ময়মনসিংহে ৭ বছর পর ছাত্রদলের ৪৩ ইউনিট কমিটি ঘোষনা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২৩ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৪৫ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
র্দীঘ ৭ বছর পর ময়মনসিংহে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৬টি ইউনিটের মধ্যে ৪৩টি ইউনিটের কমিটি গঠিত হয়েছে।
গত রবিবার সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-দফতর সম্পাদক আজিজুল হক সোহেল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসবমূখর আমেজের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে নবগঠিত ৪৩টি ইউনিটের মধ্যে ৩টি ইউনিটের ৬ নেতার বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকান্ডের অভিযোগ উঠেছে খোদ সংগঠনের ভেতরে-বাইরে। এ নিয়েও দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্রপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, র্দীঘ সময় পর যাদের অবিরাম প্রচেষ্টায় ময়মনসিংহের ৪৩টি ইউনিটে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছে তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ময়মনসিংহের সাবেক ছাত্রনেতারা। তাদের ভাষ্যমতে, সংগঠনের নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিযোগীতা না থাকলেও দলীয় কর্মকান্ডে গতি থাকে না। কারণ নতুন নেতৃত্ব দল ও সংগঠনকে সরব করে তুলে।
সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ জেলায় ছাত্রদল ৩টি ইউনিটে বিভক্ত। এগুলো হল ৬টি ইউনিটের সমন্বয়ে ময়মনসিংহ মহানগর, ১৮টি ইউনিটের সমন্বয়ে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা এবং ২০টি ইউনিটের সমন্বয়ে ময়মনসিংহ জেলা উত্তর। তবে এ ৪৬ টি ইউনিটের মধ্যে ৪৩টি ইউনিটের কমিটি অনুমোদন হলেও এখনো মহানগরের
অধীনস্থ ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী আনন্দ মোহন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি, নেতৃত্ব বাছাঁইয়ের জটিলতায় আটকে গেছে। একই সাথে আবারও ঝুলে গেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় টিম প্রধান মাজেদুল ইসলাম রুম্মন জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে গত বছরের নভেম্বর থেকে ময়মনসিংহ জেলার ৪৬টি ইউনিটের কাজ শুরু করি। এ প্রক্রিয়ায় প্রতিটি ইউনিটের সম্মেলন করে পদ প্রত্যাশীদের সাংগঠনিক কর্মকান্ডের সকল ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরে স্থানীয় কমিটির সুপার ফাইভের সাথে দফায় দফায় আলোচনা ও মতবিনিময় করে নানা জটিলতা পেরিয়ে র্দীঘ প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে জেলার ৪৪টি ইউনিটের মধ্যে ২১ সদস্য বিশিষ্ট ৪৩টি ইউনিটের কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
শুধুমাত্র আনন্দ মোহন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি সামান্য জটিলতায় আটকে আছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ও কেন্দ্রীয় সুপার ফাইভের সাথে মতামতের ভিত্তিতে এ কমিটিও অনুমোদন দেয়া হবে।
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটির কাজ অগ্রগতিতে রয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশে দ্রুত এ কমিটি গুলোও অনুমোদন দেয়া হবে।
দলীয় সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২০০৩ সালের ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রদলের র্পূনাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়। ওই সময় জেলার অধিনস্থ সকল উপজেলা ও ইউনিয়নের কমিটি গঠিত হয়। এরপর ২০১৩ সালে জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে বেশ কিছু উপজেলার আংশিক কমিটি হলেও ঝুলে যায় অনেক উপজেলার কমিটি। তবে এসব কমিটি র্দীঘ ৭ বছরেও সাংগঠনিক কর্মকান্ডে সফলতার মুখ দেখতে পারেনি। ফলে টানা ১৭ বছর পর নতুন নেতৃত্ব পেল ৪৩টি ইউনিটের নেতারা।
দলীয় সূত্র আরো জানায়, ৪৩টি ইউনিটের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে বিতর্কিত কর্মকান্ডের অভিযোগ উঠেছে জেলার ঈশ্বরগজ্ঞ, নান্দাইল ও গফরগাঁও উপজেলার কমিটির ৬ নেতার বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে ঈশ্বরগজ্ঞ উপজেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির আহবায়ক ফরহাদ আহম্মেদের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারী ও মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এসব ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। একই ভাবে নান্দাইল উপজেলা কমিটির নবনির্বাচিত আহবায়ক বাবুল আহম্মেদ অনিক মিয়া সরকারী প্রকল্পের চাকুরীজীবী বলেও অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে একই কমিটির যুগ্ম আহবায়ক রবিউল আউয়াল রুবেল, আনিসুর রহমান বাবু বিবাহিত বলেও অভিযোগ স্থানীয় পদবঞ্চিত নেতা কর্মীদের।
অপরদিকে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলার গফরগাঁও উপজেলা ছাত্রদলের নবর্নিবাচিত আহবায়ক মুক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে-তালাক ও বিতর্কিত কর্মকান্ডে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় টিম প্রধান মাজেদুল ইসলাম রুম্মন বলেন, গফরগাঁও এবং ঈশ্বরগজ্ঞের দুই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনেছি। তবে উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি আরো জানান, কেউ পদ পেলেই সব হয়ে গেছে, তা ভাবার কোন সুযোগ নেই। অভিযোগের বিষয়ে উপযুক্ত প্রমাণ মিললে সংগঠনের র্শীষ নেতাদের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে যে কোন সময় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।