লালপুরে ১০ টাকা কেজির চাল নিতে আসা ক্রেতাকে পেটালেন আওয়ামীলীগ নেতা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৮ পিএম, ২৩ এপ্রিল,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:১৯ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
নাটোরের লালপুরে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজির চাউল বিক্রির ডিলার আসম মাহমুদুল হক মুকুল এর বিরুদ্ধে লিখন আলী নামের চাউল নিতে আসা এক ক্রেতাকে মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভুগী লিখন আলী স্বাক্ষরিত এ সম্পর্কিত একটি অভিযোগপত্র
গত বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর ই মেইলে পাঠানো হয়েছে এবং এর অনুলিপি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর সহ সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ওই ডিলারের বিরুদ্ধে এক মাসের চাউল দিয়ে দুই মাসের স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে মর্মে একাধিক কার্ডধারী অভিযোগ করেছেন। তবে চাউলের ডিলার ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহমুদুল হক মুকুল ওই অভিযোগকে মিথ্যা,বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।
লিখন আলী জানান, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে ১১৫৮ নং কার্ড নিয়ে ১০ টাকা কেজির চাউল নিতে ইউনিয়নের বিদিরপুর এলাকায় লালপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও ১০ টাকা কেজি চাউলের ডিলার আসম মাহমুদুল হক মুকুলের বাড়িতে যান। এসময় ওই কার্ডে মার্চ ও এপ্রিল মাসের স্বাক্ষর নেন ডিলার মাহমুদুল হক মুকুল। কিন্তু মার্চ মাসের বরাদ্দ না দিয়ে শুধু চলতি এপ্রিল মাসের বরাদ্দের চাউল দেয়া হয় তাকে। মার্চ মাসের চাউল না দিয়ে স্বাক্ষর নেয়ার কারন জানতে চাইলে ডিলার মাহমুদুল হক মুকুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং আশালীন ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে লিখনের ওপর চড়াও হয়ে চর থাপ্পর ও কিল ঘুষি মেরে তাড়িয়ে দেন। পরে লিখন বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সহ তাদের সজনদের অবহিত করেন এবং এবিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ই-মেইলের মাধ্যমে লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ পত্র প্রেরন করেন তিনি।
জয়রামপুর গ্রামের ১১৬২ নং কার্ডধারী মিনু বেগম ও আট্টিকা গ্রামের ১২২৪ নং কার্ডধারী হাবিবুর রহমান সহ একাধিক সুবিধাভোগীরা জানান, তাদেরকেও মার্চ মাসের চাউল দেওয়া হয়নি,অথচ বিতরণ ঘরে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাসের স্বাক্ষর করে নিয়েছেন আওয়ামীলীগের ওই নেতা ।
দুড়দুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ডিলার মাহমুদুল হক মুকুল দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে সাধারন মানুষের সাথে প্রায়ই দুর্ব্যবহার করে থাকেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও চাউলের ডিলার আসম মাহমুদুল হক মুকুল এবিষয়ে জানান, তাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার হীন উদ্দেশ্যে চরিতার্থ করতে পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষরা এমন মিথ্যা কাহিনী প্রচার করছে। প্রকৃত সত্য হলো লিখন আলী তার বাবা মরহুম ইউপি সদস্য লিয়াকত আলীর রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে কার্ড পেয়েছেন। তার ডিলারশিপের অনুকলে এমন ৯ জন রয়েছেন। খাদ্য অফিস থেকে তাদের তালিকা দেয়ার পর চলতি মাসের চাউল বিতরন করা হয়। উপজেলা খাদ্য বিভাগের নির্দেশ ও পরামর্শ অনুযায়ী ওই ৯ জনের জন্য বরাদ্দকৃত চাউল মজুদ রাখা হয়েছে। তাদের কারো কাছে থেকে দুই মাসের কোন স্বাক্ষর নেয়া হয়নি বা কোন ধরনের মারপিটের ঘটনা ঘটেনি। তিনি স্থানীয় এমপি শহিদুল ইসলাম বকুলের একজন সমর্থক হওয়ায় তাকে হেনস্থা করতেই প্রতিপক্ষদের নির্দেশেই এমন মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।