চট্টগ্রাম সমাবেশে যাওয়া নেতাকর্মীদের পথে পথে হামলা করা হচ্ছে : রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২০ পিএম, ১২ অক্টোবর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:২৭ পিএম, ১০ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
বিভিন্ন জেলা থেকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়া নেতাকর্মীদের পথে পথে বাধা ও হামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
আজ বুধবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলের পক্ষে এই অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় মহাসমাবেশে আসার পথে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার তবলছড়ি ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ২৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাদের মধ্যে তবলছড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. ইব্রাহিম, বিএনপি নেতা মো. নুরু মিয়া, আবদুল কুদ্দুছ যুবদল নেতা আবদুল মোমিনের অবস্থা খুবই গুরুতর। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
তিনি আরও বলেন, একইভাবে চট্টগ্রামের গণসমাবেশে আসার পথে গতকাল রাত সাড়ে ১১টায় খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার গাড়িটানা এলাকায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলায় ৯ নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। আহত নেতাকর্মীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরের নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় এবং হোটেলগুলোতে পুলিশ ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে।
সমাবেশে আসার পথে মিরসরাই সীতাকুন্ডের মাঝামাঝি স্থানে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিষ্ঠুর হামলায় কবিরহাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জুসহ অনেক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম মহানগরের চিত্র তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, গতরাতে চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে মহানগর বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক মো. শাহজাহান, যুবদল নেতা শাহীন, আকবরশাহ, থানা ছাত্রদল নেতা রেহান উদ্দীন প্রধান, সাদ্দাম হোসেন ও মো. পারভেজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, কবিরহাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু, ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মনিরুল মোস্তফা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা বাটু, ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি কামাল উদ্দীন, কবিরহাট পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব আফতাব উদ্দীন হৃদয়, পৌর যুবদলের সদস্য অহিদুল্ল্যাহসহ অনেকেই আহত হয় এবং পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবু সাঈদ কায়ছার, নুরুল্লাহ খান বাচ্চু, ছাগলনাইয়া কলেজের সাবেক এজিএস একরাম উদ্দীন সিপু, যুবদল নেতা মামুনুর রশিদ ও রবিউল হককে উপজেলার বারৈয়ারহাটে মেয়র কার্যালয়ে আটকে রেখে স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম পলোগ্রাউন্ডে সমাবেশ করা অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ এখন কাপুরুষের দল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রটেকশনে গুণ্ডা ও সন্ত্রাসীরা বাহাদুরি দেখায়। প্রকৃত সাহসী ও বীরদের কখনোই ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার নজির নেই সারা দুনিয়াতে। যারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশকে ধ্বংস করতে দ্বিধা করে না, তারাই রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও দলীয় গুণ্ডাপাণ্ডাকে বিরোধী দলের কর্মসূচিতে লেলিয়ে দেয়। সংগ্রামী জনতাকে নতি স্বীকার করানোর জন্য জনগণের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দাবির আন্দোলনকে দমাতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুণ্ডাদেরকে লেলিয়ে দেওয়া শেখ হাসিনার সুপরিকল্পিত চক্রান্তের অংশ।
তিনি বলেন, এত অত্যাচার-আক্রমণ-চক্রান্ত-সন্ত্রাস-খুন-বিশ্বাসঘাতকতা ও কুৎসা সত্ত্বেও জনগণের আন্দোলন থেমে থাকবে না। পথে বাধা ও নেতাকর্মীদের ওপর শারীরিক আক্রমণ সত্ত্বেও আজ চট্টগ্রামের পোলো গ্রাউন্ডের মহাসমাবেশে জনতার ঢল নামবে। সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করলেও জনগণকে কাবু করা যায় না। আজকে চট্টগ্রামে সমাবেশের সফলতা সেটিরই আজ প্রমাণ হবে।