তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২১ পিএম, ১৯ নভেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:২০ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের অগ্রনায়ক, মানুষের অধিকার আদায় ও মুক্তি সংগ্রামের নেতা, কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন, বাংলাদেশের তৃণমূল রাজনীতির ধারক বাহক ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রাণপুরুষ, বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্যাতিত রাজনৈতিক নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন আজ।
১৯৬৫ সালের এইদিনে মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্র, ইসলামী মূল্যবোধ ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবর্তক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সফল রাষ্ট্রনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ও তিনবারের সফল সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ঘর আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন তাঁদের জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন এমন এক সময়ে এলো যখন দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রের লেবাসে দেশে স্বৈরতন্ত্র কায়েম রয়েছে। উন্নয়নের গণতন্ত্রের নামে লুটপাটের মহোৎসবে শূন্য হয়ে পড়েছে রাষ্ট্রীয় ভান্ডার। আওয়ামী লীগের লুটপাটের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে অর্থনীতি। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এখন দুর্ভিক্ষের প্রচারণা চালাচ্ছেন। দেশের মানুষের এখন ভোটের অধিকার নেই, নেই কথা বলার অধিকার। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে মানুষের সত্য বলার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা ও হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে গোটা দেশটাকে বধ্যভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন বেড়ে যাওয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মা-বোনেরা। বিচার বিভাগের কোনো স্বাধীনতা নেই। দেশের আইন, আদালত ও প্রশাসন সব চলছে এক ব্যক্তির ইচ্ছায়। দেশের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, স্বাধীন দেশের নাগরিকরা নিজ দেশেই এখন যেন পরাধীন। শুধু পরাধীনই নয়, আরো উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, এখন ধীরে ধীরে দেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতাও হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হয়েছে। ঠিক এমনই একটা সময়ে তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন পালিত হচ্ছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। দেশনায়ক তারেক রহমানের জন্মদিন পালন করছে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ড্যাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। দিবসটি উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের কর্মসূচি ঘোষণা করছে দলটি। তার জন্মস্থান বগুড়া বিএনপির উদ্যোগেও ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁর পিতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও মাতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে এরই মধ্যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়ে পড়ছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজানো মামলায় কারাগারে বন্দি করার পর তিনি শক্ত হাতে হাল ধরেন বিএনপি তথা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের। সুদূর লন্ডনে থেকে অত্যন্ত সুচারুভাবে সংগঠন পরিচালনা করে চলছেন বিরামহীনভাবে। সেই ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে। প্রতিদিন প্রায় ১৮ ঘন্টা অবিরাম পরিশ্রম করে চলছেন। তিনি যত দূরেই থাকুন না কেন নেতাকর্মীদের যে কোনো বিপদে আপদে পাশে দাঁড়িয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এরই মধ্যে তাঁর নেতৃত্বে সারাদেশের তৃণমূল আবারও ঐক্যবদ্ধ ও উজ্জীবিত। বিএনপি ও বিএনপির প্রতিটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী। তাঁরই ডাকে সাড়া দিয়ে সারাদেশে বিএনপির গণসমাবেশে মানুষের ঢল নামছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলনের সেøাগান ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ এখন মানুষের মুখে মুখে।
