গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই সরকারকে বিদায় করা হবে : ড. মোশাররফ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৩ পিএম, ২ নভেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৩৯ এএম, ২৯ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২৪
আগামী দিনে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই সরকারকে বিদায় করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, এই সরকার দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে; এদের দ্বারা মানবাধিকার রক্ষা হবে না। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে; অর্থনীতি তাদের দ্বারা মেরামত করা সম্ভব হবে না। আমাদের টার্গেট একটাই; সেটা হচ্ছে রাজপথের ফয়সালায় গণঅভ্যুত্থানে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
আজ বুধবার (০২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, তারেক রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগ ও সরকারের ভয়ের একমাত্র কারণ তিনি দেশের রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সেই ভয় থেকেই সরকারের নির্দেশে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি। স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ায় জিয়াউর রহমান, সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় করায় খালেদা জিয়া ও বিএনপিকেও ভয় পায় আওয়ামী লীগ সরকার।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে এজন্য আজকে বাংলাদেশের লোডশেডিং। আজকে যিনি প্রধানমন্ত্রী তিনি বলেছিলেন এই লোডশেডিংকে মিউজিয়ামে পাঠিয়েছেন, জাদুঘরে পাঠিয়েছেন। জনগণের প্রশ্ন জাদুঘর থেকে কিভাবে এই লোডশেডিং সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লো। আজকে মানুষের জীবন দুর্বিষহ এই লোডশেডিংয়ের কারণে। কেন লোডশেডিং আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাট এবং অর্থ পাচারের কারণে আজকে ডলার নেই। তাই দেশে অর্থনীতি ধ্বংসপ্রান্তে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। আজকে গরিব মানুষ খেতে পারছে না। মধ্যবিত্ত মানুষ দুর্বল হয়ে গিয়েছে। যারা ভোট চুরি করেছে তারা এই অর্থনীতিকে কোনদিন উদ্ধার করতে পারবে না। যে সরকার দেশের মানবাধিকার লংঘন করেছে তাদের দ্বারা মানবাধিকার রক্ষা হবে না। যারা লুটপাট করেছে তাদের দ্বারা এদেশের অর্থনীতি মেরামত করা সম্ভব নয়।
মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে একটাই দাবি এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। সে নির্বাচনে জনগণ নিজের হাতে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। তাহলে এ দেশের জনগণের রায়ে পরবর্তী সরকার হবে বেগম খালেদা জিয়ার সরকার, তারেক রহমানের সরকার।
বিএনপির এই নীতি নির্ধারক বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন রাজপথে ফয়সালা হবে। অতএব রাজপথে ফয়সালা করে এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে হবে। তাই আমাদের একটাই দাবি অনতিবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে এবং জনগণের সরকার নির্বাচিত হয়ে এদেশের সমস্যার সমাধান করবে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না, তাই খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।
সরকার জিয়াউর রহমানের পরিবার, বিএনপির পরিবার এবং বিএনপিকে ভয় পায়, বলেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, এই সরকার গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠিত। এই সরকার জনগণের সরকার নয়। যারা ভোট ডাকাতি করে সরকারে এসেছে, যারা ভোট ছাড়া পার্লামেন্টে গায়ের জোরে ক্ষমতায় রয়েছে তারা গণতন্ত্রের সম্মান দিতে পারে না, তারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল তখন গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। আবার এই সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতা থাকার জন্য গণতন্ত্রকে সর্বস্তরে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষের ভোটের আজ অধিকার নেই। আজকে যখন সারা বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলনরত, আজকে তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় তখন স্বাভাবিকভাবে এই গায়ের জোরের সরকার ভীত। আপনারা দেখেছেন সমাবেশগুলোর দুই-তিন দিন পূর্বেই সরকার অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট সৃষ্টি করে মানুষকে কষ্ট দেয়। আমাদের সমাবেশকে দুর্বল করার জন্য।
বিভাগীয় সমাবেশগুলোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যতগুলো বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে সকলে দেখেছে তা সর্বকালের বৃহৎ সভা হয়েছে। ভবিষ্যতে ইনশাল্লাহ যত বাধা-বিপত্তি সৃষ্টি করুক তা উপেক্ষা করে সকল সমাবেশ সফল হবে। এই সরকার শুধু আমাদের কাছেই নয় তারা আন্তর্জাতিকভাবেও ধিকৃত। তারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে। এই সরকারের আমলে দেশে মানবাধিকার নেই।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, সরকারকে বলতে চাই, দেশের মানুষের মুখ মামলা দিয়ে বন্ধ রাখতে পারবেন না। এই সরকার পাগল হয়ে গেছে। এই পাগল সরকারকে দেশের মানুষ মানে না।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর যৌথ সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসীম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, সহ-সভাপতি ইয়াসিন আলী, জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, মহানগর দক্ষিণের ইশরাক হোসেন প্রমুখ।