সরকারের সাকসেস জনগণের মাঝে ভয়-ভীতি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে - মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৭ এএম, ২১ মার্চ,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৪৯ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সরকার একটা জায়গায় খুব সাকসেসফুল হয়েছে, জনগণের মাঝে তারা ভয়-ভীতি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই সেই সময় আসবে যখন আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবো। হতাশাই শেষ কথা নয়। হতাশার পরে নিশ্চয়ই নতুন সূর্যোদয় হবে। সরকার একটা জায়গায় খুব সাকসেসফুল হয়েছে, জনগণের মাঝে তারা ভয়-ভীতি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। মিথ্যা প্রচারণা দিয়ে বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়ায় পুরোপুরি নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমরা কখনো নিরাশ হইনি। আমরা হতাশ হইনি। আমরা গত ১৪ বছর ধরে এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। এ সরকারে বিরুদ্ধে লড়াই করে আমরা সবচেয়ে বেশি মূল্য দিয়েছি। এবং এই মূল্য আমরা আরো দেবো।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির সাবেক মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমানের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা যে এখন সংগঠিত হওয়া শুরু করেছি, এভাবে যদি আমরা সংগঠিত হতে পারি তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা এই সরকারকে পরাজিত করতে সক্ষম হবো। আপনারা একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন, হতাশাই শেষ কথা না। হতাশার পরে নিশ্চয়ই নতুন সূর্যোদয় হবে। আমাদের অবশ্যই সেই সময় আসবে যখন আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক নেতাই না-ফেরার দেশে চলে গেছেন। অনেকে হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ বিষয়গুলো নেয়া আমাদের জন্য খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যারা দেশের জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন, তারাই আমাদের চোখের সামনে করোনার কাছে হার মেনে না-ফেরার দেশে চলে যাচ্ছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা এমন একটা সময়ে বসবাস করছি যেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আমাদের সকল অর্জন এই সরকার হরণ করে নিয়ে গেছে। প্রতিদিন অবলীলায় মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে আমরা সংগ্রাম করছি। এতকিছুর পরেও আমরা আমাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। শুধুমাত্র গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার জন্য।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সুনামগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর যে হামলা হয়েছে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ অবলীলায় মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছেন। কিন্তু এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দলের এক নেতা। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তারা বিএনপিকে দোষারোপ করছে। এই সরকার বিএনপিকে ভয় পায়। বিএনপিকে নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখে।
তিনি বলেন, যখন সরকার প্রশাসনিকভাবে ব্যর্থ, জনগণকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ঠিক রাখতে ব্যর্থ হয়েছে, ঠিক তখনই তারা এসব ঘটনা ঘটায় এবং বিএনপিকে দায়ী করার চেষ্টা করে। এ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সবসময় বিনষ্ট হয়েছে আওয়ামী লীগের আমলে। হিন্দুদের সম্পদ বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের লোকজন দখল করে আছে।
স্মরণসভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশে যত অপকর্ম হয় সব এই আওয়ামী লীগের লোকেরা করে। নারী ধর্ষণ, জমি লুট, এখন বর্জ্য ব্যবসাও নাকি আওয়ামী লীগের নেতারা করে। দেশের সব কিছু এখন সরকারের লোকেরা দখল করে নিয়েছে। গতকালকে দেখলাম হিন্দুরা মিছিল করছে তাদের ওপর নির্যাতন কেন। শ্রমিকরা মিছিল করছে তাদের পেটে ভাত নাই কেন। এগুলো সরকার বন্ধ করতে পারেনি।
মান্না বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার কৌশল-কায়দা করে ঘরের মধ্যে বন্দি করে রেখেছে। তাদের কথা হচ্ছে, আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছি কিন্তু আসলে দেবো না। গত কয়েক দিনে বিএনপির রাজপথের কর্মসূচি দেখে মানুষ আশায় বুক বেঁধেছে। মানুষ রাস্তায় নামছে। একটা সময় আসে মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায়। তখন তাদেরকে রোখা যায় না। সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের গর্জন শোনা যাচ্ছে। আমি সাহিত্য করছি না, আর এটা সাহিত্য করার জায়গা না। আমি এখন পরিষ্কারভাবে বলে দিচ্ছি, মানুষ এখন আর পুলিশকে ভয় করে না। আর বিএনপিকে সরকার খুব ভয় করে কারণ তারা জানেন বিএনপি মাঠে নেমে গেলে তাদের খুব বিপদ হতে পারে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্যামা ওবায়েদ প্রমুখ।