দুর্নীতি, অবিচার ও অনাচারে নিমজ্জিত দেশ - নজরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৬ এএম, ২৪ ফেব্রুয়ারী,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৩২ পিএম, ২০ অক্টোবর,রবিবার,২০২৪
দেশ দুর্নীতি, অবিচার ও অনাচারে নিমজ্জিত বলে মন্তব্য করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়। দেশবাসী অশান্তি ও কষ্টে থাকলে তাদের কিছু আসে যায় না। তিনি বলেন, দুর্নীতি, অবিচার ও অনাচারে নিমজ্জিত দেশ। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা শঙ্কিত।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ববাংলা ঘোষণা দিবসের ৫১ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টি (জাফর)।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। সরকার ভালো মতই জানে বেগম খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে দেশ ও জনগণ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা যাবে না। দেশের মানুষ আজ নিরাপদ নয়। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে তখনই শান্তি পাবো যেদিন এদেশের মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে, জানমালের নিরাপত্তা পাবে।
তিনি বলেন, শহীদ জিয়া দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেক্টর কমান্ডার থাকা অবস্থায় স্বাধীনতার আগেই সেখানে বাংলাদেশের প্রশাসন গড়ে তুলেছিলেন। সেই জিয়াউর রহমানকে অসম্মান করার অপচেষ্টা চলছে। এই অপচেষ্টা শুধু জিয়ার বিরুদ্ধে নয়, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে। জামুকা কাউকে খেতাব দেয়া বা নেয়ার ক্ষমতা রাখে না। আর যে এ প্রস্তাবটি তুলেছেন তিনিই বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খুনি মুজিবের বিচার হয়েছে বলে উল্লাস করেছিলেন।
২০ দলীয় জোটের মুখপাত্র বলেন, ১৯৭০ সালে যারা স্বাধীন পূর্ব বাংলার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাদের নাম ইতিহাসে নেই। সূর্যের চেয়ে বড় নক্ষত্র আছে। কিন্তু সূর্য কাছাকাছি দেখে তাকেই বড় মনে হয়। আজকে যারা মুক্তিযুদ্ধের ফেরি করে বেড়ান আপনারা কি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন? যখন মনে হয় যুদ্ধে আপনাদের দেখি নাই অথচ সকল কৃতিত্বের দাবিদার তখন মনে বড় কষ্ট লাগে।
সরকারি উদ্যোগে করোনোর টিকা প্রদান ‘সরকারের শুভ বুদ্ধির পরিচয়’ বলে মন্তব্য করে গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, এতোদিনে তো আপনাদেরকে মুরগীর ভ্যাকসিন নিতে হতো। যদি আমি আওয়াজ না উঠাতাম। আমি বলেছিলাম যে, ভ্যাকসিন বিনা পয়সায় জনগণকে দিতে হবে। যতদিন সরকারি ভ্যাকসিন থাকবে ততদিন প্রাইভেটে ভ্যাকসিন নেয়া যাবে না। প্রাইভেটে ভ্যাকসিনের বিষয়ে আপত্তি করেছিলাম সেটাতে সরকারের একটু শুভ বুদ্ধি হয়েছিলো। আমার মনে হয় সরকারের শুভ বুদ্ধি হওয়াতে সেজন্য যতদিন সরকারি এটা থাকবে ততদিন বেসরকারিটা হবে না।
তিনি বলেন, প্রাইভেটে ভ্যাকসিন দিলে চুরি হবে, সরকারি ভ্যাকসিন চুরি হবে। জনগণকে প্রতারণা করে ঠিক যা হয়েছিলো পাঁচ ডলার এনে তা ৪৫ ডলারে, চার হাজার টাকা। খোঁজ নিতে পারেন কতজন নাম লেখিয়েছে গুলশান ক্লাবে। তখন শর্ট পড়লে পানি পড়া দিতো কেরানীগঞ্জের বাইরে অথবা মুরগির ভ্যাকসিন দিতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেয়ার দাবিতে ছাত্র সমাজের সাথে সকলকে একতাবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করার জন্য রাজনৈতিক নেতাদের পরামর্শ দেন তিনি।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ভাষা আন্দোলনের মাস এটা। তারা বলছে, ভাষা আন্দোলনের মূল নেতা নাকি শেখ মুজিবুর রহমান। কত বড় মিথ্যা কথা। আজকে উনি বেঁচে থাকলে বলতেন- এই বেটারা করছ কী? এতো বড় মিছা কছ কেমন করে। আমি তো ফরিদপুরের জেলে। আমি কেমনে করে নেতা হব। গাজীউল হকের কথা কও, ভাসানীর কথা কও, তর্কবাগীসের কথা কও।
তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদের সমালোচনা করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ওনাকে আবিষ্কারের জন্য নোবেল প্রাইজ দেয়া যেতে পারে, মিথ্যা কথার জন্য দেয়া যেতে পারে। উনি বলেছেন, বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা করার দাবি নাকি শেখ মুজিবুর রহমান উত্থাপন করেছিলেন। এখানেও বঙ্গবন্ধু লজ্জায় মাথা কোথায় ডুবাতেন জানি না। তখন পর্যন্ত, ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমান তো এমপিই হন নাই। তাহলে কেমন করে সংসদে প্রস্তাব করলেন। সেটা তো করেছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, যাকে পাকিস্তানিরা হত্যা করেছে। তার কথা না বলে এভাবে তারা মিথ্যাচার করছে। এর বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহবানও জানান তিনি।
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও এএসএম শামীমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, নবাব আলী আব্বাস, মুজিবর রহমান, এএসএম শামিম, মহসিন সরকার প্রমুখ।