দেশনায়ক তারেক রহমান এমনই একজন নেতা, যাঁর রয়েছে বহুমুখি প্রতিভা। বিএনপিসহ সাধারণ জনগণের কাছে তিনি একজন জনপ্রিয় নেতা। জনগণকে আপন করে কাছে টেনে নেয়ার জাদুকরী ক্যারিশমেটিক নেতৃত্ব, সম্মোহনী ব্যবহার আর এসব গুণাবলীই তাঁকে বিস্ময়কর জনপ্রিয়তার অধিকারী করে তোলে। তারেক রহমান দেশ, মা, মাটি ও মানুষের সন্তান। তাইতো মা, মাটি ও মানুষকে কেন্দ্র করেই তাঁর সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয় শুরু থেকে। পিতার পথ ধরেই শহরকেন্দ্রিক রাজনীতিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেন হাটে-মাঠে-ঘাটে। তৃণমূল রাজনীতির প্রাণপুরুষ হয়ে ওঠেন তারেক রহমান। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষের হাতে হাত রেখে, তাদের সুখ-দুঃখের অংশীদার হয়ে ঠাঁই করে নেন তাদের মনের মণিকোঠায়। তিনি দেশের উৎপাদন-উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির স্বাপ্নিক। তৃণমূলে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করার জন্য তাঁর হাঁস-মুরগী-ছাগল বিতরণ ও প্রতিবন্ধী মানুষদের কম্পিউটার বিতরণ, জটিল রোগে আক্রান্ত অসহায় মানুষের চিকিৎসার উদ্যোগ ছিল যুগান্তকারী-যা আজও দেশবাসী ভুলে যায়নি। সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষকে আর্থিকভাবে সচ্ছল করতে পারলে তারা শিক্ষার প্রতি আগ্রহ ও জাতীয় উন্নয়নে অংশীদার হতে পারবে-এই বিশ্বাসেই তিনি উক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে দেশের সকল জনপদে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তারেক রহমান আতঙ্কে ভুগতে থাকে বিপরীত রাজনৈতিক শিবির। আওয়ামী লীগ ও দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীদের আক্রোশের শিকার হয়ে তিনি ১/১১-তে গ্রেফতার হয়ে নির্মম নির্যাতনের শিকার হন। সে সময় তিনি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান। সেই ভয়াবহ নির্যাতনের ক্ষত আজও তাঁকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এখনও তিনি সুদূর লন্ডনে চিকিৎসাধীন আছেন।
দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন ও স্বনির্ভরতা অর্জন করতে গিয়ে দেশি-বিদেশি অপশক্তির ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে দেশপ্রেমিক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শাহাদতবরণ করায় মাত্র ১৫ বছর বয়সেই পিতৃহারা হন তারেক রহমান। দেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল থেকে তিনি মাধ্যমিক ও ঢাকার বিএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলবিতে, পরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষে ভর্তি হন এবং স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন মেধাবী ছাত্র তারেক রহমান। শিক্ষাজীবন শেষে ব্যবসাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি। বস্ত্রশিল্পে বিনিয়োগ করে স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্যবসায় সফলতা লাভ করেন। পরে তিনি নৌ-যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ করে সফলতা অর্জন করেন। তারেক রহমান ১৯৯৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান, সাবেক যোগাযোগ ও কৃষিমন্ত্রী রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের বড় মেয়ে ডা. জুবাইদা রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একমাত্র কন্যা ব্যারিস্টার জায়মা রহমান কৃতিত্বের সাথে বার-অ্যাট ল’ অর্জন করেন।
নন্দিত জননেতা তারেক রহমান কিশোর বয়সে ১৯৮১ সালে পিতাকে হারালেও পড়াশুনার পাশাপাশি স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তাঁর মায়ের সহচর হিসেবে অংশ নেন। পিতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের গড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া কমিটির সদস্য হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয়। মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৮৮ সালে তারেক রহমান বগুড়া জেলার গাবতলী থানা বিএনপির সদস্য হন। আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনে যোগ দেয়ার আগেই তারেক রহমান রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির রাজনীতিতে প্রায় নেপথ্যে থেকে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তারেক রহমান। তারই রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, অনবদ্য পরিকল্পনা ও প্রজ্ঞার কারণে বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট বিপুল ভোটে বিজয়ী হয় ২০০১ সালের নির্বাচনে। দীর্ঘদিন দলের রাজনীততে গুরুত্বপূর্ণ কাজে নেপথ্যচারীর ভূমিকা পালন করলেও অবশেষে ২০০২ সালে তিনি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পান। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে তারেক রহমান সংগঠনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ৬ষ্ঠ কাউন্সিলেও তারেক রহমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলায় কারাগারে প্রেরণ করার পর থেকে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
