খালেদা জিয়ার মুক্তিতে সব ব্যারিকেড ভাঙতে হবে-রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:১৮ এএম, ১০ ফেব্রুয়ারী,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:৪৪ পিএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আমাদের এখন একটাই দায়িত্ব, সব ব্যারিকেড ভেঙে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে মোমবাতি প্রজ¦লন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি রাখার প্রতিবাদে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে মোমবাতি প্রজ¦লন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। রিজভী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির চেয়ারপারসন নন, জনগণের অধিকারের জন্য জেল-জুলুম টিয়ারসেলসহ সকল নিপীড়ন-নির্যাতনকে বুকে ধারণ করে তিনি রাজপথে গণতন্ত্রের পতাকা উড্ডীন করেছেন। সেই মহান নেত্রীকে অন্যায়ভাবে আটক রাখা হয়েছে। কারণ ভোটারবিহীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশনেত্রীকে ভয় পান। ‘বেগম খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে দিনের ভোট রাতে করতে পারতেন না, অবৈধ ভোট করতে পারতেন না’- এজন্যই বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলেও দাবি করেন রিজভী। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সকল ব্যারিকেড ভেঙে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। সেই তাগত বুকে আছে? সেই তাগত নিয়ে রাস্তায় নেমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া বক্তব্যের জবাবে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘আন্দোলন দেখতে চান- পুলিশ রেখে রাজপথে আসেন। দেখেন, জনগণ কি আন্দোলন দেখাতে পারে কি না।
তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের ব্যঙ্গ করে বলেছেন, ‘১২ বছর হয়ে গেল আন্দোলন কবে হবে।’ ওবায়দুল কাদের সাহেব আন্দোলন তো আপনাদের ঘরে শুরু হয়েছে টের পাচ্ছেন না? আপনার ভাই কাদের মির্জাই তো আন্দোলন। আপনার আত্মীয় নিক্সন চৌধুরী তো আন্দোলন। আপনার শামীম ওসমানই তো আন্দোলন। আপনার যে এসপি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে মারে, পিটায় সেটাই তো আন্দোলন। আপনাদের যে এমপি স্বাস্থ্য সচিবকে মেরে পুকুরে ফেলে দেয় ওটাই তো আন্দোলন। আর কত আন্দোলন দেখতে চান? আন্দোলন দেখতে হলে সরকারি বাসা ছাড়েন। পুলিশ ব্যারিকেড ছেড়ে রাস্তায় বের হন। দেখেন জনগণ কি আন্দোলন দেখাতে পারে।
আলাল আরও বলেন, ‘এখন টিকা নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছেন। দেশের সকল মানুষ করোনামুক্ত হোক এটা আমরা চাই। কিন্তু আপনাদের তো সব জায়গায় দুই নম্বরি। মহিলা দলের এক বোন, তার নাম সাদিয়া বিলকিস খান। জাতীয় পরিচয়পত্র বানানোর জন্য তিনি নাম জমা দেন। এই ভুয়া নির্বাচন কমিশন থেকে তার নাম আসলো সাদিয়া বিস্কুট খান। এই তো দেশের অবস্থা। দেশটাকে তো আজ সেই জায়গায় নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকা নিয়েছেন, ভালো কথা। টিকা নিতে তো কেউ নিষেধ করে নাই। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর টিকা নেয়ার সময় দেখলাম যত চামচা-দালাল দাঁড়িয়ে আছে। কোরবানির গরু জবাই করতেও এত মানুষ লাগে না। বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যত অন্যায়- অবিচার-দুর্নীতি করেছে, এই সমস্ত অন্যায় ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম যে কর্মসূচি নিয়েছে মোমবাতি প্রজ¦লন, এই মোমবাতি প্রজ¦লন শুধু মোমবাতি নয়, এটা হচ্ছে আন্দোলনের প্রতীক মশাল। এই জ্বলন্ত মশাল দিয়েই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তারেক রহমানকে দেশে ফেরত আনতে হবে। আর এ যে শেখ হাসিনা বসে আছেন অন্যায়ভাবে, তাকে সেই আসন থেকে নামাতে হবে। এটাই হোক আজকের শপথ। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আইডল হচ্ছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এটা প্রতিষ্ঠা করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশের মেয়েদের শিক্ষা বাধ্যতামূলক এটা চালু করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। আজ সেই নারী-শিশুরা পদে পদে নির্যাতন হচ্ছে, ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। কারণ তাদের পক্ষে কথা বলার মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার কথা বন্ধ করা হয়েছে । গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। সুতরাং আজ আমাদের দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নারী ও শিশু ফোরামের যে তাৎপর্য, কর্মসূচি সেগুলো সফল করা।
বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুর সভাপতিত্বে এবং নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও দৈনিক দিনকালের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।