চট্টগ্রামে বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৩৪ পিএম, ১৬ জানুয়ারী,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ১২:১০ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ হামলা চালিয়েছে।এতে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। বিকেল তিনটায় নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির মিছিল পূর্বক সমাবেশ শুরু হয়।
এসময় নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও অঙ্গ সংগঠনের মিছিল আসার পথে কাজিরদেউরী মোড়ে খোয়াজা হোটেলের সামনে পুলিশ মিছিল কারীদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ মিছিল কারীদের উপর হামলা চালায়।মিছিল নিয়ে আশা নেতা কর্মীদের এলোপাথাড়ি হামলা ও গুলি ছুটতে থাকে। এ সময় নেতা কর্মীরা এদিক সেদিক ছুটা ছুটি করতে থাকে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে দলটির নেতাকর্মীরা। এসময় ক্ষোভে বিক্ষোভ কারী কিছু বহিরাগতরা মোটর বাইকে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ৫০ নেতা কর্মী ও পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে পুলিশ বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। আধ ঘণ্টার জন্য পুরো এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল চারটার দিকে পুলিশ কাজীর দেউড়ির আশপাশে অভিযান শুরু করে বিএনপির ৩০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশ বিনা কারণে হামলা করেছে। গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে। পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। বাড়তি ফোর্স আনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অভিযান চলমান রয়েছে। পুলিশ বলছে, বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত ২০জনকে আটক করা হয়েছে।
এ দিকে সংঘর্ষের আগে নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ের সামনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির বিক্ষোভ পূর্বক সমাবেশ বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা না করে যখন তখন গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে সরকার। আওয়ামী সিন্ডিকেটের মুনাফার জন্য সরকার এই বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। বারবার বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে দেশে গণতন্ত্রের নামে নির্বাচন আছে কিন্তু জনগণের ভোট দেয়ার অধিকার নেই। আদালত আছে কিন্তু বিচার নাই। ব্যাংক আছে কিন্তু টাকা নেই। শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার অধিকার নাই।
তিনি সরকারের এই অপকর্ম থেকে মুক্তি পেতে জণগণকে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
আজ সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে নগরীর কাজীর দেউড়ী নুর আহমদ সড়কে বিএনপির ১০ দফা দাবী বাস্তবায়ন এবং বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবীতে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ মিছিলোত্তর সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানী তেলের দরপতনের মধ্যেই দেশে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর কারন হলো লুঠপাট। দাম বাড়ানোর মাধ্যমে গ্রাহকদের পকেট থেকে বছরে হাজার কোটি টাকা লুটে নিবে আওয়ামী সিন্ডিকেট। বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ফলে দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে সাধারণ মানুষের। দেশীয় শিল্পকারখানা ধ্বংস করে কর্মসংস্থান বন্ধের মাধ্যমে দেশকে বড় ধরনের বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়ার চক্রান্ত চলছে। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি দেশের শিল্পের শক্তি ধ্বংস করে দিবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যসহ জীবনযাত্রার সকল খরচ বেড়ে যাবে। মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে।
এসময় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর বলেন, দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতিতে জনগণ আজকে দিশেহারা। সরকারের সিন্ডিকেটের কারণে এই অবস্থা হয়েছে। সরকার জনগণের কথা চিন্তা না করে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। জনগণ এখন এই সরকারের পাশে নেই। তিনি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবী জানান । অন্যথায় এই গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এস এম সাইফুল আলমের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, অ্যাড. আবদুস সাত্তার, নাজিমুর রহমান, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য হারুন জামান, হাজী মো. আলী, মাহবুব আলম, নিয়াজ মো. খান, এস এম আবুল ফয়েজ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, মন্জুর আলম মন্জু, আনোয়ার হোসেন লিপু, মন্জুর আলম চৌধুরী মন্জু, মো. কামরুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, মহিলাদলের মনোয়ারা বেগম মনি, শ্রমিকদলের তাহের আহম্মেদ, কৃষকদলের আহবায়ক মো. আলমগীর, সদস্য সচিব কামাল পাশা নিজামী, তাঁতীদলের আহবায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মুরাদ, ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন প্রমূখ।