রাজনীতিতে এসেই তারেক রহমান বুঝতে পারেন দেশের উন্নয়ন চাইলে গ্রাম-গঞ্জের উন্নয়ন করতে হবে। তাই তিনি পিতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরণ করে গ্রাম-গঞ্জের পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তিনি গ্রামাঞ্চলের কৃষক-মজুর-খেটে খাওয়া গরীব-দুঃখী মানুষের কাছে গিয়ে তাদের সুখ-দুঃখ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তারেক রহমান বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের মধ্যে গভীর সেতুবন্ধন নির্মাণ করতে তৃণমূল ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। এসব সম্মেলনে কর্মীরা দলীয় রাজনীতি ও সংগঠন সম্পর্কে মন খুলে কথা বলেছেন। এ সভাগুলোতে তারেক রহমান মূলত দলের গঠনতন্ত্র, উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে নেতাকর্মীদের সাথে দীর্ঘ মতবিনিময় করেন। বিস্তারিত মতবিনিময়ের বিষয়বস্তুর মাঝে আরও ছিল প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়নে দলের করণীয় ও দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন-অগ্রগতি নিশ্চিতকরণে সরকারি দল হিসেবে বিএনপির করণীয় প্রসঙ্গে আলোচনা। তৃণমূল পর্যায়ের এই সভা ও জনসংযোগ কার্যক্রমের ফলে দলের নেতাকর্মীদের তরুণ অংশটির মনোবল অসাধারণভাবে বৃদ্ধি পায়। তিনি ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলনের মাধ্যমে যেভাবে তৃণমূলে দলের শেকড় প্রোথিত করেন তাতে অশুভ রাজনৈতিক শক্তির পায়ের তলা থেকে মাটি সরতে থাকে। তারেক রহমান সরাসরি রাজনীতিতে অংশগ্রহণের পরই তাঁর জনপ্রিয়তায় ও জাতীয়তাবাদী শক্তির জাগরণে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা ভীত হয়ে চক্রান্ত শুরু করে। বিএনপি ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের দলা পাকানো হয় এবং এই চেষ্টা আজও অব্যাহত আছে। যড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অবৈধভাবে সেনা হস্তক্ষেপের পর তারেক রহমানের ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। ২০০৭ সালের ৭ মার্চ গভীর রাতে যৌথবাহিনীর সদস্যরা কোনো ওয়ারেন্ট, মামলা এমনকি কোনো অভিযোগ ছাড়াই ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ মইনুল রোডের বাসভবন থেকে তারেক রহমানকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর থেকে দিনের পর দিন রিমান্ডে নিয়ে তাঁকে নির্যাতন করে শারীরিকভাবে প্রায় পঙ্গু করে দেয়া হয়। গ্রেফতারের ১৬ ঘন্টা পর গুলশান থানায় এক কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে জনৈক ব্যবসায়ীকে দিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক প্রথম মামলা করা হয়। ওই ব্যবসায়ী পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয় এবং কিভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে দিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করতে বাধ্য করা হয় তা জনসমক্ষে প্রকাশ করে। এভাবে পর্যায়ক্রমে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মোট ১২টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। সারা পৃথিবী তন্ন তন্ন করে খুজেঁও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সে সময় কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। পরবর্তীতে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরও একটি মামলায় তিনি খালাস পান। কিন্তু তাঁকে খালাস দেয়া বিচারপতিকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। বর্তমান সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় একের পর এক মিথ্যা মামলা দেয়া অব্যাহত রেখেছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাণী : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিনে তাঁর প্রতি জানাচ্ছি আমার প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। দেশের জনগোষ্ঠীর তৃণমূলে দীর্ঘদিনের অচলায়তন কাটিয়ে প্রাণসঞ্চার করেছিলেন তারেক রহমান। তিনি দেশের উৎপাদন-উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির স্বাপ্নিক। তৃণমূলে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করার