কর্মীকে পুলিশের হাত থেকে বাঁচিয়ে ফেসবুকে বিএনপির ইশরাক ভাইরাল (ভিডিওসহ)
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫৯ এএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৩৯ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাঠিপেটায় আহত কর্মীকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। দক্ষিণ সিটির মেয়র প্রার্থী ও দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির অন্যতম সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন ওই কর্মীকে ছিনিয়ে নেন। এ সময় তিনিও সামান্য আহত হন। পরে ওই ভিডিওটি ইশরাকের ফেসবুক পেজে আপলোড করা হয়। ক্যাপশনে ইশরাক লেখেন, ‘লাঠিচার্জ অথবা কামানের গোলা চার্জ, যেটাই হোক জান থাকতে আমাদের একজন কর্মী-সমর্থককেও নিয়ে যেতে দিবো না এটাই হোক আগামী দিনের সংকল্প।’
ভিডিওটি প্রচারের প্রথম ঘণ্টাতেই ৮ হাজারের বেশি শেয়ার হয়। এ পর্যন্ত ওই ভিডিওতে কমেন্ট করেছেন ৪ হাজারের বেশি মানুষ। এর মধ্যে বিশেষভাবে গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক বাপ্পাদিত্য বসুর কমেন্টটি সবার নজর এসেছে।
তিনি লিখেছেন, ‘অনেকদিন পরে আজ বিএনপির কোনো নেতা নেতার মতো ভূমিকা নিলেন। আপনাদের রাজনীতির ঘোরতর বিরোধী আমি। কিন্তু আজ আপনার ভূমিকা নেতার মতো ছিলো। শ্রদ্ধেয় সাদেক হোসেন খোকার ছেলের মতো ছিলো’।
নুরুল আলম নামের একজন কমেন্টে লেখেন, ‘সত্যি বীরের ঘরে বীর উনি। বৃদ্ধ বাবারা অবসরে গিয়ে এদেরকে বিএনপির নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ করে দেয়া প্রয়োজন। এরাই আমার মনে হয় দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবেন’।
হাসান নাঈমুল নামের একজন তার মন্তব্যে লেখেন, ‘আজ ইশরাক ভাই বুঝিয়ে দিলেন তার শরীরে যোগ্য পুরুষের রক্ত। শুধু দল নন, কর্মীদের ভালোবাসতে হবে। ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। আমি বিএনপি একজন চুনোপুঁটি কর্মী। কথাটা হয়তো বড় হয়ে যাবে। শিখেন ইশরাক ভাইকে দেখে, কীভাবে দলকে ও তার দলের কর্মীদের রক্ষা করতে হয়। তাই বলি ইশরাক ভাইকে পাশে রেখে সব কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা মাঠে নামেন।’
ইশরাকের উদ্দেশে ফেসবুকে মোহাম্মদ জামিল নামের একজন লেখেন, আপনি কোন বাপের সন্তান তা আজ বাংলার ১৮ কোটি মানুষ বুঝতে পেরেছে। দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনাকে সবসময় ভালো রাখেন, সুস্থ রাখেন, নিরাপদে রাখেন। আমিন। সেইসাথে একটা কথাই বলবো যে, প্রয়োজন আছে প্রতিটা নেতাকে এরকম বিনয়ী এবং নিজের জীবন কর্মীদের বিপদের সময় জীবনদানকারী হিসেবে প্রমাণিত হতে হবে।
মোহাম্মদ ইব্রাহিম নামের একজন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আলোচিত ওই ভিডিওর কমেন্টে লেখেন, ‘আমি যদিও আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক তবুও আপনাকে ভালো লাগে। প্রতিটি নেতার আপনার থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তরুণ প্রজন্মের হাতে আগামীর দেশ হবে নিরাপদ।’
আবদুর রহিম নামের একজন ফেসবুকে লেখেন, ‘সাদেক হোসেন খোকার রক্ত বইছে তার ধমনীতে। এ রক্ত একজন ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলা যোদ্ধার রক্ত। দেশের মুক্তির জন্যে যে তরুণ সব মায়া পেছনে ফেলে নিজের জীবন বাজি রেখেছিলো - এ তার রক্ত। এ রক্ত শৌর্যবীর্যের প্রতীক। এ রক্ত বেঈমানি করে না- না রাষ্ট্রের সাথে, না দলের সাথে, না কর্মীদের সাথে। প্রিয় ইশরাক, ভালোবাসা জানবেন। পুলিশের কবল থেকে একজন আহত কর্মীকে উদ্ধারের জন্যে আপনি আজ যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন সেটা আমার চোখ ভিজিয়ে দিয়েছে।’
নীরব সম্রাট নামের একজন লেখেন, ‘আমার জীবনে দেখা সেরা দৃশ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম দৃশ্য। ইশরাক নিজে মাইর খেয়ে পালিয়ে যায়নি, উল্টো পুলিশের কাছে দৌড়ে গিয়ে কর্মীকে ছিনিয়ে নিয়ে আসলেন, স্যালুট ভাই, স্যালুট নেতা। নেত্বত্বের জন্য বয়স কখনোই বাধা হতে পারে না- কোয়ালিটি, সাহস, পরিশ্রম ও দলের প্রতি কমিটমেন্টই নেতা হওয়ার আসল যোগ্যতা। বাঘের পেটে বাঘই জন্ম নেয়। ঢাকা সিটির সত্যিকারের বাঘকে স্যালুট। এই ভিডিও এই পর্যন্ত ১০০ বারের বেশি বেশি দেখলাম.... যতবার দেখছি ততবার চোখের কোণায় পানি জমে গেলো!
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসবক্লাবের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
শায়রুল কবির খান বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের শেষ পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
নেতাকর্মীদের রক্ষা করতে গিয়ে পুলিশের লাঠিপেটায় ইশরাক হোসেন আহত হয়েছেন বলে জানান শায়রুল। শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বক্তব্য দিচ্ছিলেন।
পুলিশের লাঠিপেটা শুরু হলে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমান উল্লাহ আমান ও হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের ভেতরে নিয়ে যান। অনেক নেতাকর্মী দৌড়ে অন্যত্র সরে যান। তবে এ সময় তাদের স্লোগান দিতে দেখা গেছে।