ভয়ঙ্কর ডেঙ্গু হাসিনা বিদায় নিয়েছে, আরেক ডেঙ্গু হাজির হয়েছে : রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৩৪ পিএম, ১৯ অক্টোবর,শনিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৪:০৭ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ভয়ঙ্কর ডেঙ্গু শেখ হাসিনা বিদায় নিয়েছেন। আরেক ডেঙ্গু হাজির হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
আজ শনিবার ঢাকার জুরাইনে বিক্রমপুর প্লাজার সামনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ভয়ঙ্কর ডেঙ্গু শেখ হাসিনা বিদায় নিয়েছেন। আরেক ডেঙ্গু হাজির হয়েছে। এই এলাকায় অনেক জলাবদ্ধতা রয়েছে। শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য জনসেবা ছিল না, তার উদ্দেশ্য ছিল জনগণের টাকা মারা, আর বিদেশে পাচার করো। ম্যান পাওয়ার সিন্ডিকেট করে আওয়ামী সিন্ডিকেটবাজরা হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়েছে। শেখ হাসিনা কিংবা তার পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বললে তাদের কারাগারে পাঠানো হতো। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, প্রতি রাতে কারওয়ান বাজারে ৫০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয়, সেখানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে স্বাভাবিক। আপনারা কী করেন? এতেদিনেও সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছেন না। জনগণ তো বলবেই, শেখ হাসিনার সময়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়তো, এখনও বাড়ছে। তফাৎটা কী? ঢাকা শহরের মধ্যে যাত্রাবাড়ী জুরাইন এলাকায় সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু।
তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি কারাগার ছিল শেখ হাসিনার আয়নাঘর। তার বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে, গণতন্ত্রের পক্ষে যারা কথা বলবে তাদেরকে সেই ঘরে বন্দি করে রাখা হতো। শুধু বিএনপি নেতাকর্মী নয়। এদেশের জনগণ যারা গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছে তাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চলেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগকে বিদায় করে একটু মুক্ত হয়েছে। একটু শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তদের কালো টাকা এখনো আমাদের সমাজের আনাচে-কানাচে গভীরে ছড়িয়ে আছে, তারা নাশকতা করে যাচ্ছে, করবে। আমরা আগে বলেছিলাম তারা নাশকতা করবে। কারণ সরকারি সংস্থায় আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের লোক রয়েছে তারা এসব করবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড করেছে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, তারা আওয়ামী লীগ এটাকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে। তারা ৫০টি পল্লী বিদ্যুৎকেন্দ্র শাটডাউন করলেন তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে। তাহলে হাসিনার আমলে কেন করলেন না। সে সময় দাবি মানলেন না কেন? আপনাদের ন্যায্য দাবি থাকতে পারে কিন্তু শাটডাউন করলেন কেন? কার স্বার্থে করলেন? হাসিনাকে প্রত্যাবর্তন করাতে চান? আবার বাংলাদেশ ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক লুট করার ব্যবস্থা করতে চান?
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আপনারা যদি হাসিনার দোসরদেরকে মেইন মেইন জায়গায় বসান তাহলে নাশকতা তো হবেই। ঘুরে ফিরে দেখছি দুটো শক্তিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় বসাচ্ছে। একটা স্বাধীনতা বিক্রি করার শক্তি আর একটা স্বাধীনতার বিরুদ্ধের শক্তি। এদের বসানোর কারণেই যারা স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করে তারা ঠিক মতো কাজ করতে পারছে না। যার কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়ছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রিজভী আরও বলেন, গরিমসি না করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। নির্বাচন হলে নির্বাচিত সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা থাকবে। একজন এমপিকে কিছু না কিছু ভাল কাজ করতে হয়। শেখ হাসিনার এমপি নয়। সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যাকে পছন্দ করে নির্বাচিত করবে সেই এমপি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা ১৬ বছর যুদ্ধ করেছি। আমাদের কথা হল যেই ক্ষমতা আসুক জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হোক।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ও সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি তানভীর আহমেদ রবিন।