হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিমা ভাঙচুরের দায় সরকার এড়াতে পারে না : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৮ পিএম, ৬ ফেব্রুয়ারী,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ০৬:১৩ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয়, ১২টি মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের দায় সরকার এড়াতে পারে না বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গীতে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের এই ঘটনা শুধু ন্যক্কারজনকই নয়, তা রহস্যজনক, পূর্ব পরিকল্পিত এবং কলঙ্কজনক। এই ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দির, প্রতিমা ভাঙচুর করে যারা সাম্প্রদায়িক ও সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায়, তারা নরকের কীট।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যেই মাঝে মধ্যে কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল এসব ঘটনা ঘটিয়েছে সম্প্রীতির বন্ধনকে বিনষ্ট করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চায়। বালিয়াডাঙ্গীতে এক রাতেই বিপুল সংখ্যক মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা কোনভাবেই স্বাভাবিক নয় এবং গভীর উদ্বেগের বিষয়। এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় সমগ্র এলাকায় হিন্দু, মুসলমানদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে, যা সামাজিক সম্প্রীতির অন্তরায়। যে সকল মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তার বেশিরভাগই সড়কের পাশে স্থাপিত ছিল। রাতে সাধারণত টহল পুলিশ থাকে। কিন্তু সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুপস্থিতিও রহস্যজনক। তাদের গাফিলতিতে দুর্বৃত্তরা অনায়াসে এত বিপুল সংখ্যক মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটাতে পেরেছে বলে সাধারণের ধারণা। সরকার এর দায় এড়াতে পারে না। দেশে চলমান দুঃশাসনে এমন এক অস্বাভাবিক ও নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে অপরাধ করলেও দলীয় বিবেচনায় প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। যার ফলে অপরাধীরা দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে নতুন নতুন অপরাধ করতেই থাকে। দেশ আজ যেন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। জনগণ আজ চরম নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক কর্মকান্ড বটেই, সামাজিক ও ধর্মীয় কাজও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সম্পন্ন করতে হচ্ছে। এর আগেও মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ অন্যান্য ধর্মীও উপাসনালয়েও হামলা হয়েছে। সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ, দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে পারে নাই। এর আগেও বালিয়াডাঙ্গীতে ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও তার পরিবারের সদস্য এবং তার অনুগত লোকজন তারা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখল নয় তাদের ওপর হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। তখনও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় যখনই হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি-সম্পদ, বাড়ি, ব্যবসা দখল, মন্দির, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, সেসব ঘটনার সাথে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। বালিয়ডাঙ্গীর ঘটনার সাথে কারা জড়িত, নিরপেক্ষ তদন্ত করে তা খুঁজে বের করতে হবে। তবে এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত নিরীহ মানুষকে যেন হয়রানি না করা হয়, সে বিষয়েও প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবিলম্বে বালিয়াডাঙ্গীর মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনার সাথে জড়িতদের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান। একই সাথে তিনি সরকারি খরচে প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ মন্দির পুনর্নির্মাণ করার দাবি জানান।