ড আছে। আজকে আমাদের সীমান্তে প্রতিদিন আমরা লাশ রিসিভ করি, প্রতিদিন গুলির আওয়াজ হয় একদিক থেকে, আমাদের দিক থেকে গুলি করা হয় না, আমাদের সিদ্ধান্ত আমরা গুলি করবো না, আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী এখন গুলি ছোড়ে না। তাহলে বিদেশ থেকে এতো অস্ত্রশস্ত্র কেনে কেন? সীমান্তে আমাদের নাগরিকদের মারতাছে, বর্ডার কিলিং হচ্ছে, প্রতিবাদ নাই। এখন আমাদের যে সীমানা আছে তিন দিক দিয়া এখানে তো গার্ড রাখার দরকার নাই, কয়েকজন চৌকিদার হারিকেন নিয়া দাঁড়ায় থাকলে চলে। যেহেতু প্রতিবাদ করার কিছু নাই, দেশে যা কিছু করতে পারে, ভেতরে ঢুকে যাকে তাকে ধরে নিতে পারে, মানুষকে যখন-তখন কুকুরের মতো গুলি করতে পারে তাহলে আজকে আধুনিক সমরাস্ত্র দিয়ে আমরা কী করছি? কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি? আমরা তো যুদ্ধ করছি না, পণ করছি যুদ্ধ করবো না।
বাংলাদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পোস্টিং ‘ভিন দেশের’ কথার বাইরে হয় না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বাংলাদেশের যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ পোস্টিং সেটা সচিবালয়ই হোক বা কোনো ব্যাংকে হোক যেখানেই হোক না কেন, সেই পোস্টিং ভিন দেশের কথার বাইরে হয় না।
৩ নভেম্বর চার নেতার হত্যাকান্ডের প্রসঙ্গে টেনে গয়েশ্বর বলেন, ৩ নভেম্বর জেলখানার হত্যাকান্ড। তারিখ বলে, তখন তো জিয়াউর রহমান বন্দি, ২ তারিখ ভোর বেলা থেকেই। তখন খালেদ মোশাররফ ক্ষমতায়। তাহলে খালেদ মোশাররফ পরিকল্পনা বা খন্দকার মুশতাকের সাথে আলাপ করে জেলখানা হত্যাকান্ড ঘটায়নি এই কথা বুঝতে কি কষ্ট হয়? কারণ তার (খালেদ মোশাররফ) ভয় ছিলো? তার পাওয়ারের ভয় ছিলো রাজনৈতিক নেতৃত্ব। শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর এই চার নেতাকে হত্যা করলে হয়ত এই তরফ থেকে ক্ষমতার অংশীদারিত্ব করার সুযোগ থাকবে না। খালেদ মোশাররফের মাথায় তো ছিলো না যে, শেখ হাসিনা দেশে আসবেন।
তিনি বলেন, সেই কারণেই আজকে কন্যা হিসেবে পিতার হত্যার বিচার, প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা থাকতেই পারে। কিন্তু আমি তা দেখছি না। আমি দেখছি শেখ হাসিনা তার পিতার হত্যার সাথে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ জড়িত পরিকল্পনাকারীদের একের পর এক ঘুষ দিচ্ছেন যাতে তার দশা এরকম না হয়। তাদেরকে সন্তুষ্ট রাখছেন যাতে ঘরের থেকে আবার ক্যুটা না হয়। মালেক উকিল সাহেব কাউন্সিলে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী যিনি ওই ঘটনার সময় ছিলেন স্পিকার এবং খন্দকার মুশতাকের দূত হিসেবে তিনি বৃটেন সফর করেন। তিনি এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে বললেন, নাউ উই আর ফ্রি ফরম দি রোল অব ফল। পরবর্তী কাউন্সিলে মালেক উকিল, আবদুস সামাদ আজাদ ও ড. কামাল হোসেন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। এটা নিরসনের জন্য আবদুর রাজ্জাক দিল্লিতে গিয়ে শেখ হাসিনাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে দেশে আনলেন এবং জিয়াউর রহমান স্বীকার করবেন না, শেখ শহীদকে লন্ডন পাঠিয়ে শেখ হাসিনার সাথে নেগোসিয়েশন করেন তাকে দেশে আনার জন্য। জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে টাচ করেননি।
৭ নভেম্বরের সিপাহী-জনতার বিপ্লবের ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরে সাবেক জাসদ নেতা গয়েশ্বর বলেন, কর্ণেল তাহের বড় ভাইয়ের এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় বসে অপেক মারতে ছিলেন জাসদ নেতাদের নিয়ে। সেদিন বিপ্লবটা যদি জনগণের পক্ষে করতেন কর্ণেল তাহের, তাহলে আজকে ইতিহাসের পাতায় কর্ণেল তাহের কিন্তু মহানায়ক হতেন। কিন্তু বিপ্লবের আড়ালে তার যে রাজনৈতিক ইচ্ছাটা ছিলো যে ইচ্ছাটা এই ইনু বা যারা ঢুকিয়েছে। তখন মেজর জলিল, আসম আবদুর রব জেলাখানায়। এই ইচ্ছাটা ঢুকানোর পর যখন ক্যান্টনমেন্ট থেকে জীপ ফেরত আসলো-কী জীপ ফেরত আসলো- জিয়াউর রহমান আসে নাই। কর্ণেল তাহেরকে বললো না। ইনুর দিকে তাকায়ে তিনি বললেন গেম ইজ ওভার। গেমটা কী? এই গেমটাই জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে অনুভব করতে পেরেছিলেন। না আসার কারণে ওরা আবার যখন গেলো তখন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বললেন, আমি বেতার কেন্দ্রে যাবো বিষয়: