বর্তমান সরকার ও ইসির অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না : মির্জা আব্বাস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৯ পিএম, ১ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:০৪ পিএম, ৬ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেছেন, নিশিরাতের সরকারের সহযোগী বর্তমান ইসির অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না। গাইবান্ধা মার্কা নির্বাচন বাংলাদেশে আর হতে দেয়া হবে না। একটি নিরপেক্ষ সরকার ও ইলেকশন কমিশনের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে, এর বাইরে কোনো বিকল্প নেই।
আজ মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের পশ্চিম আকুরটাকুরপাড়া ঈদগাহ মাঠে জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, বর্তমান সরকার একটি লুটেরা সরকার, দুর্ভিক্ষের সরকার, ডাকাত সরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ২০২৩ সালে দুর্ভিক্ষ হবে। দুর্ভিক্ষ মোকাবিলার আগেই দেশের জনগণ এই সরকারের পতন ঘটাবে।
মির্জা আব্বাস বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, গণতন্ত্র দিয়েছেন। দল প্রতিষ্ঠার পর তাকে শাহাদাতবরণ করতে হয়েছে। অনেকেই ভেবেছিলেন তাকে হত্যা করলেই বিএনপি শেষ। পরবর্তীতে নেতৃত্বে আসলেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি দলকে লালন করে নিজের সন্তানের মতো মানুষ করেছেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। আজকে তারেক রহমান দলকে পুরোপুরি পরিচর্যা করে বিএনপিকে একটি পূর্ণাঙ্গ দলে রূপান্তরিত করেছেন। এই দলকে বারবার বিভক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম ও থাকবো। এই সরকার গণতন্ত্র হত্যা করেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই দেশে আবার গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবো।
সম্মেলনের প্রথম পর্বে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকেন। তিনি দু’হাত নেড়ে উপস্থিত সকলকে অভিবাদন জানান। প্রধান অতিথি মির্জা আব্বাসের বক্তব্য শেষ হলে তিনি উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন।
এ সময় তিনি বলেন, আজকে জেলা কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। আজকে দেশের মানুষ কি অবস্থায় আছে সে সম্পর্কে আপনারা ওয়াকিবহাল। আপনারা মানুষের মনোভাব জানেন। ’৭১ সালের যুদ্ধের পূর্বে মানুষ যে অবস্থায় ছিল আজ দেশের মানুষ সে অবস্থায় আছে। সামগ্রিকভাবে সারাদেশের মানুষ আজ শহীদ জিয়ার সৈনিকের দিকে তাকিয়ে আছে। দেশের এই অবস্থা থেকে, এই অরাজক অবস্থা থেকে, এই বিশৃঙ্খলা থেকে, এই নিশিরাতের ভোট ডাকাত থেকে, জনগণের সম্পদ লুটকারীদের থেকে আপনারা তাদেরকে উদ্ধার করবেন। কাজেই আপনাদের সে দায়িত্ব নিতে হবে। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরে বিএনপির পক্ষ থেকে সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছিল। প্রত্যেকটি সমাবেশ মহাসমাবেশে পরিণত হয়েছে। যারা বিএনপি করে না তারাও এসেছিলেন। তারা দেশের এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিএনপিকে দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যা পত্রিকায় এসেছে।
তিনি বলেন, সারাদেশের মানুষ আজ বিএনপির পাশে দাঁড়িয়েছে। মানুষের স্বাধীনতা, ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে বিএনপিকে। শহীদ জিয়া এদেশে গণতন্ত্র দিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, বিএনপিসহ ভিন্নমতের মানুষ আজ নিশিরাতের ভোট ডাকাতদের দ্বারা অত্যাচারিত, নির্যাতিত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে না পারলে দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। এ থেকে উত্তরণে একটিই পথ আর সেটি হচ্ছে ‘বাংলাদেশ যাবে কোন পথে ফয়সালা হবে রাজপথে’।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট আহমেদ আযম খানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, ওবায়দুল হক নাসির প্রমুখ। প্রথম পর্বে সভাপতি পদের তিন প্রার্থী খঃ ছাইদুল হক ছাদু, এডভোকেট আলী ইমাম তপন ও হাসানুজ্জামিল শাহীন এবং সাধারণ সম্পাদক পদের দুই প্রার্থী এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল ও মাহমুদুল হক সানু তাদের পরিচয় উপস্থাপন করে সংক্ষেপে বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ প্রায় ১৩ বছর পর টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। এ রিপোর্ট পাঠানো পর্যন্ত ভোট গণনা চলছে।