তরিকুল ইসলাম ও সাদেক হোসেন খোকার মৃত্যুবার্ষিকী আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:২৩ পিএম, ৪ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৪৮ এএম, ১৪ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদ তরিকুল ইসলামের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার ৩য় মৃত্যুবার্ষিকীতে বাণী দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বাণীতে বলা হয়, দেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদ তরিকুল ইসলাম ছাত্রজীবনে প্রগতিশীল ছাত্র-রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে মেহনতি মানুষের পক্ষের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন একজন অবিসংবাদিত নেতা। ’৭১-এ দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য তিনি লড়াই করেছেন অমিত বিক্রমে। মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ জিয়াউর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে বিএনপিতে সম্পৃক্ত হয়ে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উন্মেষ ঘটিয়েছিলেন। সেই থেকে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধিতে এবং আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি ছিলেন সামনের কাতারে। রাজরোষে পড়া সত্ত্বেও তিনি নীতি ও আদর্শ থেকে কখনোই বিচ্যুত হননি। দেশ ও দলের স্বার্থে নিষ্ঠাসহকারে দায়িত্ব পালনে তিনি ছিলেন অগ্রপথিক। নিজস্ব মতাদর্শে তিনি ছিলেন নির্ভীক ও প্রত্যয়দৃঢ়।
স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের আমলে আদর্শনিষ্ঠ এই নেতার ওপর চালানো হয় চরম অমানবিক নিষ্ঠুরতা, পৈশাচিক শারীরিক নির্যাতন সত্ত্বেও এরশাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে তাকে বিন্দুমাত্র টলানো যায়নি। বারবার কারাবরণসহ নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করেও নিষ্ঠা ও সাহসিকতার সাথে অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে তার নির্ভীক নেতৃত্ব সহকর্মীদের প্রেরণা যুগিয়েছে। মন্ত্রী হিসেবে দেশের উন্নয়ন ও জনকল্যাণমূলক কাজে তিনি নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি কখনোই বিসর্জন দেননি। যখনই গণতন্ত্র বিপদাপন্ন হয়েছে তখনই স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশকে গণতন্ত্রের পথে উত্তরণে মরহুম তরিকুল ইসলাম ঘনিষ্ঠ সহকর্মী হিসেবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। দেশবাসী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি চিরদিন তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। তার মৃত্যু জাতীয়তাবাদী শক্তির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি এবং অত্যন্ত মর্মস্পর্শী। মরহুম তরিকুল ইসলামের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা, দেশের অগ্রগণ্য রাজনীতিবিদ, সাবেক মন্ত্রী মোঃ তরিকুল ইসলামের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অপর এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মরহুম তরিকুল ইসলাম ছিলেন গণমানুষের রাজনীতির সাথে আজীবন যুক্ত। পরবর্তীতে মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর অনুসারী হিসেবে ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে জাতীয় রাজনীতি পর্যন্ত তিনি সবসময় ছিলেন জনগণের পক্ষে। দেশ ও দশের প্রতি সহমর্মী এই মানুষটি সবসময় নিজ আদর্শে ছিলেন অবিচল।
জাতীয়তাবাদী রাজনীতির কল্যাণে গণমানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়ে সামাজিক ন্যায়বিচার ভিত্তিক শোষণমুক্ত সমাজ এবং গণতান্ত্রিক, মানবিক ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই ছিল মরহুম তরিকুল ইসলামের রাজনীতির মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন আজীবন। আজীবন সংগ্রামী এই নেতা নিষ্ঠুর নির্যাতন সহ্য করেও কঠিন সিদ্ধান্তে অটুট থাকতেন। তার রাজনীতি দলীয় নেতাকর্মীদেরকে সবসময় অনুপ্রেরণা যোগাবে। মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অধিকার আদায়ের সংগ্রামে মরহুম তরিকুল ইসলামের অবদান অবিস্মরণীয়।
মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশমাতৃকার মুক্তিতে তার সাহসী ভূমিকার জন্য জাতি তাকে চিরদিন কৃতজ্ঞতাচিত্তে স্মরণ করবে। তার কর্মময় জীবনের সাফল্যের মূলে ছিল আদর্শনিষ্ঠা, উদ্যম ও উদ্যোগ। জনঘনিষ্ঠ ও কর্মীবান্ধব রাজনীতিবিদ হওয়ার কারণেই তিনি জনগণ ও দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিকট ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব।
