সোনারগাঁওয়ে আ’লীগ-জাপা বিরোধে বেসামাল এমপি খোকা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১০ এএম, ২৩ এপ্রিল,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৪১ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়েল রিসোর্টে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুলকান্ডের ঘটনায় গ্রেফতার হচ্ছেন জাপা নেতাকর্মীরা। একে একে বেশ কয়েকজন জাপা নেতাকর্মী গ্রেফতার হলেও তাদের রক্ষা করতে পারছেন না স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। ফলে ক্রমশই বেসামাল হয়ে পড়েছে সোনারগাঁওয়ে এমপি খোকার রাজনৈতিক অঙ্গন।
এ ঘটনায় সোনারগাঁওয়ের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। ক্রমশই উত্তেজনার তপ্ত পারদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাড়ছে এ দু’দলের মধ্যে অবিশ্বাস। ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে জাপা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ- এমনটাই জানিয়েছে সোনারগাঁওয়ের একাধিক দলীয় সূত্র।
এদিকে গত দুটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত নেতারা মামুনুল ইস্যুতে জাতীয় পার্টির এমপি খোকার রাজনৈতিক বলয় ভেঙে দিতে তৎপর হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন জাপা নেতাকর্মীকে মামুনুলকান্ডে আসামি করে রাজনৈতিক কূট চালের প্রথম অধ্যায় সম্পন্ন করেছেন। গ্রেফতার করাতেও তারা সক্ষম হয়েছেন। বাড়িঘর ছাড়া করতে পেরেছেন জাতীয় পার্টির অনেক নেতাকর্মীকে।
ওদিকে জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা নিজ দলের নেতাকর্মীকে রক্ষায় চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। বেশ কয়েকজন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীর অভিযোগ ঘটনার সময় এমপি খোকার সঙ্গে তারা একটি অনুষ্ঠানে ছিলেন। বিকাল থেকে তারা কয়েকটি অনুষ্ঠানে ছিলেন। অনুষ্ঠান চলাকালে রাত ৮টার দিকে টেলিফোনের মাধ্যমে তারা সংঘর্ষের খবর পান। তখনও এমপি খোকার সঙ্গেই অনুষ্ঠানে ছিলেন তারা। সেক্ষেত্রে তাদের এ মামলাগুলোতে আসামি করা হলো সেখানে এমপি খোকার কি কোনো দায়িত্ব ছিল না? যেখানে তিনি নিজেই একজন সাক্ষী ঘটনার সময় তারা কোথায় ছিলেন? এসকল নেতাকর্মী বলছেন, কোন দুর্বলতার কারণে এমপি খোকা তাদের আশ্রয় দিতে পারেননি। ইতোমধ্যে এমপি খোকার প্রতি স্থানীয় জাতীয় পার্টির ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে।
জাপার একাধিক নেতাকর্মী বলছেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে লড়াই করেই রাজনীতি করে এসেছি। এমপি খোকার ব্যর্থতার কারণে আমরা মুখে কুলুপ এঁটে থাকবো না। প্রয়োজনে মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান গ্রহণ করবো। সরকারের একটি অংশ হয়েও আমরা হেফাজতের মামলা খাব এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের কূটচাল ভাঙ্গতে তারাও প্রস্তুত হচ্ছেন। তবে তাদের নেতা এমপি খোকার অনুরোধে এখনও তারা ধৈর্য ধরে রয়েছেন। এ ধৈর্য তারা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারবেন না। প্রয়োজনে তারাও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের শায়েস্তা করতে মাঠে নামতে প্রস্তুত রয়েছেন। সোনারগাঁওয়ে জাতীয় পার্টিকে এত দুর্বল ভাবার কোনো কারণ নেই। পাশাপাশি সরকারসহ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের অহেতুক মিথ্যা অভিযোগে জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে এমপি খোকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করে বলেন, যে সকল নেতা ঘটনার সময় তার সঙ্গে অনুষ্ঠানে ছিলেন তাদেরও আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি আমি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও জেলা এবং পুলিশ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের জানিয়েছি। আমার নেতাকর্মীদের ক্ষোভ বাড়ছে এটা সত্য। তবে তাদের আমি বলেছি বিষয়টি আমি দেখছি। কথা বলছি। বিনা কারণে যাতে কেউ হয়রানির শিকার না হয় সেটার জন্য আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি অবস্থার পরিবর্তন হয়ে যাবে। সরকারি দলের অংশীদার হয়ে এর বেশি কিছু আমি বলতে পারছি না আপাতত।