আওয়ামী লীগ গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১২ পিএম, ২০ নভেম্বর,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০২:০৭ পিএম, ১১ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
‘আওয়ামী লীগ গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ রবিবার (২০ নভেম্বর) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় দেশের অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘আজকে খুব খারাপ সময়ের মধ্যে যাচ্ছি আমরা। এই খারাপ সময়ের মধ্যে দেখুন কেউ কথাও বলতে পারে না। পেশাজীবী যারা আছেন, বুদ্ধিজীবী যারা আছেন আপনাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই যে দেখেন কতটা দূর্বল, কতটা মানুষের ওপরে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে সরকার যে, এখন তারা পিনাকী ভট্টচার্য্, মুশফিকুল ফজল আনসারী… প্রবাসী যারা আছেন তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করছে। প্রকৃতপক্ষে এই সরকারের পায়ের নিচে এখন মাটি নেই, প্রকৃত পক্ষে এই সম্পূর্ণভাবে একটা গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। এখন আর সেটা মানুষের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই। আমার মনে হয় যে, আওয়ামী লীগের মতো একটা রাজনৈতিক দল যারা অতীতে সংগ্রাম করেছে, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে, মুক্তিযুদ্ধের জন্য সংগ্রাম করেছে সেই দলটি পুরোপুরিভাবে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘তারা (আওয়ামী লীগ) একেবারে মানুষের ভাষাগুলো বুঝতে পারছে না, তারা মানুষের চোখের ভাষা বুঝতে পারছে না। এমন ভাষায় কথা বলে যে, এটা একটা রাজত্ব, কিংডম, মনার্ক। বাংলাদেশ তো মনার্কি না। এই দেশ একটা প্রজাতন্ত্র। এদেশ আমরা যুদ্ধ করে, লড়াই করে বুকের রক্ত দিয়ে অর্জন করেছি। এখানে প্রত্যেকটি মানুষের নাগরিকের অধিকার আছে রাজনীতি করার, সেই সুবাদে জনগন রাষ্ট্রের মালিক। সেই জায়গাটা তারা(আওয়ামী লীগ সরকার) দখল নিতে চায়। দুইটা জিনিস তাদের বডি কেমিস্ট্রিতে আছে একটা হচ্ছে সন্ত্রাসি, সব কিছু ভয় দেখিয়ে মেরে-কেটে নিয়ে যেতে চায়, আরেকটা হচ্ছে লুট, লুটেরা সব চুরি করতে চায়।”
সারাদেশে সর্বব্যাপী ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের এখানে চিকিতসকরা আছেন উনারা ভালো জানেন স্বাস্থ্য খাতের কি অবস্থা? স্বাস্থ্য খাত ভেঙে গেছে। হাসপাতাল তো নেই। কয়েকদিন আগে ডেইলি স্টারে বড় করে বেরিয়েছিলো যে, হাসপাতালে গেলে এখন মরার কথা চিন্তা করতে হয়। কিছু মনে করবেন না-দ্যাটস দ্য ট্রুথ। আবার বড় বড় গলায় বলে যে, আমরা করোনা জয় করেছি। করোনা এমন জয় করেছে যে, হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এখানে সাবেক উপ-উপাচার্য স্যার আছেন। উনারা ভালো জানেন শিক্ষাখাতের কি অবস্থা? কয়েকটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ছাড়া আর কোথাও শিক্ষা আছে বলে তো আমার কাছে মনে হয় না।”
‘তারেকের নেতৃত্বেই আমরা যাচ্ছি’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘এইটুকু আমি বলতে চাই, আপনারা ধরয্য রাখবেন, সাহস রাখবেন, সঠিক পথে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।”আপনাদের সকলের মনে রাখতে হবে যে, আমরা এরশাদের স্বৈরাচারের সাথে লড়াই করছি না। আমরা আওয়ামী ফ্যাবিবাদের সঙ্গে লড়াই করছি। সুতরাং প্রতিটি মুহুর্ত, প্রতিটি পদক্ষেপ আমাদের খুব হিসাব করে নিতে হবে। তারেক সাহেবের নেতৃত্বে যৌথভাবে সামগ্রিকভাবে ইনশাল্লাহ আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না তারেক রহমান সাহেবের মতের বিরুদ্ধে, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না যৌথ নেতৃত্বে বাইরে। আমি দলের মহাসচিব যা কিছুই আমরা করি আমরা পুরোপুরিভাবে সব দায়িত্ব নিয়ে করি এবং সেটা তারেক সাহেবের নেতৃত্বের নির্দেশে করি।”
পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীদের দেশের জনগনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।
ব্রাক্ষনবাড়ীয়ার বাঞ্ছারামপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্র দলের নেতা নয়ন মিয়ার হত্যাকান্ডের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এজন্য সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন বিএনপি মহাসচিব।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলের জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা হয়। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের চিকিতসকরা উপস্থিত ছিলেন।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যাান আবদুল্লাহ আল নোমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশর(ইউট্যাব) সভাপতি অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।