বিধি ভেঙে ভোটকেন্দ্রে সংসদ সদস্য শিমুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৯ পিএম, ১৭ অক্টোবর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৫২ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
চলমান জেলা পরিষদ নির্বাচনে আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন করে নাটোর-২ (সদর, নলডাঙা) আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলকে একটি ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেখা গেছে।
আজ সোমবার ভোটগ্রহণ চলাকালে এই সংসদ সদস্য সকাল সোয়া ১১টার দিকে দিঘাপতিয়া এম কে কলেজ কেন্দ্রে ঢোকেন। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানও করেন তিনি। নির্বাচনি বিধিমালায় সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অর্থাৎ- প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সংসদ সদস্য বা তাদের সমমর্যাদার কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে উপজেলা, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন চলাকালীন কোনো ধরনের প্রচারণায় অংশগ্রহণ না করা সংক্রান্ত নির্দেশনা আছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য শিমুল বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি। কোনোকিছু প্রভাবিত করিনি। বিষয়টি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নাটোরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম আহমেদ বলেন, একজন সংসদ সদস্য কোনোভাবেই এটা করতে পারেন না। আমরা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এর আগে সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে সংসদ সদস্য শিমুলের পিএস আকরামুল ইসলামকেও প্রেসকার্ড নিয়ে দিঘাপতিয়া কেন্দ্রে ঢুকতে দেখা যায়। আকরামুল ইসলামকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি নিজেকে স্থানীয় ‘সংবাদ প্রতিকার’ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, কেবল বৈধ সাংবাদিকদেরই প্রেসকার্ড দেয়া হয়েছে। এদিকে ভোটের সকাল থেকেই দিঘাপতিয়া ভোটকেন্দ্রে তালা প্রতীকের সাধারণ সদস্য প্রার্থী আনোয়ার পারভেজ নিজেই পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন করছিলন। ভোট শুরুর ঘণ্টাখানেক পর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ও পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান এসে আনোয়ার পারভেজকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, প্রার্থী নিজে পোলিং এজেন্ট হতে পারবেন না। এ কারণে তাকে বের করে দিয়ে তার মনোনীত এজেন্ট দেয়া হয়েছে। এমন টুকরো টুকরো বিভিন্ন অনিয়মের মধ্য দিয়ে নাটোরে জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মুভমেন্ট পাস ছাড়াই মটরসাইকেল নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। আবার কোথাও কোথাও সংবাদকর্মীদের দেয়া কার্ড নিয়ে দলীয় কর্মীদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেখা গেছে। জেলা পরিষদের নতুন জনপ্রতিনিধি বেছে নিতে আজ সকাল ৯টা থেকে দেশের ৫৭ জেলার ৪৬২টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএমে ভোট চলছে। চলবে দুপুর ২টা পর্যন্ত। গাইবান্ধা উপ-নির্বাচনের মতই সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ঢাকার নির্বাচন ভবনের মনিটরিং সেল থেকে সব জেলার ভোটের পরিস্থিতি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন। দেশের তিন পার্বত্য জেলা বাদে ৬১ জেলায় এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি। পরে হাই কোর্টের আদেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নোয়াখালীর নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। এছাড়া ভোলা ও ফেনীর সকল পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে সোমবার ভোট হচ্ছে ৫৭ জেলা পরিষদে। জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন কেবল সংশ্লিষ্ট জেলার স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। সে হিসেবে এ নির্বাচনে ভোটার কেবল ৬০ হাজার ৮৬৬ জন।