বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাদিম মোস্তফা গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪৫ পিএম, ২২ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৫৩ এএম, ১১ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
রাজশাহী-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাদিম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল তাঁকে নগরের পাঠানপাড়া এলাকার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইফতে খায়ের আলম বলেন, নাদিম মোস্তফার বিরুদ্ধে পুঠিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা ছিল। সেই মামলার পরোয়ানা এসেছিল নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায়। বোয়ালিয়া থানার দেওয়া রিকুইজিশনের পর বিএনপির এই নেতাকে গ্রেপ্তার করেন তাঁরা।
নাদিম মোস্তফার ব্যক্তিগত সহকারী মোস্তাফিজুর রহমান সুমন বলেন, জেলা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আজ বেলা ১১টার দিকে নাদিম মোস্তফাকে তুলে নেওয়া হয়। তাঁরা সাদাপোশাকে ছিলেন। তাঁকে তুলে নেওয়ার সময় বলা হয়, তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। তাঁকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেওয়া হচ্ছে।
আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। এ উপলক্ষে বিএনপির প্রস্তুতি চলছে। তবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে রাজশাহীর রাজনীতিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। থানায় থানায় ককটেল বিস্ফোরণ ও উদ্ধারের ঘটনায় বিএনপির কয়েক শ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
নাদিম মোস্তফার মামলার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি পুঠিয়ার বানেশ্বরের মজির উদ্দীন হত্যা মামলায় গত ১১ জানুয়ারি নাদিম মোস্তফার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে তিনি গত মার্চে উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান। উচ্চ আদালত নাদিম মোস্তফাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলেও তিনি নিম্ন আদালতে হাজির হননি। দীর্ঘদিন নির্বাচনী এলাকায় না থাকলেও আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে এক সপ্তাহ ধরে তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকা দুর্গাপুরের বিভিন্ন কর্মিসভায় যোগ দেন।
এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, "অবৈধ আওয়ামী সরকার সারাদেশকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছে। নিপীড়ণ-নির্যাতনের নীতি অবলম্বন করে বিরোধী ও মত নিশ্চিহ্ন করার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে তারা। বিএনপি'র কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী চলমান বিভাগীয় গণসমাবেশগুলোতে বিপুল জনসমাগম দেখে সরকার দিশেহারা হয়ে পড়েছে বলেই পাইকারী হারে মামলা ও গ্রেফতারের হিড়িক শুরু করেছে।
আওয়ামী সরকার সর্বশক্তি দিয়ে বিএনপি-কে দমন করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা জুলুম-নির্যাতনের অংশ হিসেবে বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যাসহ শারীরিকভাবে জখম করতেও দ্বিধা করছে না। সরকার দেশব্যাপী ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করতে উদ্যোগী হয়েছে এজন্য যে, মানুষের প্রতিবাদী স্রোতে যেন কেঁপে ওঠা রাজসিংহাসন উল্টে না যায়। আমরা মনে করি-আগামী ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রাজশাহীর গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মী ও জনগণের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করতেই নাদিম মোস্তফাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি-ভোটারবিহীন সরকারের এটি অপপ্রয়াস, রাজশাহীর গণসমাবেশ থেকে বর্তমান শাসকগোষ্ঠীকে আবারো বুঝিয়ে দেয়া হবে যে, জনগণ তাদেরকে আর এক মূহুর্তের জন্য রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায় না। আমি দেশের খেটে খাওয়া মানুষসহ দলমত নির্বিশেষে সকলকে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন-সংগ্রামে শামিল হওয়ার আহবান জানাচ্ছি।"
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে নাদিম মোস্তফার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং তার নিঃশর্ত মু্িক্তর জোর দাবি জানান।"