আওয়ামী লীগ বিএনপির সাথে জনসমাগমের প্রতিযোগতায় নেমেছে : প্রিন্স
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৯ পিএম, ২৯ অক্টোবর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:১২ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, আওয়ামী লীগ বিএনপির সাথে জনসমাগমের প্রতিযোগতায় নেমেছে। আর বিএনপি ব্যর্থ, অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মরণপণ আন্দোলনে নেমেছে। তাদের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো ভাবেই নির্বাচনে যাবে না এবং হতে দেওয়া হবেও না।
আজ শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের লক্ষিকূড়ায় বন্য হাতির তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে রবি শষ্যের বীজ প্রদান উপলক্ষে অয়োজিত কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এর আগে দুপুরে তিনি একই স্থানে ভূবনকুড়া ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সীমান্তবর্তী ভূবনকুড়া ও সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বন্য হাতির তান্ডবে জমির ধান, শাক, সব্জির বাগানে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়। এর আগেও এমরান সালেহ প্রিন্স ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং হাতি তাড়ানোর অভিযানে অংশ নিয়ে গ্রামবাসীকে টর্চ লাইট, মশালসহ বিভিন্ন সামগ্রী প্রদান করেন। আজ ভূবনকুড়া ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেষা লক্ষিকূড়া, কড়ইতলী, মহিষলেটি, ধুপাজুড়ি, জামগড়া, বানাইচিড়িঙ্গী পাড়া, ভাড়ালিয়াকোনা, আচকিপাড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০ জন কৃষকের মাঝে রবিশস্যের বীজ দেয়া হয়।
এসব অনুষ্ঠানে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনসমর্থন ও নৈতিক ভিত্তীহীন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ খুচড়া চালাকি করে জনগণের কাছে ধরা খেয়েছে। তারা সরকারি প্রটেকশন, পৃষ্ঠপোষকতায় শত শত বাস রিকুইজিশন করে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেও তাদের কর্মসূচিতে জনসমাগম ঘটাতে পারে না। আর রাষ্ট্রীয় ও দলীয় সন্ত্রাস ও পরিবহন বন্ধ করেও বিএনপির চলমান গণসমাবেশে জনস্রোত ঠেকাতে না পেরে তারা বাকসন্ত্রাসী করছে। শান্তিপূর্ণ গণসমাবেশের আগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় সরকারের নৈতিক পরাজয় হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্দোলনে জনগণের ব্যাপক সম্পৃক্ততা ও সমর্থন দেখে তারা বালখিল্যতা করছে।
তিনি বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্র, নির্বাচন, আন্দোলন নিয়ে যেসব কথা বলেছেন, বাস্তবতার সাথে তার কোনো মিল নাই। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে রাজনীতি, গণতন্ত্র, নির্বাচনের পথকে সঙ্কুচিত ও নিয়ন্ত্রণ করতো না, জনগণকে ভয় পেতো না। কারো দয়ায় নয়, বিএনপি জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করছে সরকারের কূটকৌশল, দমন নিপিড়ন মোকাবেলা করে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ওপর জনগণের আস্থা, বিশ্বাস যদি থেকেই থাকে তবে পদত্যাগ করে নির্বাচন দিতে ভয় কেন? বিগত দিনে জনগণ আওয়ামী লীগকে বার বার ভোট দিয়েছে, আবারও দেবে- প্রধানমন্ত্রীর এমন উক্তি সত্যের চরম অপলাপ এবং ২০১৪ ও ১৮র মতো আবারও প্রহসন ও ষড়যন্ত্রের নির্বাচনের পূর্বাভাস।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ২০১৪ ও ১৮র মতো আওয়ামী লীগের অধীনে পাতানো-সাজানো নজিরবিহীন নির্বাচনের স্বপ্ন দেখলে তা হবে দুঃস্বপ্ন। সেই নির্বাচনের স্বপ্ন আর সফল হবে না।
তিনি বলেন, দুর্নীতি, লুটপাট করে দুঃশাসন কায়েম করে জনজীবন দুর্বিসহ করে শোচনীয় পরিণতির ভয়ে সরকার চোখে সর্ষে ফুল দেখছে। সরকারের কারণেই দেশ আজ সর্বগ্রাসী সঙ্কটে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গিলে খেয়েছে বলেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না। মিল কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, উৎপাদন মারাত্মক ভাবে হ্রাস পেয়েছে।
তিনি সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, বৈশ্বিক সঙ্কট কি শুধু বাংলাদেশের জন্য? ৬ মাস আগে সরকার নেপালে এই শীতে বিদ্যুৎ সহযোগিতা দিতে চেয়েছিল, বিদ্যুৎ ঘাটতিতে থাকা নেপাল বৈশ্বিক সঙ্কটের মধ্যে কোন যাদুর বলে বিদ্যুৎ ঘাটতি মিটিয়ে এখন উল্টো বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সাহায্য দেবার প্রস্তাব দেয়? আসলে বৈশ্বিক সঙ্কটের কথা বলে সরকার নিজের ব্যর্থতা আড়াল করছে, জনগণকে হাইকোর্ট দেখাচ্ছে।
তিনি বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে চূড়ান্ত আন্দোলনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান।
ভূবনকূড়া ইউনিয়নের লক্ষিকূড়া কওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানা মাঠে অনুষ্ঠিত রবিশস্যের বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি নাসির উদ্দিন এবং ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ওয়ার্ড বিএনপি নেতা জালাল উদ্দীন সভাপতিত্ব করেন।
উভয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ময়মনসিংহের উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমজাদ আলী, হানিফ মোহাম্মদ শাকের উল্লাহ, উপজেলা বিএনপি নেতা কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান, বিএনপি নেতা আবদুস সাত্তার, আল আমিন চমক, রমজান আলী, হাফিজ উদ্দিন বিএসসি, হোসেন আলী, নবী হোসেনসহ প্রমুখ।