চুরি-চামারিও আছে, জানি না তাদের আর কত টাকা দরকার : কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৮ পিএম, ২২ অক্টোবর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৪১ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
যোগাযোগ খাতের অসাধু ব্যক্তিদের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এই যে কিছু লোক আছে, আমি জানি না তাদের আর কত টাকা দরকার! তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ কেমন আছে, এটা তাদের বিড়ম্বিত করে না। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নেতাদের উদ্দেশে কাদের বলেন, আপনি রাজনীতি করেন মানুষের জন্য। মানুষের অসুবিধা করে আপনি রং সাইডে যাবেন আপনি কী নেতা! কী রাজনীতি করেন!
তিনি বলেন, আইন করেছি ৩ চাকার গাড়ি মহাসড়কে চলবে না কিন্তু কে শোনে কার কথা। আমি এক পথে যাই, খবর পায়, তখন সব ক্লিন। আবার আমি যখন রাস্তা অতিক্রম করি, আবার সেই পুরনো চিত্র। দুর্ঘটনায় এখন মৃত্যুর হার কেন বেশি? ইজিবাইক আর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেশি হয় কারণ এগুলো হালকা গাড়ি। একটি মোটরসাইকেলে মফস্বলে ৩ জন ও ইজিবাইকে ১০ জন পর্যন্ত ওঠে। একটু টোকা লাগলেই উল্টে যায়। ১০ জনই মারা যায় ড্রাইভারসহ। দুর্ঘটনার সংখ্যা আগের চেয়ে কমলেও দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার আগের চেয়ে বাড়ছে। এটা হলো বাস্তবতা অস্বীকার করে লাভ নেই। এত স্থাপনা সারা বাংলাদেশে, এত আন্ডার পাস, ওভার পাস, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, টানেল সবই হচ্ছে, তারপরও শৃঙ্খলা কেন নেই? শৃঙ্খলা না থাকলে সাফল্য মøান হয়ে যাবে। উন্নয়নের অবকাঠামো, এত সাফল্য সব মøান হয়ে যাবে যদি আমরা সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে না পারি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এ বিষয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ছোট ছোট গাড়িগুলো অনেকের জীবিকার সঙ্গে যুক্ত। অনেক গরিব মানুষ এ কাজ করে খায়। এদের নিয়মের মধ্যে আনতে হবে, নীতিমালা করতে হবে-বাস্তবায়ন করতে হবে। রাস্তাগুলো রক্ষা করতে আমরা পারছি না। কী অবস্থা নবীনগর-চন্দ্রার! ইতিমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম খারাপ হতে শুরু করেছে। এত টাকা, এত পয়সা...কাজে না এলে কেন করলাম!
তিনি আরও বলেন, ৩টি ব্রিজ তৈরিতে জাপানি কোম্পানি ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে। দিস অলসো হ্যাপেন্স ইন বাংলাদেশ। চুরি-চামারিও আছে। চুরি-চামারি তো চলতেই থাকে। এই যে কিছু লোক আছে, আমি জানি না তাদের আর কত টাকা দরকার! এ দেশে কিছু লোক আছে, তাদের আর কত অর্থ-কত সম্পদের দরকার? সাধারণ মানুষ কেমন আছে, এটা তাদের বিড়ম্বিত করে না। এরা যদি নেতা হয়, এই নেতার কোনো দরকার নেই বাংলাদেশে। শেখ হাসিনার মতো সৎ নেতা চাই। তার মতো ভালো মানুষ পঁচাত্তর পরবর্তীকালে এ দেশের রাজনীতিতে আর একজনও আসেনি। আমরা যারা তার সঙ্গে রাজনীতি করি, তারা ক’জন তাকে মেনে চলি? ক’জন জনগণের ভাগ্যোন্নয়ন করেন আর ক’জন পকেটের উন্নয়ন করেন? হিসাব দিতে হবে সবাইকে। শেখ হাসিনা একা সৎ থাকবেন, দিন-রাত পরিশ্রম করবেন আর আমরা টাকার পেছনে নিজের ভাগ্য উন্নয়নে, পকেটের উন্নয়নে আমরা ব্যস্ত থাকবো এটা হয় না। জনপ্রতিনিধিদের সমালোচনা করে কাদের বলেন, রাস্তায় ৩ চাকার গাড়ি বন্ধ করেছি। আমি যখন খবর নেই, বলে যে, অমুক জনপ্রতিনিধি গাড়ি চলতে দিয়েছেন। কেন চলবে? ওনার কোনো স্বার্থ আছে। কেন চলবে? সামনে ভোট আছে। জীবন আগে না জীবিকা আগে? জীবন তো বাঁচাতে হবে। জীবন না বাঁচলে জীবিকা দিয়ে কী হবে! আমি বুকে হাত দিয়ে বলবো, ৫ বছর আগে ছিলাম প্রতিমন্ত্রী, এবার ১১ বছর হয়ে গেল। কোনো পারসেন্টেজ, কোনো কমিশন কখনো নেইনি। কিন্তু কারা আমার সঙ্গে কাজ করে রাস্তা করি, এক পশলা বৃষ্টি হলে রাস্তা থাকে না। রাস্তা করে কী লাভ! টাকা কোথায় যায়? সরকারের টাকা জনগণের ট্যাক্সের টাকা, এই টাকা যায় কোথায়? সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে কাদের আরও বলেন, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না। এই মন্ত্রণালয়ের কোথাও দুর্নীতিবাজ থাকতে পারবে না। এদের চিহ্নিত করতে হবে এবং ব্যবস্থা নিতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করুক, কেন তদন্ত করে না! যেখানে দুর্নীতি হয় সেখানে তদন্ত করতেই হবে। আমি সবাইকে বলছি, কাজ করুন। দুর্ঘটনা-যানজট কমান।