মরহুম তরিকুল ইসলামের রাজনীতির মধ্যে নিহিত ছিল সমাজ উন্নয়নের মূল শক্তি। বিভিন্ন পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সমাজকল্যাণমূলক কাজকেই তিনি অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তরিকুল ইসলামের মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গভীর শূন্যতা। আমরা একজন সত্যিকারের অভিভাবককে হারিয়েছি। স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের জাতীয়তাবাদী দর্শনকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশকে গণতন্ত্রে উত্তরণের সাহসী সংগ্রামে মরহুম তরিকুল ইসলামের অবদান দল ও দেশবাসী চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। মরহুমের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।
আজ বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত পৃথক বাণীতে বলা হয়, মরহুম সাদেক হোসেন খোকা একজন জনঘনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ ছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ’৭১-এর রণাঙ্গনে দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য তার বীরোচিত ভূমিকা কিংবদন্তিতুল্য। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের নীতি ও আদর্শে গভীরভাবে আস্থাশীল এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শনে বিশ্বাসী মরহুম সাদেক হোসেন খোকা বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও জনগণের নিকট ছিলেন অত্যন্ত সমাদৃত। দীর্ঘদিন অবিভক্ত ঢাকার নির্বাচিত মেয়র হিসেবে রাজধানী ঢাকার উন্নয়নে তিনি যে অবদান রেখেছেন সেজন্য ঢাকাবাসী তাকে চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
তিনি ছিলেন অত্যন্ত উদার, সজ্জন ও বিনয়ী স্বভাবের একজন মানুষ। একজন গণতন্ত্রমনা নেতা হিসেবে ভিন্ন মতাবলম্বী রাজনীতিকদের মতামত শুনতে ও মতবিনিময়ে তিনি কখনোই কুন্ঠাবোধ করতেন না। গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নেয়ার কারণে রাজরোষে পড়া সত্ত্বেও তিনি স্বৈরশাসক ও ফ্যাসিবাদী শাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করেননি। বিএনপিকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে সাদেক হোসেন খোকার বলিষ্ঠ ভূমিকা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।
রাজনীতির পাশাপাশি তিনি জনসেবামূলক বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন দেশের একজন অগ্রগণ্য ক্রীড়া সংগঠক। ক্রীড়ার মানোন্নয়নে তিনি থেকেছেন সবসময় নিবেদিতপ্রাণ। দেশের বর্তমান দুঃশাসন মোকাবিলায় মরহুম সাদেক হোসেন খোকার মতো আদর্শনিষ্ঠ ও সাহসী নেতার খুবই প্রয়োজন ছিল। তার রেখে যাওয়া অমলিন স্মৃতি সবসময় নেতাকর্মীদের উৎসাহ ও প্রেরণা যোগাবে। আমি মরহুম সাদেক হোসেন খোকার ৩য় মৃত্যুবার্ষিকীতে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি, অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক সফল মেয়র, সাবেক মন্ত্রী ও বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক সাদেক হোসেন খোকার ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের বর্তমান ক্রান্তিকালে এক বছর আগে জাতি একজন যোগ্য নেতাকে হারিয়েছে। মরহুম সাদেক হোসেন খোকা ছিলেন ’৭১-এর রণাঙ্গনের বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা, দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য তার অবদান জাতি শ্রদ্ধাবনতচিত্তে স্মরণ করবে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ঢাকায় তার নেতৃত্বে পাকবাহিনীর বিভিন্ন আস্তানায় গেরিলা আক্রমণ পাকিস্তানীদের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল, মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল দৃঢ় হয়েছিল।
বিশ্ব মিডিয়ায় এসব গেরিলা আক্রমণের সংবাদে বাংলাদেশের মানুষের মরণপণ যুদ্ধের কথা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের মানুষ ভয়াবহ দুঃশাসনের কবলে নিপতিত, এই অবস্থায় নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েও স্থির লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার নির্ভীক নেতা ছিলেন মরহুম সাদেক হোসেন খোকা।
বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শনে বিশ্বাসী, সৎ, যোগ্য, অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ এবং কর্তব্যনিষ্ঠ ও নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদ মরহুম সাদেক হোসেন খোকা তার রাজনৈতিক জীবনে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালনের জন্য দেশবাসীর নিকট অমলিন হয়ে থাকবেন। মরহুম সাদেক হোসেন খোকা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক, একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে তিনি ঢাকা মহানগর বিএনপিকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে তার সাহসিকতা নেতাকর্মীদের নিকট চিরকাল অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। জনসেবার মহান ব্রত নিয়ে রাজনীতি করতেন বলেই তিনি ঢাকাবাসীর নিকট ছিলেন একজন জনপ্রিয় নেতা। ফ্যাসিবাদী শাসকদের ভয়াবহ দুঃশাসন মোকাবিলায় সাদেক হোসেন খোকার মতো পূর্ণাঙ্গ ও ত্যাগী রাজনীতিবিদের পৃথিবী থেকে চিরপ্রস্থান রাজনৈতিক অঙ্গনের জন্য এক বিরাট শূন্যতা। আমি মরহুম সাদেক হোসেন খোকার ৩য় মৃত্যুবার্ষিকীতে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।