দেশে চলমান অর্থনৈতিক দুরবস্থায় সামনে মহাবিপদ : রব
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১২ পিএম, ২ নভেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৫০ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
দেশে চলমান অর্থনৈতিক দুরবস্থায় ‘সামনে মহাবিপদ’ দেখছেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
আজ বুধবার (০২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভায় তিনি এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বৈরাচারের পতন ও রাষ্ট্র রূপান্তরে গণজাগরণ গড়ে তুলুন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
আ স ম আবদুর রব বলেন, আমি বলে দিচ্ছি, সামনে মহাবিপদ। এই স্বৈরাচারি সরকার ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে গিয়ে জাতীয় অর্থনীতিকে ধবংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থাকে নৈরাজ্যকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। তিন মাস পরে টাকা দিয়েও খাওয়া পাবেন না, চাল পাবেন না, গম পাবেন না, আটা পাবেন না এমনকি বাচ্চা শিশুর দুধ কিনতেও পারবেন না। সুতরাং এই অবৈধ সরকারকে উচ্ছেদ করা ছাড়া দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বিপর্যয় এড়ানো এবং অপশাসন থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সমাবেশগুলোতে ব্যাপক লোকসমাগমের প্রতি ইঙ্গিত করে রব বলেন, রাষ্ট্র পরিবর্তনের লড়াইয়ে রাজপথে নতুন গণশক্তির উত্থান ঘটেছে। রাজপথে যুবকদের, এই তরুণদের উত্থান ঘটেছে। আজকে বিভাগে বিভাগে যে মানুষ চাটাই নিয়ে, খড় নিয়ে, চিড়া-গুড় নিয়ে, পায়ে হেঁটে যাচ্ছে। বাস বন্ধ করে দিচ্ছে, ট্রেন বন্ধ করে দিচ্ছে এটার লক্ষণ হলো মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ এদেশ থেকে পাকিস্তানিদের অত্যাচারে যখন পালিয়ে যাচ্ছিল আজকে একই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের শ্রমজীবী-কর্মজীবী-পেশাজীবী-ছাত্র-যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করার মধ্য দিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতন নিন্ডিত করতে হবে, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী সরকারের বিদায় ঘটাতে হবে এবং দ্রুত রাষ্ট্র রূপান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এছাড়া কোনো বিকল্প নাই। সরকারের উদ্দেশ্যে রব বলেন, আমি বলে দিচ্ছি, এরা যদি ভদ্রভাবে না সরে যায় পরে তারা পালাতেও পারবে না। যাদেরকে তোমরা (ক্ষমতাসীনরা) খুন করেছো, গুম করেছো তারা তোমাদের পালাতে দেবে না। তোমরা যা করছো, তোমাদের জাতি ক্ষমা করতে পারবে না। ক্ষমা করার কোনো অধিকার আমাদের নেই।
সাংবিধানিক কমিশন গঠন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচার বিভাগ ঢেলে সাজানো, গণমুখী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়া, পেশাজীবীদের ভূমিকা নিন্ডিতকরণ, অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন, খাদ্য সহায়ক তহবিল, চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদন, দল নিরপেক্ষ পুলিশ ব্যবস্থা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষের অংশীদারিত্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ১০ দফা দাবিনামা তুলে ধরে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা রব বলেন, এসব কার্যকর করতে হলে আরেকটা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে। প্রস্তুত হোন। আমাদের বয়স শেষে, এই যুবক-তরুণ সমাজকে এই কাজ করতে হবে। জীবনবাজি রেখে ক্ষমতার পরিবর্তনে লড়াই করতে হবে, এই লড়াইতে জিততে হবে।
আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সানোয়ার হোসেন তালুকদার, সিরাজ মিয়া, তানিয়া রব ও শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।