শেখ হাসিনার পরিবার দেশের টাকা লুট করে বিদেশে বিলাসিতা করছে : রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৩৪ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২৪ | আপডেট: ১২:২৩ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যরা বিদেশে কি কাজ করেন? কোথায় চাকরি করেন? তাদের টাকার উৎস কি? তা কাউকে জানানো হয়নি। তারা (শেখ হাসিনার পরিবার) বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে বিজনেস করছে। সেই টাকা কোথায় পেয়েছেন? মূলত দেশের টাকা লুট করে তারা বিদেশে বিলাসিতা করছেন।
আজ সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী প্রচার দলের উদ্যোগে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অনেকেই বলে আপনারা ভারতের এত সমালোচনা করেন কেন, সমালোচনা তো তারাই সৃষ্টি করেছে। যে ব্যক্তিটা গণশত্রু, যে ব্যক্তি নিজের দেশের শিশু-কিশোরদেরকে হত্যা করেছে তাকে ভারত সমর্থন করছে তাহলে দেশের মানুষ কিভাবে ভাববে যে, আপনারা বাংলাদেশের বন্ধু। আপনারা তো বাংলাদেশের মানুষকে ভালবাসেন না, আপনারা ভালবাসেন শেখ মুজিবের কন্যা শেখ হাসিনাকে। যে ব্যক্তি দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে তারপরও আপনারা তাকে সমর্থন দিয়ে গেলেন। ওরা নির্বাচন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। নিজেদের লোককে যাদেরকে বাড়িতে পুষে বড় করেছেন তাদেরকে বিচার বিভাগে দিয়েছিলেন। এই ধরনের একজন ব্যক্তিকে আপনারা আশ্রয় দিলেন, এই ধরনের একজন ব্যক্তিকে আপনারা সমর্থন দিয়ে গেলেন। তারমানে আপনারা গণতান্ত্রিক দেশ হয়ে বাংলাদেশের মানুষের স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার যে অধিকার সেটাকে রক্ষা করার জন্য আপনাদের যে মানবতাবোধ সেটা জাগ্রত হয়নি। সবকিছুর বিনিময়ে আপনাদের শেখ হাসিনাকেই দরকার ছিল এত?
তিনি বলেন, জনগণের বাঁচা-মরার অধিকারকে থোড়াই কেয়ার করে আপনারা শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে গেছেন। তারমানে শেখ হাসিনা থাকলে ভারত বাংলাদেশের ওপর খবরদারি করতে পারবে। এবং বাংলাদেশকে ভারত মনে করবে শেখ হাসিনা আমাদের প্রতিভূ, বাংলাদেশের স্বাধীন অস্তিত্বের দরকার নাই। একটাই অস্তিত্ব দরকার শেখ হাসিনার অস্তিত্ব। এই কারণেই শেখ হাসিনাকে ভারত সমর্থন দিয়ে গেছে। এই জিনিসগুলো তো মানুষ ভুলতে পারে না।
রিজভী বলেন, পদ্মা সেতু দেখিয়ে, উড়াল সেতু দেখিয়ে, ফ্লাইওভার দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার রাষ্ট্রনীতি ছিল না শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার। আজকে এস আলমসহ নানা আলম আজকে নানা এমপি-মন্ত্রী বড় বড় ঠিকাদার অধিকাংশই ছিল দুর্বৃত্ত।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে সালমান এফ রহমানরা এবং আনিসুল হকরা বলছেন কত টাকা কে পাচার করেছে। ইন্ডিভিজুয়ালি মানুষকে স্বাবলম্বী না করে যারা ফ্লাইওভার করে তারা ডিক্টেটর। পৃথিবীর দেশে দেশে এটি দেখা গেছে। ওরা স্কুল বানায় না, ওরা হাসপাতাল বানায় না, ওরা জনগণের যে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সেইটা তারা বৃদ্ধি করে না। তারা ফ্লাইওভার করে টাকা পাচার করার জন্য, তাদের মেগা প্রজেক্ট করতে হয় টাকা পাচারের জন্য।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যরা বিদেশে কি করেন এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জয় সাহেব থাকেন এক দেশে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্নে-ভাগ্নিরা থাকেন আরেক দেশে কি করেন তারা? এখন কি বলতে পারবেন জয় কি চাকরি করে? কি ব্যবসা করে? তার নাকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক দামি বাড়ি ছিল। এখন তিনি কোথায় আছেন জানি না। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে, মেয়ের জামাই তারাও বিদেশে থাকতেন কিন্তু কোন কোম্পানিতে চাকরি করতেন, কোন প্রতিষ্ঠানে তারা কাজ করতেন এইটা কি কোনদিন জনগণকে জানিয়েছিলেন? এটা কোনদিনও জনগণকে জানাননি। তার মানে বাংলাদেশের টাকা পাচার হয়ে হাওয়াই মিঠাইয়ের মত চুপসে যেতো না, এই টাকাটা কোথাও না কোথাও যেত। আর কাদের কাছে যেত এটা সবাই জানে।
তিনি বলেন, একজন ব্যক্তিকে একের পর এক সব ব্যাংক দিয়ে দিয়েছিলেন, সব ব্যবসা দিয়ে দিয়েছিলেন। ইটিভি কেড়ে নিয়ে দিয়ে দিলেন এস আলমকে, একের পর এক টেলিভিশন যারা একটু সরকারের বিরোধিতা করেছে সেই টেলিভিশনেই নিজেদের লোককে বসিয়েছেন আগের মালিককে জেলের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে। এইগুলোই তো আমরা দেখেছি। অর্থাৎ অভিনব পন্থায় বাকশাল টু শেখ হাসিনা কায়েম করেছিলেন। তার বাবা যেমন করেছিলেন একদম প্রকাশ্যে দানবীয় কায়দায় সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে দিয়ে, শেখ হাসিনা ওইভাবে না করে একটু ঘুরিয়ে করেছিলেন। ক্ষমতায় থাকতে শেখ হাসিনা শিশুদেরকে গুলি করতেও দ্বিধা করেননি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা নির্দ্বিধায় হত্যাকা- করেছে। গণহত্যা চালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। বিএনপি সৃষ্টি করেছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন অনন্য কমান্ডার, যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
প্রচার দলের সভাপতি মাহফুজ কবির মুক্তার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেনের সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরাফত আলী সপু, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল প্রমুখ।