ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফর নিয়ে মিথ্যাচার করেছে সরকার : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২১ পিএম, ১৮ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ০৮:০৭ পিএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রের সহকারি পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডোনাল্ড লু‘র বক্তব্য নিয়ে ‘সরকার মিথ্যাচার করেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন সহকারি পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সফর নিয়ে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘অর্থা এই সরকার মিডিয়াকে ব্যবহার করে, জোর করে যে একটা কথা বলতে চেয়েছেন জনগনের সামনে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন করেছেন, তারা এই নিষেধাজ্ঞা(র্যাবের ওপর) তুলে নেবেন এবং বাংলাদেশের সরকার তারা গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন করতে চায়-এই ধরনের একটা ধারণা তারা(সরকার) জনগনকে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু গতকাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাস থেকে যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে দ্যাটস ইজ এনাফ টু এক্সপ্লেইন দিস, দূতাবাসের সেই স্টেটমেন্টে সেটা ক্লিয়ার হয়ে গেছে। অতীতেও এই আওয়ামী লীগের গণবিরোধী সরকার তারা সবসময় মিথ্যাচার করে এসেছে। খুব দুঃখের লজ্জ্বার বিষয় এই মিথ্যাচারটা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারি পররাষ্ট্র মন্ত্রী তিনি ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এগুলো করা হয়েছে এবং সাথে সাথেই দূতাবাস তারা সেটার প্রতিবাদও জানিয়েছে।”
লু‘র সফর নিয়ে বিএনপির পর্যবেক্ষনে কি জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা বরাবরই যেটা মনে করি যে, বিদেশের শক্তির ওপর নির্ভর করে কখনো গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা যায় না। জনগনের শক্তির উপরেই এখানে গণতন্ত্রকে পুণঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বরাবর। এবারও আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে, জনগন এই সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে, জনগন সমস্ত বাধা-বিপত্তি-নির্যাতনকে উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণ ভাবে তাদের যে প্রতিবাদ যেটা তারা জানাচ্ছে, সেভাবে তারা সংগঠিত হচ্ছে। সুতরাং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলুন, চীন বা রাশিয়া বলুন বা ভারত বলুন তারা কী বললো না বললো …তারজন্যে নিশ্চয় নিসন্দেহে একটা জিয়ো-পলিটিক্যাল সিচুয়েশন থাকে। তবে আমরা যেটা লক্ষ্য করছি, গণতন্ত্রের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের যে কমিটমেন্ট সেই কমিটমেন্ট তারা খুব অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে প্রকাশ করেছেন। একটা সুষ্ঠু নির্বাচন, একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচন, একটি অংশীদারমূলক নির্বাচনের ব্যাপারেও তারা যে মন্তব্য সেই মন্তব্য তারা অবশ্যই করেছেন এবং কমিটমেন্ট করেছেন। তিনি(ডোলাল্প লু) একটা ইম্পোর্টেন্ট কথা বলেছেন যে, আমরা গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ যদি কোথাও হয় এই কথা আমরা বলব এবং আমরা আমাদের পরামর্শের কথাও জোর দিয়ে বলব। সেই পরামর্শ তারা দিয়ে গেছেন।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘কিভাবে মন্ত্রীরা বলেন, নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। একথা তিনি(লু) বলেননি। আমরা কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা আরোপে খুব আনন্দিত নই। আমরা বার বার বলেছি, এই নিষেধাজ্ঞা মানে হচ্ছে আমাদের জন্য লজ্জাজনক, বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক যে, একটা প্রতিষ্ঠানের উপরে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। এই নিষেধাজ্ঞা আসা উচিত সরকারের উপরে। সরকারের নির্দেশে এই সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটেছে, র্যাব অতীতে যেসব করেছে ডিজপিয়ারেন্স …। নিষেধাজ্ঞা তো এখন সরকারের ওপরে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দিলো কি দিলো না দিস ইজ নট এ মেটার। নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে জনগন এবং সামনে জনগন সেই নিষেধাজ্ঞাকে বাস্তবায়িত করবে।”
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘আমরা অবস্থান পরিস্কার। আমরা তো বলেই দিয়েছি যে, আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবো না। এটা খুব পরিস্কার কথা। আমরা বিশ্বাস করি, এই সরকারের অধীনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যিনি আছেন তার অধীনে এখানে কখনে্াই নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ গ্রহনযোগ্য হতে পারবে না।”
বিএনপির সঙ্গে ডোনাল্ড লু‘র কোনো সাক্ষাতের কর্মসূচি ছিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘না আমাদের সঙ্গে তার কোনো প্রোগ্রাম ছিলো না। এবার কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা কোনো বৈঠক করেনি।”