বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে হলেও গণসমাবেশ সফল করা হবে : মিনু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৪ পিএম, ২৪ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ১১:৩৬ পিএম, ১০ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিভাগে ব্যাপকভাবে গায়েবী মামলা ও নেতাকর্মীদের আটক শুরু হয়ে গেছে। রাজশাহী মহানগর, সকল জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড সমুহের বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, পুলিশি হয়রানী, হামলা ও গ্রেফতার এর প্রতিবাদে আজ বৃহস্পাতিবার বেলা ১১টায় নগরীর সাহেব বাজার এলাকার একটি চাইনিজ রেস্টুরেটের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ সমন্বয় কমিটির আয়োজনে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, রাসিক সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, দেশের ছয়টি বিভাগীয় শহরের ইতোমধ্যে গণমসমাবেশ শেষ হয়েছে। সে সব সমাবেশে সরকারের পক্ষ থেকে নজিরবিহিন বাধা প্রদান, স্থলের ও জলের সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ করে দেয়ার পরও বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের রুখতে পারেনি। সকল বাঁধা অতিক্রম করে জনগণ গণসমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহীর গণসমাবেশ নিয়েও গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। অন্যান্য বিভাগীয় শহরে এ লক্ষে কোন প্রকার মামলা হয়নি। সেখানে ব্যাপক পরিমানে জনসমাবেশ হয়েছিলো। সকল বিভাগীয় শহরকে ছাড়িয়ে রাজশাহীর গণসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত করা হবে। এরজন্য তাদের যদি বুক থেকে তাজা রক্ত পিচঢালা পথে ঢেলে দিতে হয়, তাতে নেতাকর্মীরা রাজি আছেন। সকল বাধা ও চক্ষুরাঙ্গানীকে উপেক্ষা করে পুরো শহর মানুষে মানুষের ভরে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে মিনু আরো বলেন, ইতিমধ্যে দেশের ৬টি বিভাগে বিএনপি'র বিভাগীয় গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিবহণ ধর্মঘট, বিভিন্ন স্থানে সমাবেশে আগত নেতা কর্মী ও জনগণের উপর আক্রমন উপেক্ষা করে প্রতিটি বিভাগে বিশাল জন সমাবেশ দেখে সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে করার জন্য যখন তাঁরা এই বিভাগের ৮টি জেলা ও ১টি মহানগরীর প্রায় ৬৭টি উপজেলা ও থানায় প্রাথমিকভাবে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন, তখনি রাজশাহী বিভাগে সরকার নতুন মাত্রার অত্যাচার ও নির্যাতনের ফর্মূলা নিয়ে হাজির হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রতিটি উপজেলা ও থানায় কর্মীদের বাড়ী বাড়ী তল্লাশী করা হচ্ছে। গায়েবী মামলা দেয়া হচ্ছে। বিভাগে ইতোমধ্যে শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের লোকজন দ্বারা কোথাও অকারনে বোমা ফাটানো হচ্ছে, বোমা রেখে দেওয়া হচ্ছে এবং অতঃপর সাজানো মামলা দেওয়া হচ্ছে। লোকজন জানতেও পারছে না যে কি কারনে মামলা হয়েছে।
বুধবার চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় বিভাগীয় সমবেশের প্রস্তুতি মূলক সমন্বয় সভায় পুলিশ অতর্কিত হামলা করে বিনা কারনে ১৫ জন নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তিনি বলেন, বিএনপির কোন নিষিদ্ধ সংগঠন নয় যে গোপন বৈঠক করবে। এ ছাড়া গতকাল সাবেক এমপি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নাদিম মোস্তফাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চট্টগ্রাম, রংপুর, খুলনা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, সিলেট বিভাগীয় সমাবেশে কোথাও বিএপির কর্মীরা কোন প্রকার গন্ডোরোগল করেনি।বর্তমান দূর্নীতিবাজ, ব্যর্থ সরকারের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনে প্রতিটি এলাকার মানুষ অকুণ্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করেছে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, ৬টি বিভাগের প্রতিটি সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট সরকারী দল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সরকার দলীয় পেটুয়া বাহিনীর হামলা ও আক্রমনের পর এবার রাজশাহী বিভাগীয় গণ সমাবেশের আগে প্রশাসন ও পুলিশের অত্যচার নির্যতন ও ত্রাস এমন এক ভয়াবহ আকার ধারন করেছে যে, উপজেলা পর্যয়ে বিএপির কোন নেতাকর্মী এলাকায় থাকতে পারছেন না। মানুষের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ পর্যন্ত করতে পারছেনা। প্রশাসন ও পুলিশের এরূপ বেআইনি নির্যাতন ও অত্যচার থেকে বিরত থাকার জন্য সংবাদ সম্মেলন থেকে আহবান জানান।
তিনি বলেন, পতনোন্মুখ সরকারের বেআইনি আদেশ পালনে প্রশাসন ও পুলিশ বাধ্য নন। পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অতি উৎসাহি ভুমিকার কারনে গণদুশমনে পরিনত হবেন না। দেশের চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে আইন সঙ্গত ও সংবিধান সম্মত দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। শেষে ধন্যবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা, সাবেক এমপি শাহজাহান মিয়া, বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠািনক সম্পাদক এডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিএনপি জাগীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি'র সাবেক সভাপতি ও রাসিক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শফিকুল হক মিলন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা ও সদস্য সচিব আলহাজ্ব মামুনুর রশিদ মামুন।
উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, ওয়ালিউল হক রানা, বজলুল হক মন্টু, জেলা বিএনপি’র সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন, তাজমুল তান টুটুল, মহানগর বিএনপি’র সদস্য মাহফুজুল হাসনাইন হিকোল মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন, কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিমটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা কৃষক দলের সাবেক আহ্বায়ক আল-আমিন সরকার টিটু, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক শফিকুল আলম সমাপ্ত ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান জনিসহ বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।