শেখ হাসিনার মতো ’৭১ সালে শেখ মুজিবও পালিয়েছিলেন : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ৫ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০৩:০৪ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন, শেখ মুজিব ’৭১ সালে পালিয়েছিলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে গ্রেফতার হওয়ার জন্য বাসায় বসেছিলেন। সেটি আওয়ামী লীগ নেতা তাজউদ্দীন আহমেদের মেয়ে তার বইয়ে লিখেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ৭ নভেম্বর বিপ্লবের নায়ক সাধারণ সিপাহি ও জনতা। ৭ নভেম্বরের বিপ্লব নতুন করে বাংলাদেশকে বিনির্মাণের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল। সেদিন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সামনে না এলে বাংলাদেশ কী হতো? এ কথা বলা যায় না। হয়তো এ দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতো। তিনি নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বাকশাল গঠনের মাধ্যমে রক্ষীবাহিনী গঠন করেছিল। এই রক্ষীবাহিনী কত মানুষকে হত্যা করেছে, তার কোনো হিসাব নেই। সে সময় জাসদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছিল এই রক্ষীবাহিনী।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা আশার আলো তৈরি করেছিলেন। তিনি বহুদলের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন । গণমাধ্যমকে মুক্ত করে দেন। গার্মেন্টশিল্প ও বিদেশে কর্মী পাঠিয়ে রেমিটেন্স আনার প্রবণতার সূচনা করেছিলেন তিনি। খাল কাটা কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষিতে বিপ্লব এনেছিলেন। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ওপর থেকে চেপে এসে ক্ষমতায় বসেননি। তিনি জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছর ধরে জনগণের ওপর নির্মম নির্যাতন করেছিল। এরা দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে। আমাদের ৬০ লাখ নেতা নারী-পুরুষ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। ইলিয়াস আলীসহ ৬শর বেশি নেতাকর্মীকে গুম করেছে। ছাত্র-জনতার দৃঢ়তার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে সরাতে পেরেছি বলে মহান রবের নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, শেখ মুজিব ’৭১ সালে পালিয়েছিলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে গ্রেফতার হওয়ার জন্য বাসায় বসেছিলেন। সেটি আওয়ামী লীগ নেতা তাজ উদ্দীন আহমেদের মেয়ে তার বইয়ে লিখেছেন। বুকে চেপে থাকা দানব সরে গেছে কিন্তু আমাদের সজাগ ও সচেতন হতেÑ নেতাকর্মীদের প্রতি এমন আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারই শ্রেষ্ঠ সরকার। বিপদ শেষ হয়নি নতুন করে বিপদ আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এমন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির ওপর সব সময় আঘাত এসেছে। আমাদের সজাগ থাকতে হবে। বহু চেষ্টা করে কেউ বিএনপিকে ভাঙতে পারেনি। বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে নারীরা। সেটি সরিয়ে দিতে নারী নেত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা। সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহাম্মেদ।
দনিকাল/এসএস