জন্য তাঁর হাঁস-মুরগী-ছাগল বিতরণ ও প্রতিবন্ধী মানুষদের কম্পিউটার বিতরণ, জটিল রোগে আক্রান্ত অসহায় মানুষের চিকিৎসার উদ্যোগ ছিল যুগান্তকারী-যা আজও দেশবাসী ভুলে যায়নি। সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষকে আর্থিকভাবে সচ্ছল করতে পারলে তারা শিক্ষার প্রতি আগ্রহ ও জাতীয় উন্নয়নে অংশীদার হতে পারবে-এই বিশ্বাসেই তিনি উক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে দেশের সকল জনপদে ঘুরে বেড়িয়েছেন। সেদিনের তারুণ্যদীপ্ত নেতার অভ্যুদয় দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীরা কখনোই মেনে নিতে পারেনি। তাই ১/১১-তে মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকার তারেক রহমানকে নিঃশেষ করার জন্য শারীরিক নির্যাতন, মিথ্যা মামলা ও ক্রমাগত কুৎসা রটনার ধারা বর্ষণ চালিয়ে এসেছে। কিন্তু তারপরও তাঁকে নীরব ও বিচলিত করা যায়নি, দুর্বল করা যায়নি তাঁর অটুট মনোবলকে। যাদের আন্দোলনের ফসল ছিল ১/১১ সরকার, তারা ক্ষমতায় এসেই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে তাদের পূর্বসূরীদের মতোই নানামুখী চক্রান্তে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়। তাঁর নামে অসংখ্য মামলা দায়ের করে একের পর এক সাজা দিয়ে যাচ্ছে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে। তবুও তারা তারেক রহমানকে দুর্বল করতে পারেনি। এখনও দুঃশাসনের হুমকি প্রতিদিনই তাঁর ওপর বর্ষিত হচ্ছে, তারেক রহমানকে চক্রান্তজালে আটকাতে চলছে নিরন্তর বহুমুখী ষড়যন্ত্র। বিএনপিকে ধ্বংস ও নেতৃত্বহীন করতে চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ১/১১’র সরকারের মামলায় ফরমায়েসী রায় দিয়ে বর্তমান সরকার তাঁকে অন্যায়ভাবে আটক রেখেছে, কিন্তু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সরকারের সকল ষড়যন্ত্র-কূটকৌশল মোকাবিলা করে বিএনপি এক ও ঐক্যবদ্ধ আছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলে নতুন প্রাণ সঞ্চার হয়েছে। এই দুঃসময়ে বহু দূর থেকে দলকে ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত করছেন অত্যন্ত মনোযোগ, ধীশক্তি ও দক্ষতা সহকারে। সংগঠন ও রাজনীতির পাশাপাশি প্রাকৃতিক যে কোনো দুর্যোগে তাঁর নির্দেশনায় দল সর্বশক্তি দিয়ে উপদ্রুত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। মানবকল্যাণের প্রতি তাঁর দায়িত্ববোধ আমাদের অনুপ্রাণিত করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতন, নিপীড়ন, দুঃশাসনে দেশ আজ ধ্বংসের সর্বশেষ প্রান্তে উপনীত হয়েছে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা আজ হুমকির মুখে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলে আবারও নব্য বাকশালী শাসনের নিষ্পেষণে সারাজাতিকে বন্দি করা হয়েছে। মিথ্যা মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-হয়রানি ও গুম করা হচ্ছে। এই দুঃসময়ে তারেক রহমানের নিঃশংক মনোবল ও দৃঢ় নেতৃত্ব দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে উজ্জীবিত করছে। আমি তাঁর আশু সুস্থতা, সাফল্য, সুখী ও দীর্ঘজীবন কামনা করছি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে কর্মসূচি : আজ রবিবার সকাল ১১টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় বিএনপির উদ্যোগে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অনুষ্ঠানে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে যথাসময়ে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
দৈনিক দিনকাল কার্যালয়ে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে আজ রবিবার দৈনিক দিনকাল কার্যালয়ে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন : জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ দুপুর ২টায় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ড্যাবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক দেশনায়ক তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে ড্যাব আজ রবিবার বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এক ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ড্যাবের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডাঃ ফরহাদ হালিম ডোনার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ড্যাবের সম্মানিত সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ হারুন আল রশিদ ও ক্যাম্পের সার্বিক তত্ত্বাবধান করবেন ড্যাবের সম্মানিত মহাসচিব ডাঃ মোঃ আব্দুস সালাম।