সমাবেশস্থলে জুমার নামাজ আদায় করলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৩২ পিএম, ৪ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:০২ এএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
বরিশালে বিএনপির গণসমাবেশস্থলে জুমার নামাজ আদায় করেছেন নেতা-কর্মীরা।
আজ শুক্রবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের মাঠে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
নামাজ শেষে মোনাজাতে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য দোয়া করেছেন তারা। একটি জামাতে ইমামতি করেন কলাপাড়া থেকে আসা বিএনপি কর্মী ইকরামুল আহসান।
বরিশাল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান নান্টু বলেন, আমাদের ওপর যে নির্যাতন চালানো হচ্ছে তার একটি প্রত্যুত্তর হচ্ছে সকল পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ার পরও নেতা-কর্মীদের ঢল নেমেছে। নেতা-কর্মীরা রাতে মাঠে ঘুমিয়েছেন। দুপুরে আমরা একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করেছি। সেখানে স্বৈরাচার শাসন থেকে মুক্তি পেতে এবং আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা করা হয়েছে।
এদিকে মাঠের বিভিন্ন অংশে দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে জেলা ও উপজেলার নেতা-কর্মীদের। কিছুক্ষণ পরপরই মাঠের বিভিন্ন দিক থেকে মিছিল আসছে।
গণসমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির মিডিয়া বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ বলেন, নেতা-কর্মীদের কিছু অংশ বরিশালে পৌঁছেছে। সকল বাধা উপেক্ষা করে কালকে গণজোয়ার দেখবে দেশবাসী। অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে মানুষ ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে আসছে। সরকার পতন ছাড়া আমরা ঘরে ফিরব না।
আজ সকাল থেকেই বরিশালে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি তিন চাকার যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। দুপুরে সমাবেশস্থল ঘুরে দেখা যায়, এখানে মূলত বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা জেলার নেতা-কর্মীরা আগেভাগে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁদের অনেকে জানালেন, সকাল থেকে এসব জেলা থেকে আরও অনেক নেতা-কর্মী নৌপথে ট্রলার এবং পণ্যবাহী নৌযান নিয়ে সমাবেশস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। একই সঙ্গে পিরোজপুর জেলার নেতা-কর্মীরা শতাধিক ট্রলারে সমাবেশে যোগ দিতে আজ সকালে রওনা দিয়েছেন।
গণসমাবেশ সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা আসতে শুরু করেন। আজও তা অব্যাহত আছে।
ওয়াহিদুল ইসলাম নামে আরেক বিএনপি কর্মী বলেন, ‘এই সরকার আমাদের আটকে রাখতে চেয়েছিল। আমরা দুই দিন আগেই মাঠে এসেছি। নামাজও আদায় করলাম। আমরা মাঠেই রাত কাটিয়েছি, আবার মাঠেই খেয়েছি। সমাবেশ শেষ করেই বাড়ি ফিরব।’
গণসমাবেশ সামনে রেখে গতকাল দুপুর থেকেই বরিশালের বেলস পার্ক মাঠে বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা আসতে শুরু করেন। আজও তা অব্যাহত আছে। আজ সকাল থেকে সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকায় বিকল্প ব্যবস্থায় অথবা নৌপথে মাছ ধরা ট্রলার, খেয়া নৌকা, পণ্যবাহী কার্গোতে করে বরিশালে আসছেন নেতা-কর্মীরা। বরিশাল নগরে সব ধরনের ছোট যান চলাচল বন্ধ থাকায় ট্রলার থেকে নেমে দল বেঁধে হেঁটে সমাবেশস্থলে আসছেন তাঁরা।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের পরিবহন বন্ধ করে আটকে রাখা যাবে না। সমাবেশস্থলেই এত নেতা-কর্মী, তাহলে ভাবুন বরিশাল নগরীতে কত নেতা-কর্মী অবস্থান করছেন। সমাবেশে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে।’
বাস, লঞ্চ, তিন চাকার যানবাহন বন্ধ হওয়ার পর এখন ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাসও বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে সারা দেশের সঙ্গে পুরো বরিশাল বিভাগের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন কেবল আকাশপথে উড়োজাহাজ চলাচল অব্যাহত রয়েছে।
ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার মালিকদের সংগঠন জেলা ট্যাক্সি ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি আবদুল জলিল বলেন, সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তার স্বার্থে শুক্র ও শনিবার দুদিন ভাড়ায়চালিত মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।