আওয়ামী লীগ মুখে বলে একটা, করে আরেকটা : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩২ পিএম, ২৯ জানুয়ারী,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ১২:০৪ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপি'র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ মুখে বলে একটা, কাজ করে আরেকটা। আওয়ামী লীগ এ দেশের সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটা করেছে। এ দেশের যে চরিত্র বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, সেটা তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।
আজ রবিবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে ১২ দলীয় জোটের লিয়াজো কমিটির সাথে বৈঠক করে বিএনপি।
ফখরুল বলেন, আমরা বৈঠকে বর্তমান দেশের রাজনীতির যে অবস্থা সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। এই আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য ভবিষ্যতে কী কর্মসূচি হওয়া উচিত আর কী ধরনের কর্মসূচি নেয়া যেতে পারে এবং কিভাবে জনগণকে আরো বেশি সম্পৃক্ত করা যেতে পারে সেই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছি।
তিনি বলেন, আমরা একমত হয়েছি এই ফ্যাসিস্ট, অনির্বাচিত সরকার পতনের লক্ষ্যে যে যুগপৎ আন্দোলন করছি। সামনের দিকে আরো জনগণকে বেশি সম্পৃক্ত করে আন্দোলনকে বেগবান করে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনা, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আমাদের লাখ লাখ নেতা-কর্মীরা মামলার আসামি- তা প্রত্যাহার ও অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবিতে একমত হয়েছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এটি ছিল বাংলাদেশের জন্য উপযোগী। যেদিন এই ব্যবস্থা বাতিল করা হলো সেদিন থেকেই দেশে অস্থিতিশীলতা, অনিশ্চয়তা ও সহিংসিতার দ্বার মুক্ত করা হয়েছিল। যার প্রমাণ ১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচন।
তিনি আরো বলেন, এদেশে মানুষ জানে না কিভাবে নির্বাচন হয়। তারা জানে না তাদের ভোট দিতে পারবে কি পারবে না। আওয়ামী লীগ অতীতে যে কাজগুলো করেছে। তাতে দেশে জনগণ নিশ্চিত এদের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু হয় না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ এমন কাজই করছে। তারা আমাদের সমাবেশের আগে তিন দিন আগে থেকেই স্ট্রাইক করে। পুলিশকে নামিয়ে দিয়ে রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে মোবাইল ফোন পর্যন্ত তারা চেক করতে থাকে। গত ঢাকা বিভাগের সমাবেশ এর আগে পুলিশ দিয়ে তারা ১৫ দিন আগে থেকেই বিশেষ অভিযান চালিয়েছে। এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের কৌশল। বিরোধীদলকে তারা কর্মসূচি করতে দেবে না, বাধা দেবে। ভিন্ন মত সহ্য করবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ তাদের কথা বলতেই থাকবে। সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, এই অগণতান্ত্রিক সরকারবিরোধী সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা আজকে আমাদের মূল লক্ষ্য। সমস্ত সরকারবিরোধী শক্তি আজ মনে মনে সংকল্পবদ্ধ। সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে এই স্বৈরাচার সরকারকে পতন ঘটানো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ১২ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী মো: আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগের যুগ্ম মহাসচিব মো: তফাজ্জল হোসেন।
বিএনপির নেতাদের মধ্যে লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আব্দুল আউয়াল মিন্টু।