বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে রণক্ষেত্র নওগাঁ, আহত অর্ধশতাধিক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ৩০ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৩৩ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
নওগাঁয় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ অন্তত অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এতে মহাদেবপুর উপজেলা বিএনপি'র সভাপতি আলহাজ্ব রবিউল আলম বুলেট গুলিবিদ্ধ হোন।
আজ মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে শহরের কেডির মোড় এলাকায় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পুলিশের গুলিতে হেফাজত কর্মীদের নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর ১২টার দিকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এ সময় উপস্থিত কিছু পুলিশ সদস্য তাদেরকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে লাঠিচার্জ শুরু করলে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
এ ঘটনার দুই-তিন মিনিট পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা আবারও জড়ো হয়ে দলীয় কার্যালয়ের পূর্ব দিক থেকে পুলিশ লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে।
পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের অন্তত ২০ মিনিট ধরে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এতে ব্রিজের মোড়-কলেজ মোড় সড়ক ও কেডির মোড়-ব্রিজের সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে নওগাঁ সদর থানা ও পুলিশ লাইনস থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হলে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তা ছেড়ে দেয়।
জেলা বিএনপির আহবায়ক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করি। কিন্তু পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে। বিএনপির নেতাকর্মীরা কেডির মোড় এলাকা থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে সেখানে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও গুলি ছুড়ে। এতে আমিসহ দলের অন্তত ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের গুলিতে গুরুত্বর আহত জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক কোহিনুর ইসলাম মিলি ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল ইসলামকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অন্যদের নওগাঁ সদর হাসপাতলসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার বলেন, ‘অনুমতি ছাড়াই বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করে। ব্যস্ততম সড়ক দিয়ে মিছিল নিয়ে চেষ্টা করলে উপস্থিত সদস্যরা তাদেরকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে।
এসময় বিএনপির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশও টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে। বিএনপির কর্মীদের হামলায় ৬-৭জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এদিকে, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু জানান, পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর দুপুর ২টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তারের নেতৃত্বে নওগাঁ শহরের তাজের মোড় এলাকার অন্বেষা নিশান ক্লাবে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মুকুল হোসেন (৪৫), রেন্টু হোসেন (৪৪), সহিদুল ইসলাম (৪৬), আলাউদ্দিন বাবু (৫০), আনোয়ার হোসেন (৫০) ও এনামুল হক (৩২) নামে ছয় জনকে আটক করে পুলিশ।