আওয়ামী লীগ কখনো সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করে না : আলাল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১৫ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:২৯ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
যশোরে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. সৈয়দ মোয়জ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনো সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সংস্কৃতি তাদের মধ্যে নেই। যে কারণে তারা জনগণের দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করে। আজকে তারা নিরীহ নিরপরাধ জনগণকে হত্যা করছে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। আবার জনগণের অধিকার নিয়ে কথা বলছে। তাদের অত্যাচারে জনগণ আজ অতিষ্ঠ, তারা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু লাঠি দিয়ে আঘাত করে কোনো দিন জনগণের মন জয় করা যায় না। তারা জনগণের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়ে তাদের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে।
আজ শনিবার বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা বাস্তবায়ন, বিএনপি চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ দলের কারাবন্দি সকল নেতাকর্মীর মুক্তির দাবিতে জেলা বিএনপি আয়োজিত গণমিছিল-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। দলীয় কার্যালয়ে সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেয়। পুলিশের সেই অবস্থানের মধ্য দিয়ে জেলা বিএনপির অধীনস্থ সকল ইউনিটসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে সমাবেশে যোগ দেন।
সমাবেশে অ্যাড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল আরও বলেন, বিএনপি একটি সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার লড়াই করে যাচ্ছে। বিএনপির এমন কাজে আওয়ামী লীগ সম্মান না দেখিয়ে একের পর এক তাদের পেটুয়া বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে হামলা, মামলা করে যাচ্ছে। সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের গায়েবি মামলা দিয়ে ও হামলা চালিয়ে জর্জরিত করে ফেলছে। অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে যারা এমন ন্যক্কারজনক কর্মকান্ড করছে জনগণ তাদের চিহ্নিত করছে। একদিন জনগণই এসব অপরাধীর বিচার করবে।
দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকে দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, যে পরিমাণ টাকা দেশ থেকে পাচার হয়েছে তা দিয়ে অন্ততপক্ষে ১০টি পদ্মা সেতু করা যেত। আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে দাওয়াত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করছেন, মিথ্যা মামলায় তাদের কারাগারে প্রেরণ করছেন। তাদের কার্যালয় ভেঙে তছনছ করছেন, লুটপাট করছেন আবার দাওয়াত দিচ্ছেন। এই নাটকের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। পরাজয়ের ইতিহাস তাঁর জীবনে নেই।
তিনি যতবার নির্বাচন করেছেন, সর্বোচ্চ ভোটে জয়লাভ করেছেন। আজকে যিনি প্রধানমন্ত্রী তার জীবনে এমন ইতিহাস নেই। তিনি বলেন, প্রশাসনের সাথে আমাদের কোনো বিরোধ কিংবা লড়াই নেই। আমদের লড়াই হচ্ছে সরকারের অন্যায়, অবিচার, দমন- পীড়নের বিরুদ্ধে। কোনো বাধা দিয়ে আমাদের রুদ্ধ করা যাবে না। বিজয় আমাদের নিশ্চিত। যেটি হবে জনতার বিজয়।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, জনগণ গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাদের আইনের শাসন ও মানবাধিকার ভূলুন্ঠিত। ভিন্নমতের কারণে মেধা ও যোগ্য থাকা সত্ত্বেও তাদের সন্তানরা চাকরি পায় না। যে কারণে বিএনপির কর্মসূেিচত জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়ছে। জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়ার কারণে সরকার ভয় পেয়ে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে একের পর এক তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে প্রশাসন কিংবা অবৈধ শক্তিতে বিশ্বাস করে না। যে কারণে তারা একের পর এক সহকর্মীকে হারিয়েও সর্বোচ্চ ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শন এবং শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করছে। সংবিধান জনগণের কথা বলার অধিকার দিয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকারের সমুন্নত রাখার পক্ষে কথা বলে। জনগণের অধিকার আদায়ে শান্তিশৃঙ্খলার সাথে রাজপথে কর্মসূচি পালনের অধিকার দিয়েছে। যারা জনগণের সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক অধিকারকে বাধা দিতে চায় তারা বাংলাদেশের সংবিধানকে বিশ্বাস করে না। সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে তাদের বিচার করা হবে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. মুছা, বিএনপির যশোর নগর শাখার সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধূরী মুল্লুক চাঁদ, শার্শা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক খায়রুজ্জামান মধু, বাঘারপাড়া উপজেলা শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক মশিয়ূর রহমান, ঝিকরগাছা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মোর্ত্তজা এলাহী টিপু, চৌগাছা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম, কেশবপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মশিয়ার রহমান, নওয়াপাড়া পৌর শাখার সভাপতি আবু নঈম, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রাশিদা রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হায়দার রানা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু। সমাবেশ শেষে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রধান অতিথির নেতৃত্বে গণমিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।