সরকার রাজনীতির পথকেই সংকুচিত করে ফেলেছে - মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৯ এএম, ৩১ মার্চ,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৩৪ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
দেশব্যাপী মহানগরীসমূহে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে গতকাল চট্টগ্রাম, গাজীপুর, খুলনা ও ময়মনসিংহে বিএনপির মিছিলে পুলিশ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। সোমবার রাতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতি জানান, চট্টগ্রামে পুলিশ হামলা চালানোর পর মহানগর আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও তার ব্যক্তিগত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী, পাঁচলাইশ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মোঃ আলী, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, যুগ্ম সম্পাদক আঁখি সুলতানা, প্রচার সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদা লিটা, রিনা খানসহ ২০ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। ময়মনসিংহে বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান-এফ আই ফারুক, অ্যাড. ওয়াসিম, ছাত্রদল নেতা ইমন চৌধুরী, গোবিন্দ রায়, যুবদল নেতা-আলী ও স্বপনকে আটক করা হয়েছে।
তিনি জানান, পুলিশের হামলায় চট্টগ্রামে মারাত্মকভাবে নগর যুবদল নেতা তৈয়ব আলী, আনিসুজ্জামান, আব্দুর রহিম, মোঃ হেলাল, সাহাবুদ্দিন সাবু, শাহেদ তৈমুর, মঞ্জুর আলম, মোঃ ইলিয়াসসহ ৪০ জন, খুলনা ৯ জন, গাজীপুর তিনজন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়। কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সভা-সমাবেশ করা মানুষের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার হলেও ভোটবিহীন সরকার তাদের অনৈতিক ও ফ্যাসিবাদী শাসনকে দীর্ঘায়িত করতে সভা-সমাবেশে হামলা, মামলা, গ্রেফতারসহ দমন, নিপীড়ন চালিয়ে রাজনীতির পথকেই সংকুচিত করে ফেলেছে।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের অব্যাহত হত্যাযজ্ঞ ন্যক্কারজনক হামলা, গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার হরণের প্রতিবাদে গতকাল দেশব্যাপী মহানগর পর্যায়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহ ও গাজীপুর মহানগরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশ ন্যক্কারজনক হামলা চালায়। চট্টগ্রাম মহানগরীর কাজীর দেউড়িতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ হামলা চালিয়ে মহানগর আহবায়ক ডাঃ শাহাদাত হোসেন, তার পিএস মারুফুল হক চৌধুরী, পাঁচলাইশ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মোঃ আলী, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, যুগ্ম সম্পাদক আঁখি সুলতানা, প্রচার সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদা লিটা, রিনা খানসহ ২০ জন নেতাকর্মীকে আটক এবং পুলিশ গুলিবর্ষণ ও বেধড়ক লাঠিচার্জের মাধ্যমে ৪০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আহত করে। মারাত্মক আহত নেতাকর্মীরা হলেন নগর যুবদল নেতা তৈয়ব আলী, আনিসুজ্জামান, আব্দুর রহিম, মোঃ হেলাল, সাহাবুদ্দিন সাবু, শাহেদ তৈমুর, মঞ্জুর আলম, মোঃ ইলিয়াস প্রমুখ।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, খুলনা মহানগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশের শেষ মহূর্তে পুলিশ চতুর্দিক থেকে বিনা উস্কানিতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জের মাধ্যমে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের ব্যাপক লাঠিচার্জ ও হামলা করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ নেতৃবৃন্দদের গ্রেফতার করার পাঁয়তারা চালায়। দীর্ঘক্ষণ নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ। খুলনা মহানগরীর ৯ জন নেতাকর্মী পুলিশের হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ময়মনসিংহ মহানগরীতে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে নেতাকর্মীদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। প্রতিবন্ধকতার মুখে নতুন বাজারে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি পালন করে নেতাকর্মীরা ফিরে যাওয়ার মুহূর্তে পুলিশ হামলা চালিয়ে ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান-এফ আই ফারুক, ৩২ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-অ্যাড. ওয়াসিম, ছাত্রদল ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শাখার আহবায়ক-ইমন চৌধুরী, ময়মনসিংহ দক্ষিণ থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব গোবিন্দ রায়, যুবদল নেতা-আলী ও স্বপনকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এখানে পুলিশ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদেরকেও আটক করার পাঁয়তারা চালায় এবং হেনস্তা করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গাজীপুর মহানগরীতে মেট্রো থানা বিএনপির মিছিলে পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালায় ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে, এতে তিন জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়। গতকাল সন্ধ্যায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিনা উস্কানিতে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশের উপস্থিতিতে এই সন্ত্রাসী ঘটনা প্রমাণ করে সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রের ছায়াতলে দলীয় কর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে নামিয়ে দিয়ে দেশে নৈরাজ্য ও উস্কানিমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে।