আন্দোলনের মালিকানা বাংলাদেশের মানুষের হাতে : আমির খসরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৫ পিএম, ৬ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ০৫:০৮ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, হামলা, মামলা ও নেতাদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আন্দোলনের গতিরোধ করা যাবে না। দেশের মানুষের হাতে রাষ্ট্রের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এই আন্দোলন। এই আন্দোলনের মালিকানা বাংলাদেশের মানুষের হাতে।
আজ শুক্রবার (৬ জানুয়ারী) বিকেল ৩ টায় নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের মাঠে আগামী ১১ জানুয়ারী বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত গণঅবস্থান কর্মসূচী সফল করার লক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির উদ্যোগে এক প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ চেয়েছিল বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বিশৃঙ্খলা করে দমিয়ে রাখতে। বিএনপি সেটি পরাহিত করেছে। রাজনৈতিকভাবে তাদের পরাজিত করেছি আমরা। ১১ তারিখে একইভাবে শক্ত বার্তা যাবে। চট্টগ্রাম থেকে বার্তা যাবে, এই সরকার বিদায় নেওয়ার জন্য। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি সেই ধারায় চলতে থাকবে। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি করে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে চাই। তারা যদিও সহিংসতার দিকে নিয়ে যেতে চায়। কেউ জনগণের সামনে দাঁড়াতে পারবে না। কোনো শক্তি দাঁড়াতে পারবে না, আমরা সেই শক্তি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেকটি অনুষ্ঠান আগের অনুষ্ঠান থেকে বড় হয়। প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে সেভাবে। ঢাকায় ১০ তারিখের জনসভায় যে পরিমাণ মানুষ হয়েছে। পরের ৩০ তারিখে এর চেয়ে বেশি মানুষ হয়েছে।কারণ দুটিতেই আমি ছিলাম। একটা ছিলো ৫ কিলোমিটার জুড়ে মানুষ। মতিঝিল থেকে মগবাজার পর্যন্ত সব মানুষ হয়েছে। গণঅবস্থান কর্মসূচিতে আমরা দেখিয়ে দিতে চায়।
আমির খসরু বলেন, কর্মসূচিকে অনেকে হালকা অনুষ্ঠান হিসেবে দেখে। এবারের অবস্থান কর্মসূচি ব্যতিক্রম করতে চায়। কারণ এটি শেখ হাসিনা পতনের কর্মসূচি। যদিও কর্মসূচিটি হবে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে শক্ত বার্তা দিতে চাই।পলোগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগ সভা কী হয়েছে সবাই জানে। ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণকে নিয়ে কিছু করতে পারে না। জনগণকে প্রতিহত করতে মাস্তান দিয়ে চেষ্ঠা করছে। কিন্তু তারা পারবে না, পরাজিত হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, আমার দল কর্মী নির্ভর দল। অপেক্ষা করছি ওবায়দুল কাদের কখন লুঙ্গি ফেলে চলে যায়। আর দুয়েকটা মিটিংয়ের পর তাদেরকে চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে। তারা আসলে চট্টগ্রামে অশান্তি সৃষ্টি হবে, সেজন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করবো। আমাদের নেতাকর্মীরা অত্যন্ত দায়িত্বশীল।
সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় দলনেতা ও ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, আমরা যে আন্দোলনে নেমেছি, এরমধ্যে অনেকে শাহাদাত বরণ করেছেন। রক্তের এই প্রতিশোধ আমরা নেব। আগামী ১১ তারিখ সফল করার মধ্যে দিয়ে একটা বার্তা দিতে চাই, খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে এই সরকার নির্বাচন করতে পারবে না। আন্দোলন আমরা অনেকদিন করে আসছি। এবারে চূড়ান্ত আন্দোলন করে সরকার পতন করা হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় দলনেতা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীমের পরিচালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক।
বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, উপজাতি সম্পাদক ম্যা মা চিং, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, সহ গ্রাম সরকার সম্পাদক বেলাল আহমদ, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য উদয় কুসুম বড়ুয়া, মশিউর রহমান বিপ্লব, আবু তালেব, রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দিপন তালুকদার, নোয়াখালী জেলা বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুর রহমান, ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, বান্দরবন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার, রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম এ আজিজ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম এ হালিম, যুগ্ম আহবায়ক শফিকুর রহমান স্বপন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইসকান্দর মীর্জা, আবদুল মান্নান, নুরুল আমিন, আলহাজ্ব সালাউদ্দিন, নূর মোহাম্মদ, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, কাজী সালাউদ্দিন,মোহাং জাকের হোসেন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের জেলা ও মহানগরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ।
বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এসএম ফজলুল হক বলেন, এই সরকারের হাত থেকে দেশ ও জনগণকে রক্ষার জন্য একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দশ দফা ঘোষণা করেছি। ১০ দফার ভিত্তিতে আমাদের প্রথমে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করতে হবে। এই সরকারের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করতে হবে। হামলা-মামলা ও গ্রেফতার করেও কিন্তু সরকার আমাদের গণসমাবেশ ঠেকাতে পারেনি। গত ২০১৪ ও ২০১৮ সালে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়নি। বর্তমান সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় রয়েছে। ইতোমধ্যে জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেছে যে, দিনের ভোট রাতেই ডাকাতি হয়েছে।
বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবে রহমান শামীম বলেন, সরকার বলছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জাদুঘরে রেখেছে। এটা কি মগের মুল্লুক? সময় থাকতে যদি পদত্যাগ না করেন, তাহলে যে গণআন্দোলন তৈরি হবে, সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ দেশে গণমানুষের রাজত্ব তৈরি হবে।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন,সরকার দেশকে তছনছ করে দিয়েছে। ছাত্রদের আশার আলো ফোটাতে হবে।
তিনি বলেন, ছাত্ররা জেগে উঠলে এই সরকারের পতন নিশ্চিত। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- ভোট চোরদের মানুষ পছন্দ করে না, দুর্নীতিবাজদের মানুষ পছন্দ করে না।