মানুষ শুধু খাবার সংকটে নয়, নিরাপত্তা সংকটেও আছে : দুদু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৬ পিএম, ২১ নভেম্বর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৩৮ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আপনারা ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে যত তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করবেন তত তাড়াতাড়ি দেশের মানুষ মুক্তি পাবে। দেশের মানুষ শুধু যে খাবার সংকটে আছে তা নয়, নিরাপত্তা সংকটেও আছেন। বাইরে বের হলে ঘরে ফিরতে পারবেন কি না এর কোনো নিশ্চয়তা নেই।
গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘অর্পণ বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
দুদু বলেন, আমার কাছে মনে হয় না এই সরকারের সময় খুব বেশিদিন আছে। যদি ভালোয় ভালোয় সম্মানের সঙ্গে এই সরকার চলে যায়, তাহলে ভালো। তবে তাদের একটাই পথ আছে পদত্যাগ করা, পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া। নির্বাচন কমিশন পুনরায় গঠন করা। আগে থেকেই যদি এই কাজটা করে তাহলে সম্মানজনক প্রস্থান হবে। আমরা কাউকে অসম্মান করতে চাই না। কিন্তু সরকার সম্মানিতভাবে না অসম্মানিতভাবে যাবে এটা তাদের চিন্তাভাবনা করা উচিত।
তিনি বলেন, এই সরকারকে যেতেই হবে। এটা মুক্তিযুদ্ধের দেশ, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। ৩০ লাখ শহীদের দেশ। এখানে প্রতারণা করে, গুন্ডামি করে ক্ষমতায় থাকা যাবে- এটা ভাবা ঠিক হবে না। এই বিএনপি নেতা বলেন, পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই যেখানে বিএনপির লোক নেই। সব জায়গায়ই তারেক রহমানের জন্মদিন সাধারণভাবে পালন করা হচ্ছে। এটা তারেক রহমানের নির্দেশ। এর কারণ হলো দেশের মানুষ ভালো নেই। গত ৫০-৫২ বছরের মধ্যে এত খারাপ অবস্থায় কখনো দেশের মানুষ ছিল না। একমাত্র দুর্নীতিগ্রস্ত, সরকারের বিশেষ সুবিধাভোগী ছাড়া ৯৯ শতাংশ মানুষ কষ্টে আছে। অর্থ সংকটে, নিরাপত্তা সংকটে, শিক্ষা সংকটে আছে মানুষ।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ শুধু যে খাবার সংকটে আছেন তা নয়, নিরাপত্তা সংকটেও আছেন। বাইরে বের হলে ঘরে ফিরতে পারবেন কি না এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। শিক্ষা সংকটের কথা বলেছি এই কারণে যে, বাবা-মারা তাদের সন্তানদের যেভাবে শিক্ষিত করে তুলতে চান সেই পরিস্থিতি এখন নেই। দেশে কাগজের সংকট, শিক্ষা উপকরণের সংকট, কৃষি উপকরণের সংকট, উৎপাদিত দ্রব্যমূলক সংকট, শ্রমিকদের মিল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাদের বেতন দিচ্ছে না ছাঁটাই করছে। যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাদের অবস্থাও ভালো না। এমন একটা পরিস্থিতিতে তারেক রহমানের জন্মদিন পালন করা ঠিক হবে না বলেই তিনি জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করতে নিষেধ করেছেন। যার জনপ্রিয়তা বেগম খালেদা জিয়ার মতই আকাশচুম্বী। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হতেন বা তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হতেন। এটাই বাস্তবতা। আর আওয়ামী লীগের ভাগ্যে ১০টি সিট জুটতো, এটা ভাবাও কঠিন।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, শেখ হাসিনা যদি সরকারের আসনে না থাকতেন, পার্লামেন্ট যদি ভেঙে দেয়া হতো, আর এই সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন না থাকে, তাহলে এদের পরিণতি কী হবে বলা মুশকিল। কারণ তারা নিজেরাই বলে তারা যদি ক্ষমতায় না থাকতে পারে তাহলে তারা বাংলাদেশে থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, তিনিও টের পেয়েছেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে আওয়ামী লীগের আশ্রিত তথাকথিত বুদ্ধিজীবিরাও এদেশে থাকতে পারবেন না। কেন থাকতে পারবেন না? বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন ছিলেন, আওয়ামী লীগ ছিল। এখন এ প্রশ্ন উঠছে কেন? এসব তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা এত অপকর্ম করেছেন যে, তারা বুঝতে পেরেছেন তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। আর পায়ের নিচে মাটি না থাকলে থাকবেন কেমনে, নিচে নেমে যাবেন তো, এটাই বাস্তবতা। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি বিথিকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ১নং সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার প্রমুখ।