টিসিবি পণ্যে সিন্ডিকেটের থাবা - ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪৮ এএম, ১৪ এপ্রিল,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:৫৬ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই রমজানে নিত্যপণ্যের দাম টিসিবি (সরকারের প্রতিষ্ঠান) বাড়িয়ে দিয়েছে। বরাবরের মত এবারও সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়েছে। আমাদের সময় ছিলো না তা বলবো না। কিন্তু দাম নিয়ন্ত্রণে থাকেনি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আগে রমজানের সময় টিসিবি পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতো, সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমায় রাখার চেষ্টা করতো। এবার সেই টিসিবি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
রমজানকে সামনে রেখে সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সবজি, মাছ, মুরগি, গরুর মাংস, খেজুর সবকিছুর দাম এখন ক্রয়সীমার বাইরে।
তিনি বলেন, সরকার ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে ঘোষণা দিয়েছিলো, ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াবে। আর এখন চালের দাম কত সবাই জানে। এটার একটা উদ্যোগও তারা নিয়েছিলো, তবে সাধারণ মানুষ নয় আওয়ামী লীগের লোকজন এর সুবিধা পেয়েছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলে জনগণের কল্যাণে তাদের কোনও কার্যক্রম নেই। জনগণের কল্যাণের চিন্তা তারা করে না।
ফখরুল বলেন, সরকার লকডাউনের নামে অকার্যকর শাটডাউন তৈরি করেছে। কীসের লকডাউন? লঞ্চ, বাস ও ট্রেন স্টেশনগুলোতে হাজার হাজার মানুষ ঢাকা ছাড়ছে। কাজ ও খাদ্য নিরাপত্তার অভাবে এসব মানুষ শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা লকডাউনের বিরোধিতা করছি না, আমরা বলছি অকার্যকর একটা শাটডাউন এটা। যে যেভাবে পারছে যাচ্ছে। পোশাক কারখানা খোলা রাখছে অথচ ব্যাংক বন্ধ রাখছে। মূলত সরকারের কোনও সমন্বয় নেই, কোনও পরিকল্পনা নেই, কোনও রোডম্যাপ নেই। এই যে ৭ দিন লকডাউন তার পরে কী হবে সে বিষয়ে কোনও নির্দেশনা নেই।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, সরকারের দুর্নীতি চরম পর্যায়ে যাওয়ার কারণে, একদলীয় শাসনের কারণে অ্যাডমিনিস্ট্রেশনসহ কোথাও সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।
ফখরুল বলেন, বিএনপির লোকজন, যারা বড় ব্যবসায়ী ছিলেন তারা গত কয়েক বছরে আওয়ামী লীগেট দুঃশাসনে সবাই নিঃস্ব হয়ে গেছে। সারা দেশে এ করুণ চিত্র। যারা ঢাকা শহরে মোটরসাইকেলে রাইডিং করে তারা গ্রাম থেকে এসেছে একটু আয়ের আশায়। তাদেরও আজ আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ২৬ মার্চকে কেন্দ্র করে সরকার যা ঘটিয়েছে সেটাকে বিরোধীদল নিশ্চিহ্ন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এই লকডাউনের মাঝেও বিরোধীদল ও মতের লোকদের দমন করছে। বাক-স্বাধীনতার অধিকার সবার আছে, অথচ সরকারবিরোধী মত দমন করতে একের পর এক আইন করছে।
জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কোথাও কোনও সরকার টিকে থাকতে পারেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, এমন নজির ইতিহাসে কোথাও নাই। এ সরকারও টিকে থাকতে পারবে না। আমরা আবারও আহ্বান জানাই জনগণের ভোটের অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিন। জনগণের অধিকার হরণ করে কেউ টিকে থাকতে পারেনি।
খালেদা জিয়ার বিষয়ে ফখরুল বলেন, সারা দেশের মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করছেন। আমরা সবাই দোয়া করছি তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন। আমরা সবসময় খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই।
তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় আমরা সব সময় বলছি একটা জাতীয় কমিটি করেন সব রাজনৈতিক দল, এনজিও ও সুশীল সমাজের সমন্বয়ে। সেটা সরকার করছে না, করবে না। কারণ এটা করলে তো তাদের যে লুটপাট, দুর্নীতি সেটা বন্ধ হয়ে যাবে।