একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার : নজরুল ইসলাম খান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩৯ পিএম, ২০ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ০৬:১৮ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বর্তমান সরকারের আমলে ‘দরিদ্র শিশুর সংখ্যা সর্বকালের সবচেয়ে বেশি’ বলে মন্তব্য করেছেন নজরুল ইসলাম খান।
আজ শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সকালে পথশিশু ও নারীদের শীতবস্ত্র ও খাবার বিতরণের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ আজকে দেশ এক দারুন দুঃসময় অতিক্রম করছে। একটা অনির্বাচিত সরকার যাদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতার দায় নাই, যারা জনগণের স্বার্থ ক্রমাগত উপেক্ষা করে চলেছে তাদের হাতে এদেশ এবং এদেশের মানুষ নিঃস্ব হয়েছে।”
‘‘ একদিকে দেশে কয়েক হাজার নতুন কোটিপতি হয়েছে অন্যায়-অনাচার করে, লুট করে, শেয়ার মার্কেট ব্যাংক লুট করে। অন্যদিকে কয়েক কোটি মানুষ আরো দরিদ্র হয়েছে। যারা দরিদ্র হয় তাদের সন্তানরাও দরিদ্র হয়। যার ফলে আজ দরিদ্র শিশুর সংখ্যাও সবকালের সবচেয়ে বেশি।”
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘ যে দলের জেলা পর্যায়ের অঙ্গ দলের নেতা দুই হাজার কোটি টাকার অবৈধ মালিক হয় সেই দলের আরো যারা উধর্বতন নেতা আছেন, ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা আছেন তারা কি পরিমান সম্পদের মালিক এটা অনুমানের বিষয়। এভাবে দেশটা চলতে পারে না।”
‘‘ এই শিশুদের একটা সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখানোর জন্য, তারা যাতে এভাবে সাহায্যের জন্য কারো মুখাপেক্ষী না হয় সেজন্য যেমন সমাজ দরকার, যেমন রাষ্ট্র দরকার, সেরকম রাষ্ট্র কখনো গড়ে উঠবে না যদি না এখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যদি না এখানে জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা না হয়। আর সেজন্য আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করে চলেছি। এটা করতে গিয়ে আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী কারাগারে আবদ্ধ।”
জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার নামে প্রতিষ্ঠিত জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনে আয়োজনে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠান হয়। এতে শতাধিক পথ-শিশু, সুবিধা বঞ্চিত প্রতিবন্ধী শিশু এবং অসহায় নারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শীত বস্ত্র ও খাবার বিতরণ করেন নজরুল ইসলাম খান ও ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার।
নজরুল ইসলাম খান আরো বলেন, ‘‘ এদিকে মানুষ অসহায় ক্ষুধার্ত এবং আরো বেশি দুঃসময়ে ভয় পাচ্ছে। সেই সময় আমরা দেখছি সরকার এমন সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যেসব সিদ্ধান্ত জনগণের ভোগান্তি, জনগণের কষ্ট আরো বাড়াবে। যেখানে প্রতিদিনই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে সেখানে কিছুদিন আগে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি করা হলো ইতিহাসের সর্বোচ্চ পরিমান।”
‘‘ আবার গত দুইদিন আগে দেখলাম গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে, আপনার বাড়িতে যে গ্যাসের চুলা চালান তার দাম বাড়ানো হয় নাই। কিন্তু শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন শিল্প চালানোর জন্য যে জেনারেট চালায় তারা সেখানে যদি তাকে বেশি দাম দিয়ে চালাতে হয় তাহলে ওই শিল্পের উৎপাদিত যে পন্য সেটার বাড়বে না? সেই বাড়তি দাম কে দেবে? সেটা তো আমাদেরকেই দিতে হবে, এদেশের গরীব মানুষকেই দিতে হবে।”
তিনি বলেন, ‘‘আপনারা যারা অতি সামান্য উপার্জন করেন কিন্তু তা দিয়ে তো আপনাদের কিছু কিনতে হয়। যেটাই কিনতে যাবেন আগামী ক‘দিন পরে হয়তো দেখা যাবে এই গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর কারণে সেটা আরো বেড়ে গেছে। অর্থাত আমাদের কষ্ট আরো বাড়বে।”
‘‘ এই যে দায়িত্বহীনতা, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার অভাব ছাড়া আর কোনো কারণ নাই। তারা জনগণের ভালোমন্দ পরোয়াও করে না।”
দেশের বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার পতন ছাড়া কোনো বিকল্প নাই উল্লেখ করে আন্দোলনে সকল ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান নজরুল ইসলাম খান।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন যার প্রেসিডেন্ট তারেক রহমান এই প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৯ সালের ১৮ অক্টোবর প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর্ত মানবতার সেবায় কাজ করে আসছে।
অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও প্রকৌশলী মাহবুবু আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় ফাউন্ডেশনে আহমেদ শফিকুল হায়দার পারভেজ, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, অধ্যাপক লুতফুর রহমান, শামীমুর রহমান শামীম, একেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, বিপ্লব উজ জামান বিপ্লব প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।