সরকার ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে কূটনীতিকদেরও চাপে রাখতে চাইছে : খসরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৮ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৪০ পিএম, ২ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার কূটনীতিকদেরও চাপে রাখতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আজ বৃহস্পতিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। গুম হওয়া পরিবারের সদস্যদের সংগঠন-মায়ের ডাক গত বুধবার একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, সেখানে গুম হওয়া পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলতে রাজধানীর শাহীনবাগে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় গিয়েছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। সেখানে আরেকটি সংগঠন মায়ের কান্না বাসার ফটকের বাইরে হট্টগোল করছিল। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় বাসার বাইরে একদল লোক তাকে ঘিরে ধরার চেষ্টা করেন। এই অবস্থায় তিনি নিরাপত্তা আশঙ্কায় সেখান থেকে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন পিটার হাস।
এ প্রসঙ্গে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকরা জানতে চাইলে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটা গভীর উদ্বেগের বিষয়। একজন কূটনীতিক একটি সংগঠনের অনুষ্ঠানে একটি জায়গায় গেছেন, সেখানে আরেকটি সংগঠনের যাওয়াই তো আইনবিরোধী।
তিনি আরো বলেন, এর আগে সরকারের মদদে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের নৈশভোজে আক্রমণ করেছে, ভাঙচুর করেছে। গুলশানের একটি হোটেলে কূটনীতিকদের সাথে নিয়ে বিএনপি একটি মানবাধিকার অনুষ্ঠান করেছিল। এই একই লোক (মায়ের কান্না) হোটেলের বাইরে সরকারের মদদে অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছিল। এটা তো আওয়ামী লীগের চরিত্রে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, একদিকে যেমন বাংলাদেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, এখন দেখা যাচ্ছে কূটনীতিকদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এই দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ভালো, সুসম্পর্ক রয়েছে। তাদের সাথে আমাদের বাণিজ্য আছে, তাদের সাথে বহুবিদ সম্পর্ক রয়েছে। তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের মানুষের নিরাপত্তাহীনতা, বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তাহীনতায় দেশের বাইরে বাংলাদেশের কী প্রতিফলন ঘটছে?
বিএনপির কূটনীতিক উইংয়ের প্রধান আমীর খসরু বলেন, সরকারকে না বলে কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়া যাবে না এটা কোথায় আছে? দুই দিন ধরে সেখানে পুলিশ ঘোরাঘুরি করছে, অ্যাম্বাসেডরের সাথে তো পুলিশ আছে, সরকার তো অবগত আছে। সরকারকে বললে নিরাপত্তা পাবেন, না বললে নিরাপত্তা পাবেন না-এটা কী একটা দেশের নিরাপত্তার চরিত্র প্রতিফলিত হচ্ছে না? এর আগে মার্শা বার্নিকাটের গাড়ি বহরে যে হামলা হয়েছে, সেই ঘটনার কোনো শাস্তি হয়নি বলে অভিযোগ করেন আমির খসরু।
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, মায়ের কান্না তারা তাদের অনুষ্ঠান করতে পারে। অন্যের অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করা আইনবিরোধী। সরকারের তো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল। তা তো আমরা দেখিনি। এই ধারা চলতে থাকলে দেশে যদি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তাহলে সেই দেশের চরিত্র কী। এটা পরিষ্কার যেভাবে সরকারের মদদে, সরকারের সহযোগিতায় ঘটনা ঘটছে-এটা সরকারের মন্ত্রীদের কথাবার্তায় পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। এই ধরনের ঘটনাকে তারা পরোক্ষভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তাদের মদদ ব্যতীত এই ধরনের কর্মকান্ড হওয়া সম্ভব নয়। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার। মার্শা বার্র্নিকাটের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ীদের কোনো শাস্তি হয়নি, তাতেই সরকারের উদ্দেশ্য বোঝা যায়। তারা চাচ্ছে এই ধরনের একটা ঘটনা ঘটুক।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের মানুষকে যেভাবে ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে চেপে রাখতে চাচ্ছে, কূটনীতিকদেরও এখন তারা ভয়ভীতি সৃষ্টি করে একটি ভিন্ন পরিবেশ সৃষ্টি করে অবৈধ দখলদার সরকার তাদের অব্যাহতভাবে ক্ষমতায় থাকার প্রক্রিয়া চালু করছে।