হাসিনা সরকারের পতন ভারত হজম করতে পারেনি : বদরুদ্দীন উমর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০২ পিএম, ১৯ অক্টোবর,শনিবার,২০২৪ | আপডেট: ১১:০০ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ভারত শেখ হাসিনা সরকারের পতন এখন পর্যন্ত হজম করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন লেখক-গবেষক, রাজনীতিক ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর।
তিনি বলেন, এর কারণ ভারতের সঙ্গে তার প্রত্যেক প্রতিবেশীর সম্পর্ক খারাপ। শুধু বাংলাদেশের ওপর কর্তৃত্ব ছিল। ভারত বাংলাদেশকে আশ্রিত রাজ্যের মতো বিবেচনা করত। সেই আশ্রিত রাজ্য হাত ফঁসকে গেছে।
‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থান: জনগণের হাতে ক্ষমতা চাই, জনগণের সরকার–সংবিধান–রাষ্ট্র চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বদরুদ্দীন উমর এ কথা বলেন।
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সভার আয়োজন করে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনাকে ‘ক্ষমতায় রাখার জন্য যা দরকার’ ভারত তা করেছে বলে মন্তব্য করেন বদরুদ্দীন উমর। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত অস্বস্তিতে আছে। তারা চেষ্টা করেছিল হাসিনাকে অন্য জায়গায় দেওয়ার জন্য। অন্য দেশ আশ্রয় না দেওয়ায় ভারতই রাখল।
বদরুদ্দীন উমর বলেন, আওয়ামী লীগের সব সংগঠন ধসে গেছে। কেউ যদি মনে করে যে আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে, সেটা একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার। ১৯৫৪ সালে মুসলিম লীগ যেভাবে শেষ হয়ে গিয়েছিলো, এখন আওয়ামী লীগও সেভাবে শেষ হয়ে গেছে।
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান ছিল বায়ান্ন সাল থেকে এখন পর্যন্ত সংঘটিত অভ্যুত্থানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যাপক, গভীর ও আক্রমণাত্মক। এর কারণ ব্যাখ্যা করে বদরুদ্দীন উমর বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে জনগণের ওপর এমন অত্যাচার, নির্যাতন করেছে, যার কোনো পূর্ব দৃষ্টান্ত নেই। নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছিল, কিন্তু বিক্ষোভের সুযোগ ছিল না।
মুজিব কিসের জাতির পিতা?
শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা বলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বদরুদ্দীন উমর। তিনি বলেন, এ দেশের জনগণ দুবার তাঁর (মুজিব) বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁকে হত্যা করার পর একজন লোকও তাঁর পক্ষে রাস্তায় আসেনি।
স্বাধীনতার পর সাড়ে তিন বছরে শেখ মুজিব কী করলেন, যাঁর জন্য মানুষ এটা করল, তা হিসাব করতে হবে উল্লেখ করে বদরুদ্দীন উমর বলেন, তাঁর আসল পরিচয় পাওয়া যায় যখন ক্ষমতায় আসেন। তখন এই দেশের জনগণকে তিনি কী দিয়েছেন? তারপর গত ৫ আগস্ট সারা দেশের জনগণ শেখ মুজিবের মূর্তি ভেঙে ফেললো। তাঁর বাড়িতে আগুন দিলো। এটা শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে একটা রায়।
এই সরকার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে পারছে না উল্লেখ করে এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায় হচ্ছে রেশনিং পদ্ধতি চালু করা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের চেষ্টাকে ‘পাগলামি’ বলে উল্লেখ করেন বদরুদ্দীন উমর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে গুণ্ডামির রাজনীতি করেছে, তা বন্ধ করতে হবে।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিমসহ দলটির নেতা সজীব রায়, ভুলন ভৌমিক ও কাজী ইকবাল, মাইকেল চাকমা প্রমুখ।
দিনকাল/এসএস